ঢাকা, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

৮-০ গোলের জয়, ইতিহাস গড়ল লাল-সবুজের মেয়েরা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ২০:২৯:৩৫
৮-০ গোলের জয়, ইতিহাস গড়ল লাল-সবুজের মেয়েরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইয়াঙ্গুনে মাঠ, হৃদয়ে বাংলাদেশ—বাহরাইনের বিপক্ষে গৌরবময় এক মহাকাব্য লিখলেন নারী ফুটবলাররা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে বড় ব্যবধানে জয়ের নতুন এক ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশের মেয়েরা।

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত হয়েছে নারী আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ছিল ফিফা র‍্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা বাহরাইন। কিন্তু মাঠে নেমে র‌্যাংকিংয়ের কোনো প্রভাবই রাখেননি লাল-সবুজের বীর মেয়েরা। যেন এক ঝড় তুলেই ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন বাহরাইনের প্রতিরক্ষা—ফলাফল, ৮-০ গোলের অবিস্মরণীয় জয়।

গল্পের শুরুতেই শামসুন্নাহার

ম্যাচের ১০ মিনিটেই বাংলাদেশের পক্ষে শুরু হয় গোলের উৎসব। নিজেদের অর্ধ থেকে আসা এক লম্বা বল দখলে নেন শামসুন্নাহার। এগিয়ে আসা বাহরাইনের গোলরক্ষককে এক চিপে পরাস্ত করেন তিনি। বল ভেসে জাল ছুঁতেই যেন পুরো মাঠে ছড়িয়ে পড়ে কাব্যময় এক অনুভূতি—১-০।

দ্বিতীয় গোল, সুরের মতো মসৃণ

মাত্র ৫ মিনিট পর আসে দ্বিতীয় গোল। বাঁ দিক থেকে বল পেয়ে নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত এক কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড। গ্যালারিতে তখন হাততালির ঢেউ।

কোহাতির গর্জন—তৃতীয় গোল

৪২তম মিনিটে কর্নার থেকে গোলমুখে তৈরি হয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। সেখানেই বল পেয়ে যান কোহাতি। একটু জায়গা পেয়ে এক দুর্দান্ত ভলিতে গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন তিনি।

ইনজুরি টাইমে তহুরার ‘তাণ্ডব’

প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়েই মাঠে নামেন তহুরা খাতুন। নেমেই শুরু করেন ধ্বংসযজ্ঞ। একের পর এক ড্রিবল করে প্রথমে একটি গোল করেন, কিছুক্ষণ পর আরেকটি—একাই দুই গোল করে অচল করে দেন বাহরাইনের রক্ষণভাগ। বিরতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৫-০ গোলে।

ক্ষুধা ফুরোয়নি, দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন গোল

দ্বিতীয়ার্ধেও থামেননি লাল-সবুজের মেয়েরা। আরও তিনটি দারুণ গোল করে ম্যাচ শেষ করেন ৮-০ ব্যবধানে। বাহরাইনের রক্ষণভাগ তখন যেন ছিন্নভিন্ন, আর বাংলাদেশ দল উদ্‌যাপন করছিল আত্মবিশ্বাস আর সাহসের বিজয়।

ফুটবল নয়, যেন কবিতা লিখলেন মেয়েরা

এই ম্যাচ শুধু ৮ গোলের জয় নয়, এটি ছিল এক প্রতীকী বার্তা—বাংলাদেশ মানে শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবলেও এক সম্ভাবনাময় নতুন দিগন্ত। প্রতিটি পাস, প্রতিটি গোল ছিল যেন সাহস আর আত্মবিশ্বাসের রূপ। আজকের এই জয় লাখো তরুণীকে দেখিয়ে দিল, স্বপ্ন সত্যি হতেই পারে।

আজকের তারকারা:

শামসুন্নাহার: ম্যাচের প্রথম গোল দিয়ে উন্মুক্ত করেন জয়ের দরজা

তহুরা খাতুন: বদলি হিসেবে নেমে ইনজুরি টাইমেই জোড়া গোল

কোহাতি: শক্তিশালী শটে করেন দলের তৃতীয় গোল

এছাড়াও গোল পেয়েছেন আরও কয়েকজন খেলোয়াড়, যারা ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে

বাংলাদেশ, বাংলাদেশ…

আজকের ম্যাচ ইতিহাসের পাতায় রয়ে যাবে গর্ব আর অনুপ্রেরণার এক অধ্যায় হয়ে। মাঠে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা হয়তো আজীবন ভুলতে পারবেন না এই রাত্রি। আর যাঁরা খেলা দেখেছেন, তাঁদের মনেও অনুরণিত হতে থাকবে সেই গান:

“বাংলাদেশ, বাংলাদেশ…”

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ