ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

নতুন ঘোষণা দিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ১৭:৪০:৪৭
নতুন ঘোষণা দিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরি নিয়ে সদ্য জারি করা বিতর্কিত অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের ভাষায়, এই আইন নয়, বরং এটি এক ধরনের নিপীড়নমূলক অস্ত্র, যা দিয়ে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা চলছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।

তিনি বলেন, “এটা শুধু একটি অধ্যাদেশ নয়, এটা আমাদের নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। যতক্ষণ না এই অধ্যাদেশ বাতিল হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আজই স্বরাষ্ট্র ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। আমরা এক ইঞ্চি পিছু হটব না।”

সমাবেশে আরও জোরালো কণ্ঠে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তার কথায় ছিল ক্ষোভ আর প্রতিজ্ঞার মিশেল—“আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু উচ্চপর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা আমাদের আস্থার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এখন আর পেছনে তাকানোর সময় নেই। আমরা ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতার দাবি করছি। আমরা চাই সেই সব আমলাদের বিদায়, যারা জনগণের করের টাকায় চলে, কিন্তু নাগরিকদের অধিকারকে তুচ্ছ করে।”

নুরুল ইসলাম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, “আজ যেমন আপনারা মন্ত্রণালয় ধরে ধরে মিছিল নিয়ে এসেছেন, আগামীকাল আরও শক্তভাবে নামুন। প্রতিটি দপ্তর, প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা মিছিল বের করুন। আগামী কর্মসূচি হবে আরও সাহসী, আরও ঐক্যবদ্ধ।”

প্রসঙ্গত, গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় একটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। ২৫ মে তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ওই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কেবল একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েই সরকারি কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে।

এই বিধানকেই সরকারি চাকরিজীবীরা আখ্যা দিয়েছেন ‘নতুন যুগের কালো আইন’ হিসেবে। তারা বলছেন, এ আইন কার্যকর হলে সরকারি চাকরি হবে ‘চাপের চাকরি’, আর কর্মক্ষেত্র হবে ‘ভয়ের কারাগার’।

অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে তারা গত ২৪ মে থেকে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছেন। কর্মবিরতি, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

তাদের স্পষ্ট বার্তা— প্রশাসনে শৃঙ্খলা চাই, কিন্তু শোষণ নয়; নিয়ন্ত্রণ চাই, কিন্তু ন্যায়ের নামে নিপীড়ন নয়। যত দিন না এই আইন বাতিল হচ্ছে, তত দিন সচিবালয়ের বারান্দা, করিডর, লিফট, গেট—সবখানেই চলবে প্রতিবাদের ঝড়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ