ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

নতুন দুই আইন: বাতিলের পথে লক্ষাধিক দলিল

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১৬:৩৫:৫৮
নতুন দুই আইন: বাতিলের পথে লক্ষাধিক দলিল

দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সরকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আইন দুটি হলো—‘ভূমি ব্যবহার স্বত্ব আইন’ এবং ‘ভূমি অপরাধ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’। এই আইনগুলো কার্যকর হলে জমির মালিকানার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব স্বচ্ছতা ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে এর আগে, পুরনো ও রেজিস্ট্রিবিহীন অসংখ্য দলিলের বৈধতা নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে।

কেন বাতিল হচ্ছে সাত প্রকারের দলিল?

প্রস্তাবিত আইনি কাঠামোতে সাত প্রকারের দলিলকে অকার্যকর ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের প্রধান কারণ হলো—যে সকল দলিলপত্র রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি কিংবা যার বৈধ সিলমোহর ও স্বাক্ষর নেই, সেগুলি সরকারি কোষাগারে কোনো প্রকার অর্থ জমা দেয় না এবং আইনের চোখে বৈধতাও অর্জন করে না। নতুন বিধান অনুযায়ী, এই ধরনের দলিল আর কোনোভাবেই কার্যকর বলে বিবেচিত হবে না।

বাধ্যতামূলক নিবন্ধন: মালিকানা প্রমাণের একমাত্র ভিত্তি

নতুন আইন বলবৎ হলে ভূমির সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো বৈধ লেনদেনকে এখন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নথিভুক্ত করা আবশ্যক। সম্পত্তি হস্তান্তর, হেবা বা দানের মাধ্যমে প্রদান, বন্ধক রাখা, অথবা উত্তরাধিকার সূত্রে বাটোয়ারা—সব ক্ষেত্রেই এটি বাধ্যতামূলক। এমনকি আইনি স্বীকৃতি পেতে বায়নানামাও রেজিস্ট্রির মাধ্যমেই বৈধতা পাবে।

নথিভুক্ত করার জন্য যা যা প্রয়োজন হবে:

জমির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মালিকানা ইতিহাস, চতুর্সীমা ও মানচিত্র, দাতা-গ্রহীতার সঠিক পরিচয় ও ঠিকানা, প্রয়োজনীয় হলফনামা এবং আইন অনুযায়ী নির্ধারিত রেজিস্ট্রি ফি, কর, ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে।

জালিয়াতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ

শুধু নিবন্ধনহীন দলিলের ক্ষেত্রেই নয়, এই নতুন বিধান জালিয়াতি এবং অবৈধ দখলদারিত্ব ঠেকাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাল খতিয়ান বা মিথ্যা দলিল ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তির জমি দখল করা আর সম্ভব হবে না।

যেমন, বেআইনিভাবে খাস জমি দখল করে ভুয়া দলিল প্রস্তুত করা হলে, তা অবিলম্বে বাতিল বলে গণ্য হবে। একইভাবে, উত্তরাধিকারীগণের অধিকার বঞ্চিত করে কোনো সম্পত্তি বিক্রি করা হলেও সেই দলিলও আইনি সমর্থন পাবে না।

জালিয়াতির শাস্তি: দ্রুত বিচার ও মোটা অঙ্কের জরিমানা

দলিল জালিয়াতি ও অবৈধ দখলদারিত্বের মতো অপরাধ দমনে নতুন আইনে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ব্যবহার করার বিধান রাখা হয়েছে। এই গুরুতর অপরাধগুলির জন্য শাস্তির মাত্রা হলো:

কারাদণ্ড: সর্বনিম্ন তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত।

আর্থিক জরিমানা: সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

সরকার আশা করছে, এই প্রস্তাবিত আইন দুটির বাস্তবায়ন জমির স্বচ্ছ মালিকানা নিশ্চিতকরণে এবং নাগরিকের সম্পত্তির অধিকার সুরক্ষিত করতে সহায়ক হবে। এর ফলে জমি সংক্রান্ত প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনা কার্যত শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

ফরচুন সুজের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

ফরচুন সুজের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফরচুন সুজ লিমিটেড তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০ জুন, ২০২৫ সমাপ্ত হিসাবকালের লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ... বিস্তারিত