ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জয়রথ ছুটছে, ক্লাব বিশ্বকাপে থমকে ইউরোপ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২০ ১৫:৪৬:০৮
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জয়রথ ছুটছে, ক্লাব বিশ্বকাপে থমকে ইউরোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রে বসেছে ক্লাব বিশ্বকাপের আসর, তবে শাসন করছে লাতিন ক্লাবগুলোই—অপরাজিত ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দলগুলো চাপে ফেলেছে ইউরোপীয় জায়ান্টদের।

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসেছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জমকালো আসর। তবে ম্যাচের ফলাফল আর গ্যালারির উন্মাদনা দেখে বোঝার উপায় নেই, এই টুর্নামেন্ট আদতে আমেরিকায় হচ্ছে, নাকি লাতিন আমেরিকায়! ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো যেভাবে মাঠে দাপট দেখাচ্ছে আর গ্যালারিতে সমর্থকেরা গর্জে উঠছে, তাতে পুরো টুর্নামেন্টটাই যেন রূপ নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এক মহাউৎসবে।

অপরাজিত ছয় লাতিন ক্লাব

এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ছয়টি কনমেবল ক্লাব—ব্রাজিলের পালমেইরাস, ফ্লামেঙ্গো, ফ্লুমিনেন্স, বোতাফোগো এবং আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট—কেউই হারেনি।

তাদের খেলা আটটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জয়, বাকি তিনটি ড্র। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের কাছে এখনো অপরাজেয় তারা। ম্যাচের ফলের চেয়েও বড় খবর হলো, তারা যেভাবে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে দাঁত ফোটাচ্ছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে—দক্ষিণ আমেরিকা এখনো হারিয়ে যায়নি।

পিএসজির বিপর্যয়, বোতাফোগোর বিস্ময়

টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় চমকটা এসেছে বোতাফোগোর কাছ থেকে। প্রথম ম্যাচে সিয়াটল সাউন্ডার্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে শুরু করা ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি এবার উড়িয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় শক্তিশালী ক্লাব পিএসজিকেও। অথচ পিএসজি আগের ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল বাকি দলের মনে। কিন্তু বোতাফোগো সেই পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে এবং নকআউট রাউন্ডে উঠে যাওয়া প্রথম দল হয়েছে।

রিভার-বোকা: আর্জেন্টিনার দুই ঐতিহ্যবাহী মুখ

রিভার প্লেট তাদের প্রথম ম্যাচে জাপানের উরাওয়া রেড ডায়মন্ডসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শক্ত বার্তা দিয়েছে। বোকা জুনিয়র্সও পিছিয়ে নেই। বেনফিকার বিপক্ষে ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র করলেও ম্যাচে আধিপত্য ছিল আর্জেন্টাইনদেরই। মজার বিষয়, বেনফিকার দুই গোলদাতাও ছিলেন আর্জেন্টিনার—আনহেল দি মারিয়া ও নিকলাস অতামেন্দি। এমন পরিস্থিতিতে বোকা সমর্থকদের দাবি, “শেষ হাসিটা তো আমরাই হাসলাম!”

ইউরোপের ক্লাবগুলো চাপে

প্রথম ধাক্কা আসে পোর্তোর বিপক্ষে পালমেইরাসের ড্র থেকে। এরপর একে একে হোঁচট খেতে থাকে ইউরোপীয় ক্লাবগুলো। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড গোলশূন্য ড্র করে ফ্লুমিনেন্সের সঙ্গে। ফ্লামেঙ্গো আফ্রিকার দল এল তিউনিসকে হারায় সহজেই।

তাদের ফুটবলের ধরণ, গতি, ছন্দ এবং মানসিকতা দেখে বোঝা যাচ্ছে—এটা শুধুই ক্লাব বিশ্বকাপ নয়, এটা এক অর্থে লাতিন ফুটবলের পরিচয় তুলে ধরার মঞ্চ।

গ্যালারিতেও লাতিন ঝড়

মাঠে খেলা যেমন জমজমাট, গ্যালারিতেও চলছে একেকটা মিনি কার্নিভাল। টাইমস স্কয়ারে আর্জেন্টাইন পতাকা, মিয়ামির রাস্তায় ব্রাজিলিয়ান ঢোল, সিয়াটলের গ্যালারিতে ‘রিভার প্লেট, রিভার প্লেট’—সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলো যেন রূপ নিচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল প্রাণের শহরগুলোতে।

ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠবে ট্রফি, তা সময় বলবে। তবে এখন পর্যন্ত একটাই সত্য—ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জয়রথে থেমে যাচ্ছে ইউরোপ। যে ফুটবল গর্ব একসময় কেবল চ্যাম্পিয়নস লিগেই সীমাবদ্ধ ছিল, এখন তা লাতিন ছন্দে দুলছে ক্লাব বিশ্বকাপের মঞ্চেও।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ