ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

আতঙ্ক নয়: দলিল ছাড়াই জমির মালিকানা প্রমাণের ৫ আইনি পথ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৬:৩৭:৪৪
আতঙ্ক নয়: দলিল ছাড়াই জমির মালিকানা প্রমাণের ৫ আইনি পথ

জরুরি খবর: মূল দলিল না থাকলেও জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠার ৫ পথ, শীর্ষ আদালতের ঐতিহাসিক ঘোষণা

দেশের ভূমি সংক্রান্ত আইন ব্যবস্থায় সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। সম্পত্তি বা জমির মূল নথি (দলিল) হারিয়ে গেলেও বা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলেও এখন আর মালিকানা হারানোর ভয় থাকবে না। চুরি, অগ্নিসংযোগ বা পারিবারিক কোন্দলের জেরে দলিল বিলুপ্ত হলেও আইনের চোখে মালিকানা প্রমাণ করা সম্ভব—শীর্ষ আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) সম্প্রতি এমনটাই নিশ্চিত করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের নতুন আইনি নির্দেশনা অনুযায়ী, আপনার কাছে যদি পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকে, তবে দলিলের অনুপস্থিতিতেও আপনি আইনগতভাবে সম্পত্তির বৈধ স্বত্বাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। এটি জমির মালিকদের জন্য এক বিশাল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার মতো সংবাদ।

মালিকানা প্রতিষ্ঠার সেই ৫টি জরুরি প্রমাণ

দলিল ছাড়া জমির মালিকানা প্রমাণ ও আইনগতভাবে নিজের স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য নিচের এই ৫টি নথি বা উপায়কে অত্যন্ত শক্তিশালী সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করা হবে:

১. খতিয়ান (CS, SA, RS, BS): জরিপের ভিত্তিতে তৈরি সীমানা এবং মালিকের প্রাথমিক তথ্য সম্বলিত মৌলিক রেকর্ড।

২. নামজারি বা খারিজ: উত্তরাধিকার বা ক্রয়ের পর সরকারি খাতায় মালিকের নাম তালিকাভুক্তির দালিলিক প্রমাণ।

৩. ভোগদখলের প্রমাণ: দীর্ঘমেয়াদে সেই জমি ব্যবহার করা বা সেখানে বসবাসের বাস্তবিক ও আইনি সাক্ষ্য।

৪. ভূ-খাজনার রশিদ: নিয়মিত ভূমি কর পরিশোধের নথি, যা মালিকানার প্রতি আপনার অঙ্গীকার ও বৈধতা প্রমাণ করে।

৫. ডি সি আর (Duplicate Carbon Receipt): নামজারি সম্পন্ন হওয়ার পর সরকারি খাতাপত্রে মালিকানার পরিবর্তন নিশ্চিত করার স্বীকৃতিপত্র।

পৈতৃক সম্পত্তিতে অংশ দাবি: সহায়ক প্রমাণাদি

আইন বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, পৈতৃক সম্পত্তি এখনো পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বণ্টন না হয়ে থাকলে, সরকারি রেকর্ডে সরাসরি নাম না থাকা সত্ত্বেও বাটোয়ারা (বণ্টন) মামলার মাধ্যমে প্রাপ্য অংশ দাবি করা যায়।

এই ধরনের আইনি প্রক্রিয়ায় কিছু ব্যক্তিগত ও আইনি নথি অত্যন্ত মূল্যবান সহায়ক প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ, পাসপোর্ট, এবং বিভিন্ন হলফনামা (যেমন নাম সংশোধন, বিবাহ বা তালাকের)।

পরামর্শ: আইনি জটিলতা এড়ানোর উপায়

দলিল ছাড়া উপরোক্ত পাঁচটি প্রমাণ যদি আপনার হাতে থাকে, তবে আইন আপনাকে জমির বৈধ মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। তবে মনে রাখতে হবে, যেকোনো জটিল বা বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে পেশাদার আইনি পরামর্শ নেওয়া অবশ্যম্ভাবী।

আইনি জটিলতা এড়াতে এবং দ্রুত আইনি প্রতিকার পেতে, মূল দলিল খোয়া গেলে কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে স্থানীয় ভূমি কার্যালয় অথবা অভিজ্ঞ একজন আইনজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

FAQ (Frequently Asked Questions) ও উত্তর

প্রশ্ন ১: দলিল হারালে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য প্রধান ৫টি নথি কী কী?

উত্তর: জমির মালিকানা প্রমাণের ৫টি প্রধান নথি বা উপায় হলো: খতিয়ান (CS, SA, RS, BS), নামজারি/খারিজ, ভোগদখলের প্রমাণ, খাজনার রশিদ এবং ডিসিআর (Duplicate Carbon Receipt)।

প্রশ্ন ২: মূল দলিল হারিয়ে গেলেও কি আইনত জমির বৈধ মালিক থাকা যায়?

উত্তর: হ্যাঁ, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী মূল দলিল হারিয়ে গেলেও উপরে উল্লিখিত ৫টি প্রমাণ আপনার কাছে থাকলে আইনত আপনি জমির বৈধ মালিক হিসেবে স্বীকৃত হবেন।

প্রশ্ন ৩: পৈতৃক জমি এখনো ভাগ না হলে বাটোয়ারা মামলা ছাড়া কি মালিকানা দাবি করা যায়?

উত্তর: আইনজীবীদের মতে, রেকর্ডে নাম না থাকলেও বাটোয়ারা মামলার মাধ্যমেই পৈতৃক সম্পত্তির অংশ দাবি করা আইনত সহজ। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদের মতো সহায়ক প্রমাণ কাজে লাগে।

প্রশ্ন ৪: দলিল হারালে প্রথম আইনি পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত?

উত্তর: দলিল হারিয়ে গেলে অবিলম্বে স্থানীয় ভূমি অফিস বা একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

দেশ গার্মেন্টসের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

দেশ গার্মেন্টসের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

দেশের পোশাক খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড, তাদের সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাববছরের (৩০ জুন, ২০২৫) জন্য ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত... বিস্তারিত