ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

খতিয়ান সংশোধন ও পুনরুদ্ধার করবেন কীভাবে, জানুন সম্পূর্ণ নিয়ম

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৪:২৯:৫৫
খতিয়ান সংশোধন ও পুনরুদ্ধার করবেন কীভাবে, জানুন সম্পূর্ণ নিয়ম

বাংলাদেশে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য খতিয়ান বা মিউটেশন খতিয়ান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তবে অনেক সময় দেখা যায়, এই খতিয়ানে নানা ধরনের ভুল থেকে যায়—কেউ নামের বানানে ভুল পান, কারও দাগ নম্বর মেলে না, আবার কখনো মালিকানা নিয়েও তৈরি হয় জটিলতা। এমনকি জালিয়াতির মাধ্যমে খতিয়ান অন্যের নামে করার ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই। নির্ধারিত আইন ও প্রক্রিয়া মেনে খতিয়ান সংশোধন বা নতুন করে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

মিউটেশন খতিয়ানে ভুল হলে করণীয়

যদি মিউটেশন খতিয়ানে ভুল ধরা পড়ে, জমির মালিককে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করতে হবে। এ জন্য সাদা কাগজে ভুলের বিস্তারিত লিখে ২০ টাকার কোর্ট ফি দিতে হয়। এরপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং জমা দেওয়া নথিপত্র যাচাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভুলটি সংশোধনের নির্দেশ দেন।

খতিয়ানের মূল কপি হারিয়ে গেলে করণীয়

খতিয়ানের মূল কপি হারিয়ে গেলে প্রথম পদক্ষেপ হলো থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা। এরপর জিডির কপি ও ২০ টাকার কোর্ট ফি সংযুক্ত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করতে হয়। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে নতুন খতিয়ান প্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়। এর জন্য মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ডিসিআর (রসিদ) সংগ্রহ করতে হয়।

জরিপভিত্তিক খতিয়ান হারালে কী করবেন

শুধু মিউটেশন নয়, এসএ (SA), সিএস (CS), আরএস (RS), বিএস (BS) বা অন্য কোনো জরিপভিত্তিক খতিয়ান হারালেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এ ধরনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ড রুমে আবেদন করতে হয়। খতিয়ান নম্বর ও মৌজা নম্বর উল্লেখ করলে যাচাই শেষে রেকর্ড রুম থেকে হারানো খতিয়ানের কপি সরবরাহ করা হয়।

করণিক ভুল বা জালিয়াতি হলে প্রক্রিয়া

অনেক সময় খতিয়ানে করণিক ভুল পাওয়া যায়—যেমন বানানের ত্রুটি, দাগ নম্বরের অমিল বা অংশ বসানোর গড়মিল। আবার জালিয়াতির মাধ্যমেও খতিয়ানে পরিবর্তন আনা হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আইনি পথেই সমাধান মেলে।স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্ট, ১৯৫০-এর ১৪৩ ধারা এবং প্রজাস্বত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫-এর ২৩(৩) ও ২৩(৪) ধারা অনুযায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করে রেকর্ড সংশোধনের নির্দেশ দিতে পারেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা

খতিয়ান সংক্রান্ত বিষয়গুলো আরও স্বচ্ছ করতে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই একটি গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে। পাশাপাশি, জনসাধারণ যেন সহজে তথ্য জানতে পারেন সে জন্য যোগাযোগ নম্বর ও ইমেইল ঠিকানাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

খতিয়ান সংশোধন বা পুনরুদ্ধার একটি আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। তাই নির্ধারিত কাগজপত্র, প্রয়োজনীয় ফি ও সঠিক আবেদন পদ্ধতি অনুসরণ করলে জমির প্রকৃত মালিকানা ফিরে পাওয়া সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি সংক্রান্ত যেকোনো জটিলতায় দেরি না করে দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হওয়াই উত্তম।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ