ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বস্ত্র খাতের ৫ শেয়ারে চরম ধস: দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৮:৩৬:৩৯
বস্ত্র খাতের ৫ শেয়ারে চরম ধস: দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা

শেয়ারবাজারে একদা উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় বস্ত্র খাত এখন গভীর সংকটে। একের পর এক কোম্পানির শেয়ারদর নেমে এসেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) দেশের পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের ৫টি বৃহৎ কোম্পানি—আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্যামিলি টেক্স, হামিদ ফেব্রিক্স, নিউলাইন ক্লথিং এবং তুংহাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং—এর শেয়ারদর বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এই আকস্মিক পতন বিনিয়োগকারীদের ভবিষ্যত স্বপ্নকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।

শেয়ারদরের করুণ চিত্র:

চলুন দেখে নেওয়া যাক, তলানিতে থাকা এই পাঁচ কোম্পানির আজকের বাজারচিত্র:

আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি: আজ এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ৫ টাকা ২০ পয়সায়, যা ছিল চলতি বছরের সর্বনিম্ন দর। দিন শেষে শেয়ারের ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৩০ পয়সায়। অথচ, এই শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ৮ টাকা ৮০ পয়সা।

ফ্যামিলি টেক্স: ফ্যামিলি টেক্সের শেয়ারদর নেমে এসেছে ১ টাকা ৭০ পয়সায়, যা বছরের সর্বনিম্ন। দিনশেষে ক্লোজিং মূল্য দাঁড়ায় ১ টাকা ৮০ পয়সা। এই শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ৩ টাকা ৩০ পয়সা।

হামিদ ফেব্রিক্স: হামিদ ফেব্রিক্সের শেয়ারদর আজ ৬ টাকা ৬০ পয়সায় ঠেকেছে, যা ছিল বছরের সর্বনিম্ন। দিন শেষে শেয়ারের ক্লোজিং মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৭০ পয়সায়। একসময় এর সর্বোচ্চ দর ১৪ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছিল।

নিউলাইন ক্লথিং: নিউলাইন ক্লথিংয়ের শেয়ার আজ ৪ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে, যা বছরের সর্বনিম্ন রেকর্ড। দিন শেষেও এই দর অপরিবর্তিত থাকে। এই শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ২৬ টাকা।

তুংহাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড: তুংহাই নিটিংয়ের শেয়ারদর নেমেছে ১ টাকা ৯০ পয়সায়। ক্লোজিং মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ টাকায়। এই শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ৩ টাকা ৭০ পয়সা।

বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ও বাজার বিশ্লেষকদের উদ্বেগ:

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বস্ত্র খাতের এই ধারাবাহিক পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আস্থাহীনতা তৈরি করেছে। যে কোম্পানিগুলোকে একসময় ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হতো, আজ সেগুলোই বিনিয়োগকারীদের মাথাব্যথার কারণ। অনেক বিনিয়োগকারী এখন শুধু তাদের বিনিয়োগের একটি অংশ ফেরত পাওয়ার আশায় দিন গুনছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, কোম্পানিগুলোর দুর্বল আর্থিক ভিত্তি, উৎপাদন সংক্রান্ত সংকট এবং অব্যবস্থাপনা এই পতনের প্রধান কারণ। তারা মনে করেন, বাজারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা এবং এই কোম্পানিগুলোর পুনর্গঠন এখন অত্যন্ত জরুরি।

ভবিষ্যৎ কী?

বস্ত্র খাতের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে নীতি নির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ