ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

হিমাগারে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিল সরকার

সারাদেশ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৮ ০৮:০৫:২০
হিমাগারে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিল সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যবসায়ীদের দাবি আংশিক মেনে নিয়ে হিমাগারের গেইটে আলুর ন্যূনতম দাম কেজিপ্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু সরকারি উদ্যোগে ক্রয় করে হিমাগারে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বাজারে ছাড়বে সরকার।

বুধবার (২৭ আগস্ট) কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজারদরের সামঞ্জস্য না থাকায় কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে কৃষি সচিবের নেতৃত্বে বাণিজ্য, খাদ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সমন্বয়ে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত আসে।

সরকারের তিন দফা ঘোষণা

১. হিমাগারের গেইটে আলুর ন্যূনতম দাম কেজিপ্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ।

২. সরকারি উদ্যোগে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু ক্রয় ও হিমাগারে সংরক্ষণ করে ২০২৫ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বাজারে বিক্রি।

৩. আগামী মৌসুমে আলু চাষিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদান।

রেকর্ড উৎপাদনে সংকটে কৃষক

চলতি মৌসুমে দেশে রেকর্ড পরিমাণে ১ কোটি ৩০ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। যা দেশের চাহিদার চেয়ে প্রায় ৪০ লাখ টন বেশি। ফলে মৌসুমের শুরু থেকেই বাজারদর দ্রুত নেমে যায়। সংবাদমাধ্যমে খবর আসে—কৃষকেরা উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।

বাংলাদেশ হিমাগার সমিতির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী জানান, চলতি বছর প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের গড়ে ১৭ টাকা খরচ হয়েছে। এর সঙ্গে হিমাগারের ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ করে ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ২৫ টাকা কেজি। কিন্তু হিমাগার গেইটে আলু বিক্রি হচ্ছিল মাত্র ১৩ থেকে ১৫ টাকায়। এ কারণে কৃষকরা লোকসানে পড়েছিলেন। সমিতি সরকারের কাছে প্রতি কেজি আলুর ন্যূনতম মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণের দাবি জানায়।

যদিও পুরো দাবি মানা হয়নি, সরকার ২২ টাকা দাম নির্ধারণ করে আংশিকভাবে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের দাবি মেনে নিয়েছে।

বাজারে প্রভাব

সাধারণত শীতের শেষে নতুন আলু বাজারে আসে এবং ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দাম থাকে কম। পরে হিমাগারে মজুদ করা আলুই সারা বছর বাজারে সরবরাহ হয়। তাই হিমাগারের গেইটে ২২ টাকা দরে আলু বিক্রি হলেও পাইকার ও খুচরা বাজারে তার দাম আরও কিছুটা বাড়বে।

অর্থাৎ, এ সিদ্ধান্তে একদিকে যেমন কৃষকরা লোকসান থেকে কিছুটা রক্ষা পাবেন, অন্যদিকে ভোক্তাদের বাজারে আলুর খুচরা দরে সামান্য বাড়তি চাপ পড়তে পারে।

সব মিলিয়ে, সরকারের এ পদক্ষেপকে কৃষকদের জন্য আশার আলো বলা যায়। তবে বাজারে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা কঠিন।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ