ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

৯ ব্যাটসম্যান পারেনি ডাবল ফিগারে যেতে, ফলোয়নে বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২২ জানুয়ারি ১০ ১২:০৪:৪৪
৯ ব্যাটসম্যান পারেনি ডাবল ফিগারে যেতে, ফলোয়নে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ভাঙে বাংলাদেশের শুরুর জুটি। ট্রেন্ট বোল্টের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে দ্বিতীয় স্লিপে টম ল্যাথামের হাতে ধরা পড়েন সাদমান।

মোহাম্মদ নাঈম শেখের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়াই ছিল বিস্ময়কর। মাহমুদুল হাসান জয়ের চোটে শেষ পর্যন্ত টেস্টও খেলে ফেললেন বাহাতি এই ওপেনার। তবে শুরুটা হলো ভীষণ বাজে। বাংলাদেশের তৃতীয় ওপেনার হিসেবে অভিষেকে আউট হলেন শূন্য রানে।

সাদমানের মতো তিনিও আউট হন অনায়াসে ছেড়ে দেওয়া যেত এমন বলে। টিম সাউদির বাড়তি লাফানো বল ডিফেন্স করার চেষ্টায় টেনে আনেন স্টাম্পে। তাতে নাঈমকে টেস্ট দলে নেওয়ার প্রশ্ন উচ্চকিত হলো আরও।

আস্থার সঙ্গেই খেলছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বোল্টকে সামলাচ্ছিলেন ঠিকঠাক। কিন্তু বাঁহাতি পেসারের চমৎকার এক ডেলিভারিতে লেট সুইং ঠিক মতো সামলাতে না পেরে ধরা পড়েন দ্বিতীয় স্লিপে।

প্রথম সাত বল ডট খেলা মুমিনুল হক ফ্লিক করে খুলতে চেয়েছিলেন রানের খাতা। পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক, সাউদির বল এলোমেলো করে দেন স্টাম্প।

১১ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে লিটন ও ইয়াসিরের ব্যাটে। চা-বিরতির আগের সময়টুকু নিরাপদেই কাটিয়ে দেন এই দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

মাত্র ৬.১ ওভারে প্রথম চার ব্যাটারের উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় সেশনের বাকি ৪.৫ ওভারে ১৬ রান যোগ করেছিলেন লিটন ও ইয়াসির। কিন্তু শেষ সেশনে খেলতে নেমে ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই কট বিহাইন্ড হয়েছেন লিটন।

আউট হওয়ার আগে ১৮ বল থেকে ৮ রান করতে পেরেছেন লিটন। মাত্র ২৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অকূল পাথারে বাংলাদেশ দল।

তবে সেখান থেকে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন ইয়াসির ও সোহান। দুজন মিলে দেখেশুনে খেলতে থাকেন ট্রেন্ট বোল্ট, নেইল ওয়াগনার, টিম সাউদিদের একের পর এক ওভার।

লেগ স্ট্যাম্পের ওপর খাটো লেন্থের ডেলিভারি পেলে পুল কিংবা অফস্ট্যাম্পের বাইরে ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে ড্রাইভ খেলতে দ্বিধা করেননি সোহান। ইয়াসিরও খেলেন দৃষ্টিনন্দন কিছু শট। যার সুবাদে ইনিংসের ২৭তম ওভারে পূরণ হয় তাদের ৫০ রানের জুটি।

মনে হচ্ছিল, ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি তুলে নেবেন সোহান। কিন্তু সাউদির বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে তার ইনিংস থেমে যায় ৪১ রানে। লেগ বিফোরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন সোহান। কিন্তু আম্পায়ারস কলের কারণে বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় তার।

এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি প্রথম ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করা মেহেদি হাসান মিরাজও। ইয়াসির রাব্বির সঙ্গে ৯.৪ ওভারের জুটিতে ২২ রান যোগ করেন বোল্টের ৩০০তম টেস্ট উইকেটে পরিণত হন ৫ রান করা মিরাজ। তার বিদায়ে ফলো-অনের শঙ্কা আরও চেপে বসে বাংলাদেশের ওপর।

এর মাঝেই নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন ইয়াসির রাব্বি। ছয় নম্বরে নেমে সাত চারের মারে ৮৫ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। তবে তার ফিফটি হওয়ার আগের বলেই অষ্টম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন ২ রান করা তাসকিন আহমেদ।

এরপর আর বেশি কিছু বাকি ছিল না বাংলাদেশের ইনিংসের। ৪১তম ওভারের তৃতীয় বলে জেমিসনের বাউন্সারে হাতে ব্যথা পান ইয়াসির। ঠিক পরের বলেই আরেকটি বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ড্যারেল মিচেলের হাতে। ইয়াসির করেন ৯৫ বলে ৫৫ রান।

পরের ওভারে বাংলাদেশকে অলআউট করার বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন বোল্ট। শরিফুল ইসলামকে বোল্ড করে ক্যারিয়ারে নবমবারের মতো ফাইফার তুলে নেন নিউজিল্যান্ডের চতুর্থ বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেওয়া বোল্ট। এছাড়া সাউদি তিনটি ও জেমিসনের শিকার দুই উইকেট।

এর আগে ১ উইকেটে ৩৪৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউ জিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ৫২১ রানে। এতে সবচেয়ে বড় অবদান টম ল্যাথামের। ২৫২ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

দিনের প্রথম বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ৯৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ডেভন কনওয়ে। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে যেতে পারেননি বেশিদূর, থামেন রান আউট হয়ে।

দর্শকদের তুমুল করতালি এবং বাংলাদেশ দলের গার্ড অব অনারের মধ্য দিয়ে ক্রিজে যাওয়া রস টেইলর থিতু হয়েও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। বিদায়ী টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ২৮। হেনরি নিকোলস ও ড্যারিল মিচেল ফিরেন দ্রুত।

দ্বিতীয় সেশনে ওয়ানডে ঘরানার গতিতে ১৬.১ ওভারে ৯৮ রান যোগ করে নিউ জিল্যান্ড। পঞ্চাশ ছুঁয়ে অপরাজিত থাকেন কিপার-ব্যাটসম্যান টম ব্লান্ডেল।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ