সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের আগে জেনে নিন এই ১০টি জরুরি সত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধরুন, মাসের শেষে কিছু টাকা হাতে থাকে। আপনি ভাবলেন, “চলুন নিরাপদ কোথাও বিনিয়োগ করি।” ব্যাংকের সুদ কম, শেয়ারবাজার ঝুঁকিপূর্ণ, তাই চোখ গেল সঞ্চয়পত্রের দিকে।
বলেন কী! সুদের হার ১২ শতাংশ!
কিন্তু একটু থামুন। শুধু সুদের হার দেখেই বিনিয়োগ করলে আপনি ভবিষ্যতে পস্তাতেও পারেন।
সঞ্চয়পত্র শুধু নিরাপদ নয়, এটি সরকার-নিশ্চিত একটি আস্থা। তবে এই আস্থার নিচেও লুকিয়ে থাকতে পারে কিছু ভুল সিদ্ধান্তের ফাঁদ। তাই সঞ্চয়পত্রে টাকা ঢালার আগে এই ১০টি বিষয় জেনে রাখুন, যেন লাভে থাকেন আপনি, না থাকেন বিভ্রান্তিতে।
১. জলদি টাকার দরকার? তাহলে সঞ্চয়পত্র নয়
সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছর। আপনি যদি ভাবেন হঠাৎ করে টাকাটা দরকার হবে—তাহলে ভুল পথে হাঁটছেন। কারণ সময়ের আগেই ভাঙালে সুদ কমে যায়, আপনার লাভেও কাটছাঁট পড়ে।
২. সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি মানেই সুদে কাটছাঁট
ভাবছেন কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে মালিক হয়ে যাবেন? হ্যাঁ, কিনতে পারেন না! কারণ নির্দিষ্ট সীমার বাইরে গেলে মুনাফার হার কমে যায়। তার ওপর আছে উৎসে কর—টিআইএন থাকলে ১০%, না থাকলে ১৫%! তবে স্বস্তির খবর—৫ লাখ পর্যন্ত কর লাগে না।
৩. মুনাফা খেয়ে ফেলতে পারে মূল্যস্ফীতি
আজকে আপনি যা দিয়ে এক কেজি চাল কিনছেন, বছর পরে তা দিয়ে কিনবেন আধা কেজি। দেশে এখন মূল্যস্ফীতি ১০% এর উপরে। আর সঞ্চয়পত্র দিচ্ছে ১১%-১২.৫%। হাতে টাকা এলেও, তার মানে কিন্তু কমছে প্রতিদিন।
৪. সীমা আছে, শখের নয়
চাইলেই কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। নারী হলে পরিবার সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ, সাধারণ ক্ষেত্রে ৩০ লাখ পর্যন্ত। যৌথ নামে ৬০ লাখ। আর পেনশনারদের জন্য আলাদা সীমা রয়েছে। তাই পরিকল্পনা করুন সীমার ভেতরে থেকেই।
৫. সবাই কিনতে পারবেন না
বাংলাদেশি নাগরিক, প্রবাসী এবং সরকারি চাকরিজীবীদের (অবসরে যাওয়া) জন্য এই সুযোগ খোলা। তবে বিশেষ শর্তে। পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন শুধু নারীরা। তাই আগে দেখে নিন, আপনি যোগ্য কিনা।
৬. এই পাঁচটি কাগজপত্র না থাকলে পিছিয়ে যাবেন
জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ব্যাংক হিসাব নম্বর, টিআইএন সার্টিফিকেট (যদি থাকে) ও অর্থের উৎস—এই পাঁচটি দলিল ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা সম্ভব নয়। আগে থেকে প্রস্তুত রাখুন।
৭. নিবন্ধন ছাড়া সঞ্চয়পত্র? অসম্ভব!
২০২১ সাল থেকে সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। DNSSS সিস্টেমে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়া এক পয়সার সঞ্চয়পত্রও মিলবে না। তাই প্রথম কাজ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সেরে রাখা।
৮. জীবনের সব টাকা এক ঝুড়িতে নয়
সব টাকা সঞ্চয়পত্রে ঢেলে দিয়ে জরুরি সময়ে অন্যের মুখের দিকে তাকানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। প্রয়োজনীয় নগদ টাকাও হাতে রাখুন। কারণ, ভাঙলেই কমে মুনাফা।
৯. দালাল মানেই ঝুঁকি
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে বা পরিচিত দালালের কথায় সঞ্চয়পত্র কেনা মানেই নিজের পায়ে কুড়াল মারা। প্রতারণা এড়াতে সোজা যান ডাকঘর, বাংলাদেশ ব্যাংক বা অনুমোদিত ব্যাংকে।
১০. ব্যাংক হিসাব খুলে রাখুন, মুনাফা যাবে সরাসরি সেখানে
সঞ্চয়পত্র কেনার সময়ই ব্যাংক হিসাব দিতে হয়। কারণ মুনাফার টাকা সরাসরি চলে যাবে ওই অ্যাকাউন্টে। তাই আগে থেকেই একটি সচল হিসাব চালু রাখুন।
বিনিয়োগে আবেগ নয়, হোক কৌশল
সঞ্চয়পত্র একটি চমৎকার বিনিয়োগ মাধ্যম—তবে তখনই, যখন তা পরিকল্পনা করে করা হয়। সুদের হার নয়, দেখুন আপনার প্রয়োজন, লক্ষ্য, এবং ঝুঁকির মাত্রা। তাহলেই সঞ্চয়পত্র হবে আপনার আয়ের নিশ্চিন্ত সঙ্গী।
জাকারিয়া ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চলছে নেপাল বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- নেপাল বনাম বাংলাদেশ: হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- আজ বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- আশ্চর্যজনক উত্থান: জেড গ্রুপের ৪ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঢল, কেন?
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- নেপাল বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধ শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- আজ বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায়
- চলছে বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- ৩ কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি: বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর সতর্কবার্তা
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: লস টাইমে গোল, বাঁচা মরার ম্যাচ শেষ, জানুন ফলাফল
- সেনাবাহিনীর কঠোর হুঁশিয়ারি
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর জরুরি সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের উত্তাপ! ৪ কোম্পানির শেয়ারে অবিশ্বাস্য লাভ
- ঝুঁকিপূর্ণ ৪ শেয়ারে মুনাফার ঝড়: বিনিয়োগকারীদের সতর্ক বার্তা!