ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

শেয়ারবাজার ছাড়ছেন না বিনিয়োগকারী, বরং বাড়ছে সক্ষমতা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২৯ ১৩:৩৩:২৩
শেয়ারবাজার ছাড়ছেন না বিনিয়োগকারী, বরং বাড়ছে সক্ষমতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন—সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে এমন ধারণা ঘুরপাক খেলেও তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের ব্যাখ্যায় উঠে এসেছে, বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা পালাচ্ছেন না, বরং পরিবর্তন এসেছে তাদের বিনিয়োগ কৌশল, আর্থিক সক্ষমতা এবং মানসিকতায়।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানায়, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) থেকে পাওয়া হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশে মোট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবের সংখ্যা এখন ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪৮টি। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা কিছুটা কমলেও এতে বিনিয়োগকারীদের কাঠামোগত রূপান্তরের প্রতিফলন দেখা যায়।

বৃহৎ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে

তথ্য অনুযায়ী, ৫০ কোটি টাকার বেশি পোর্টফোলিওধারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা আগের বছরের ৬৯৬ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে হয়েছে ৭৩৩ জন। একইভাবে, যাঁদের পোর্টফোলিও ৫০০ কোটি টাকার বেশি, এমন অতি উচ্চ বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বেড়েছে—২০২৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬৮ জন, এখন তা দাঁড়িয়েছে ৭০-এ।

মাঝারি পর্যায়েও সক্রিয়তা

শুধু বড় পুঁজির মালিকরাই নয়, মাঝারি বিনিয়োগকারীরাও এখন আগের চেয়ে বেশি সক্রিয়। ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে—এমন মাঝারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২২৫ জন, যেখানে আগের বছর এটি ছিল ২২ হাজার ৯০৭। এই দিক থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩১৮ জন।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অংশ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে

অন্যদিকে, যাঁদের পোর্টফোলিও ১ লাখ টাকার নিচে—এমন অতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা এক বছরে কমেছে প্রায় ৮৫ হাজার। ২০২৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ১৬ হাজার ১৫৭; ২০২৫ সালে এসে তা নেমেছে ৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৮-এ। বিএসইসি’র বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এদের কেউ হয়তো বাজার ছেড়েছেন, আবার অনেকে নিজেদের বিনিয়োগ এক লাখ টাকার উপরে উন্নীত করেছেন।

বিনিয়োগ প্রবণতায় মানসিক পরিবর্তন

কমিশনের মতে, সামগ্রিকভাবে এসব পরিসংখ্যান প্রমাণ করে, বিনিয়োগকারীরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিণত ও সচেতন হয়ে উঠছেন। স্বল্পমেয়াদি ট্রেডিংয়ের বদলে তারা এখন মূল্যনির্ভর, ডিভিডেন্ডভিত্তিক এবং টেকসই বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বিএসইসি মনে করে, এই নতুন বিনিয়োগ প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা এবং আস্থার জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক হবে।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ