ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ২য় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ফলাফল ও বিশ্লেষণ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২২ ২১:৫২:৩৯
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ২য় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ফলাফল ও বিশ্লেষণ

টানা দুই ম্যাচে দাপুটে জয়, সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ: পাকিস্তানকে আবারও হারাল টাইগাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, ২২ জুলাই ২০২৫ — পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টিতে টানা জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে গেছে টাইগাররা। এখনো একটি ম্যাচ বাকি থাকলেও এই জয়ে সিরিজ জয়ের নিশ্চয়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।

বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়াল টাইগাররা, জয়ের ভিত্তি গড়লেন জাকের ও মাহেদী

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুতে চাপে পড়ে যায়। মোহাম্মদ নাইম (৩), লিটন দাস (৮), তৌহিদ হৃদয় (০) এবং পারভেজ ইমন (১৩) দ্রুত ফিরলে মাত্র ২৮ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা।

এই বিপদের মধ্যে দলকে টেনে তোলেন জাকের আলি ও মাহেদী হাসান। তারা গড়ে তোলেন ৫৩ রানের জুটি। মাহেদী ৩৩ রান করেন ২৫ বলে, আর জাকের আলি খেলেন দুর্দান্ত ৫৫ রানের ইনিংস ৪৮ বলে, যেখানে ছিল ১টি চার ও ৫টি ছয়। শেষদিকে দলের অন্যরা বিশেষ রান করতে না পারলেও বাংলাদেশ ২০ ওভারে সংগ্রহ করে ১৩৩ রান।

পাকিস্তানের হয়ে সফল বোলার ছিলেন আব্বাস আফ্রিদি (২ উইকেট), আহমেদ দানিয়াল (২ উইকেট), এবং সালমান মির্জা (২ উইকেট)।

পাকিস্তানের ব্যাটিং ধস, ফাহিম আশরাফের লড়াই ব্যর্থ

মাত্র ১৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ মুখ থুবড়ে পড়ে। শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যান সাইম আইয়ুব (১), মোহাম্মদ হারিস (০), ফখর জামান (৮), হাসান নওয়াজ (০), মোহাম্মদ নওয়াজ (০) এবং অধিনায়ক সালমান আঘা (৯)। মাত্র ৩০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা।

সাত নম্বরে নামা ফাহিম আশরাফ হাল ধরেন এবং একপ্রান্ত আগলে রেখে ৩২ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন আব্বাস আফ্রিদি (১৯) ও আহমেদ দানিয়াল (১৭)। তবে বাংলাদেশি বোলারদের কৌশলী বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান অলআউট হয়ে যায় ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে।

শরিফুল-তানজিম- মাহেদীর বোলিং ত্রয়ীতে জয় নিশ্চিত

বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন দুর্দান্ত। শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। তানজিম হাসান সাকিব ও মাহেদী হাসান তুলে নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন। বিশেষ করে শরিফুল ইসলাম ইনিংসের শুরুতেই দুটি মূল্যবান উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন।

ম্যাচসেরা জাকের আলি

দল যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে, তখন ঠান্ডা মাথায় খেলে ৫৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন জাকের আলি। তার এই ইনিংসই বাংলাদেশের ইনিংসের মেরুদণ্ড হয়ে দাঁড়ায় এবং ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তিনি।

সিরিজ নিশ্চিত, এখন চোখ হোয়াইটওয়াশের দিকে

এই জয়ে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে। মিরপুরে সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ম্যাচটি হবে আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার ম্যাচ হলেও টাইগারদের চোখ এখন হোয়াইটওয়াশের দিকে। পাকিস্তানের জন্যও এটি সম্মান রক্ষার লড়াই।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয় আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং-বোলিং সমন্বয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় এসেছে বোলারদের দৃঢ়তায় এবং জাকের-মাহেদীর ব্যাটিংয়ে। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ ছিল দৃঢ়, নিয়ন্ত্রিত এবং পরিকল্পিত।

বিশ্বকাপের আগে বড় আত্মবিশ্বাস টাইগারদের

এই সিরিজ জয় বাংলাদেশ দলের জন্য শুধু তাৎক্ষণিক সাফল্য নয়, বরং আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এক বড় মানসিক শক্তি। তরুণদের পারফরম্যান্স, অভিজ্ঞদের অবদান ও বোলিং ইউনিটের শৃঙ্খলা—সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি গোছানো দল।

এই জয় দেখিয়ে দিল, বাংলাদেশ এখন আর কেবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না, জিততেও জানে। পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে জয় এবং সিরিজ নিশ্চিত করা টাইগারদের সামর্থ্য ও ধারাবাহিকতার প্রমাণ। এখন তারা সামনে তাকাবে হোয়াইটওয়াশের দিকে—যা হবে এই তরুণ দলের আরেকটি বড় অর্জন।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ