প্রতি ২৬ সেকেন্ডে কাঁপছে পৃথিবী: বিজ্ঞানীরা দ্বিধান্বিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি ২৬ সেকেন্ড পর পর এক রহস্যময় স্পন্দনে কেঁপে উঠছে আমাদের এই পৃথিবী। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, গত প্রায় ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে গবেষণা করেও বিজ্ঞানীরা এই ঘটনার কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি। অনেকেই এই অদ্ভুত স্পন্দনকে ‘পৃথিবীর হৃদস্পন্দন’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
সাধারণত পৃথিবী সবসময়ই কাঁপছে, তবে তার মাত্রা এতটাই কম যে আমরা তা অনুভব করতে পারি না। কিন্তু এই নির্দিষ্ট স্পন্দনটি বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে কারণ এটি একটি নিয়মিত সময় পর পর ঘটছে।
এই রহস্যময় ঘটনাটি প্রথমবার বিজ্ঞানীদের নজরে আসে ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে। সে সময় ভূকম্পনবিদরা একটি বিশেষ যন্ত্রে এই অস্বাভাবিক কম্পনের প্রমাণ পান। পরবর্তীতে ১৯৮০-এর দশকে মার্কিন ভূকম্পনবিদ জ্যাক অলিভার এই কম্পন নিয়ে গবেষণা করে জানান, পৃথিবীর ভেতর থেকে আসা এক ধরনের নিরবচ্ছিন্ন সংকেতই এই ২৬ সেকেন্ডের পুনরাবৃত্তির কারণ।
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এই কম্পন পর্যবেক্ষণ করলেও এখন পর্যন্ত এর পেছনের মূল কারণটি পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারেননি। মানুষের পক্ষে সরাসরি এই কম্পন অনুভব করা সম্ভব নয়, কারণ এর মাত্রা অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও নিম্ন। তবে, ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্র, বিশেষ করে সিসমোগ্রাফে, এটি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। পৃথিবীর যেকোনো স্থানে রাখা সিসমোগ্রাফ এই নিয়মিত কম্পন রেকর্ড করতে সক্ষম, যা প্রমাণ করে যে এই সংকেতটি বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানীরা এই রহস্যময় স্পন্দনের পেছনে বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। একটি ধারণা অনুযায়ী, আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গিনি উপসাগরের ঢেউ এবং সমুদ্রের তলদেশের মধ্যেকার মিথষ্ক্রিয়া থেকে এই কম্পনের সৃষ্টি হতে পারে। অন্য একটি তত্ত্বে বলা হয়েছে, পৃথিবীর গভীরে ম্যান্টল বা অভ্যন্তরীণ স্তরের কোনো বিশেষ প্রক্রিয়া এই কম্পনের জন্য দায়ী। আবার, সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি বা টেকটোনিক প্লেটের সঞ্চালনের মতো ঘটনাও এর কারণ হতে পারে বলে মনে করা হয়।
অনেক বিজ্ঞানী এই ঘটনাকে পৃথিবীর একটি স্বাভাবিক ছন্দ বা প্রাকৃতিক স্পন্দন হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটি কোনো সতর্ক সংকেত নয়, বরং পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। তবে, রহস্য উন্মোচন না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলতেই থাকবে।
এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি যা থেকে বলা যায় এই ২৬ সেকেন্ডের স্পন্দন পৃথিবীর ভূমিকম্প, সুনামি বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্পর্কিত।
পৃথিবীর এই অদ্ভুত হৃদস্পন্দন একদিকে যেমন বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করছে, তেমনি অন্যদিকে আমাদের কৌতূহলও বাড়িয়ে তুলছে। হয়তো ভবিষ্যতের উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণাই এই রহস্যের সমাধান করতে পারবে। ততদিন পর্যন্ত এটি পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত এবং নীরব প্রাকৃতিক বিস্ময় হয়েই থাকবে।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- মার্জিন বিধিমালা ২০২৫ খসড়া প্রকাশ, বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ঘোষণা
- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের বড় ঘোষণা, শেয়ারে হঠাৎ চাহিদার ঝড়
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর বিশেষ সতর্কবার্তা
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল: লস টাইমে গোল, শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ৯ কোম্পানির শেয়ার
- আজকের শেয়ারবাজার: বিক্রেতা সংকটে ৯ কোম্পানি হল্টেড
- বিনিয়োগকারীরা সাবধান: ডিএসইর গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা
- সরকারের এক সিদ্ধান্তে ৭০০ টাকার গরুর মাংস মিলবে ১২০-১২৫ টাকায়
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কবার্তা: বিমা খাত এখন ঝুঁকির মধ্যে
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল