ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

সঞ্চয়পত্র হবে নগদ অর্থের মতো, বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর!

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২১:১৩:৩৭
সঞ্চয়পত্র হবে নগদ অর্থের মতো, বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর!

সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগকারীদের জন্য দারুণ সুখবর নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি সঞ্চয়পত্রকে নগদ অর্থের মতো লেনদেনযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, "যদি সঞ্চয়পত্র লেনদেনযোগ্য করা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা এটিকে নগদ সম্পদের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। এতে শুধু বিনিয়োগকারীদেরই সুবিধা হবে না, বরং আর্থিক বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাবে।"

এমন পদক্ষেপ দেশের আর্থিক খাতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ট্রেজারি বন্ডও হবে সহজলভ্য:

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও জানান, সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি সরকারি ট্রেজারি বন্ডও সহজলভ্য এবং লেনদেনযোগ্য হওয়া উচিত। এতে এসব বিনিয়োগের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়বে এবং আর্থিক খাত আরও প্রাণবন্ত হবে। তিনি মনে করেন, এটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করবে।

অবকাঠামো প্রকল্পে বন্ডের ব্যবহার:

দেশের বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প, যেমন টোলভিত্তিক সড়ক, মহাসড়ক, মেট্রোরেল বা সেতু—এসব প্রকল্পকে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সিকিউরিটাইজ করা সম্ভব বলে আহসান এইচ মনসুর উল্লেখ করেন। এর ফলে সরকার দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের নতুন উৎস পাবে। তিনি বলেন, "বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নের তহবিল জোগাড় করা গেলে ব্যাংক নির্ভরতা কমবে এবং আর্থিক ঝুঁকিও হ্রাস পাবে।"

এমন নীতি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

ব্যাংক নির্ভরতা কমানোর তাগিদ:

গভর্নর সতর্ক করে বলেন, যদি সরকার ও বেসরকারি খাত শুধু ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর করে অর্থায়ন করতে থাকে, তবে আর্থিক ব্যবস্থায় স্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ব্যাংক খাতের চাপ কমাতে বন্ড ও শেয়ারবাজারের বিকাশ অপরিহার্য। তিনি জোর দেন যে, একটি সুষম আর্থিক খাতই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি।

বন্ড বাজার প্রসারে সরকারি উদ্যোগ:

সেমিনারে সাবেক গভর্নর ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই বন্ড বাজারকে প্রমোট করার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি মনে করেন, সঞ্চয়পত্র, ট্রেজারি বন্ড ও শরিয়াভিত্তিক সুকুক বাজারের প্রসার হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন এবং দেশের অর্থনীতিও আরও শক্তিশালী হবে।

'বন্ড ও সুকুক বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এই সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। অনুষ্ঠানে অংশ নেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, বাজার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। তাঁরা সবাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং মনে করছেন এটি দেশের আর্থিক বাজারের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ