অবশেষে মুক্তি পাবে ইয়াজুজ-মাজুজ? কোথায় আছে তারা এখন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন কিছু রহস্যময় অধ্যায় রয়েছে, যার জট আজও খোলেনি। তেমনি এক রহস্যময় জাতি হলো ইয়াজুজ-মাজুজ। হাজার হাজার বছর ধরে এই নামটি মানুষের মনে কৌতূহল ও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাদের আসল পরিচয় কী, কবে এবং কীভাবে তারা আবির্ভূত হবে—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ও ঐতিহাসিক বিবরণের আলোকে।
ইসলাম ধর্মে ইয়াজুজ-মাজুজ
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, ইয়াজুজ-মাজুজ হলো কুরআনে বর্ণিত এক বর্বর জাতি, যাদের আবির্ভাব ঘটবে কিয়ামতের অন্যতম বড় আলামত হিসেবে। পবিত্র কুরআনের সূরা কাহফে তাদের ঘটনা উল্লেখ করা হলেও তাদের বিস্তারিত পরিচয় দেওয়া হয়নি।
'ইয়াজুজ-মাজুজ' শব্দের অর্থ 'দ্রুতগামী'। ধারণা করা হয়, তারা পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। অন্য মতে, আরবি 'মউজ' শব্দ থেকে এর উৎপত্তি, যার অর্থ 'তরঙ্গ' বা 'ঢেউ'। এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, তারা বিশাল সংখ্যায় ঢেউয়ের মতো সমগ্র পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করবে।
কুরআন ও হাদিসে তাদের নির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি, যা নিয়ে তাফসিরবিদ, ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে কুরআন ও সহিহ হাদিসের বর্ণনা থেকে এটি প্রমাণিত যে, ইয়াজুজ-মাজুজ মানব সম্প্রদায়েরই অন্তর্ভুক্ত।
পবিত্র কুরআনের সূরা সাফফাতের ৭৫-৭৭ নম্বর আয়াত অনুযায়ী, মহাপ্লাবনের পর নুহ (আ.)-এর বংশধরদের মাধ্যমেই পৃথিবীতে মানবজাতি টিকে ছিল। তাফসিরে জালালাইন ও ফাতহুল কাদির অনুসারে, নুহ (আ.)-এর তিন পুত্র ছিলেন—সাম, হাম এবং ইয়াফিস। ইয়াজুজ-মাজুজ হলো ইয়াফিসের বংশধর। বিভিন্ন তাফসির অনুযায়ী, তাদের অবস্থান আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, চীনের উত্তর বা ককেশাস পর্বতমালার আশপাশের অঞ্চলে হতে পারে।
ঐতিহাসিকদের অনুসন্ধান
তৃতীয় হিজরি শতকের ভূগোলবিদ ইবনে খুরদাজবিহ তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, আব্বাসীয় খলিফা ওয়াসিক বিল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজের খবর সংগ্রহের জন্য একটি অভিযাত্রী দল প্রেরণ করেছিলেন। প্রায় আড়াই বছর পর সেই দল ফিরে এসে জানায় যে, পৃথিবীর উত্তর-পূর্ব ভূখণ্ডে ইয়াজুজ-মাজুজের অবস্থান। এই বর্ণনা অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের সাইবেরিয়া, রাশিয়া, মঙ্গোলিয়া, কোরিয়া ও জাপান এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। অনেক গবেষক মনে করেন, সাইবেরিয়ার ইয়াকুত, ইভেঙ্কি, চুকি এবং মঙ্গোলীয় তাতার জনগোষ্ঠীই ইয়াজুজ-মাজুজের বংশধর।
বাইবেলে ইয়াজুজ-মাজুজ (গগ ও ম্যাগগ)
বাইবেলেও ইয়াজুজ-মাজুজের কথা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে তাদের 'গগ' ও 'ম্যাগগ' নামে অভিহিত করা হয়েছে। বাইবেলের আদিপুস্তক বা 'বুক অফ জেনেসিস'-এর দশম অধ্যায়ে তাদের নুহ (আ.)-এর বংশধর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তারা পৃথিবীর দূরতম প্রান্ত থেকে এসে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধে লিপ্ত হবে।
এই সমস্ত বিবরণ থেকে বোঝা যায়, ইয়াজুজ-মাজুজ কোনো নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের দৌরাত্ম্য এক বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত থাকবে।
কুরআন ও হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, ইয়াজুজ-মাজুজ কিয়ামতের আগে আল্লাহর নির্দেশে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। সূরা আম্বিয়ার ৯৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "অবশেষে যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে, এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।"
তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান ও পরিচয় নিয়ে রহস্য থাকলেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর বর্ণনার ওপর সামগ্রিক বিশ্বাস রাখাই একজন বিশ্বাসীর জন্য যথেষ্ট।
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- বাংলাদেশ বনাম ভুটান: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ডিএসইর সতর্কবার্তা: বিনিয়োগকারীরা সাবধান
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- ৭ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ভরসা
- বাংলাদেশ বনাম ভুটান: অবশেষে গোল, প্রথমার্ধের খেলা শেষ
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বড় চমক, বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- আজকের খেলার সময়সূচি:বাংলাদেশ-মেলবোর্ন ওসিপিএল
- দালালদের দিন শেষ! এখন শূন্য খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ