সাকিব-মিরাজ না থাকায় বিপদে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট

বিশ্ব ক্রিকেটেই বিরল ‘জেনুইন’ অলরাউন্ডারদের একজন সাকিব। তিনি না খেললে একাদশের সমন্বয়ে বড় গড়বড় হয় বরাবরই। তবে তাকে না পাওয়া এখন আর নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ছাড়া একাদশ গড়ার একটি ধরনে মোটামুটি অভ্যস্তও হতে শুরু করেছে দল। কিন্তু এবার সাকিবের আগেই চোটের কারণে ছিটকে গেছেন মিরাজ। কোভিডের কারণে সাকিবকে হারানোর ধাক্কাটা তাই একটু তীব্রভাবেই আঘাত করবে একাদশের পরিকল্পনায়।
ব্যাটিং নিয়ে ক্যারিয়ারের শুরুর কয়েক বছরের হতাশা সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটাই ভুলিয়ে দিতে শুরু করেছিলেন মিরাজ। বোলিংয়ের দারুণ উন্নতির পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ছিলেন ধারাবাহিক। সাকিবের শূন্যতা কিছুটা হলেও পূরণ করা, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের দিনগুলির মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ‘জেনুইন’ অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার পথে এগিয়ে যাওয়া, সবকিছুর ছাপ ছিল তার পারফরম্যান্সে। কিন্তু আঙুলের চোটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টই শুধু নয়, দ্বিতীয় টেস্টেও তাকে পাওয়া নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা।
দুজনের একজন থাকলেও সহজ হতো একাদশ গোছানো। দুজনের কেউ না থাকায় পরিস্থিতি হয়ে গেছে পুরো জটিল।
দুজনকেই পেলে ৫ বোলার নিয়ে মাঠে নামার সম্ভাবনা ছিল প্রবলভাবেই। এখন সেই সম্ভাবনা শেষ নিশ্চিতভাবেই, চার বোলার খেলানোর নানা সমীকরণ ভাবতে হচ্ছে দলকে।
সেই অনিশ্চয়তা ফুটে উঠল নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কণ্ঠে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন,
মিরাজ-সাকিবের অনুপস্থিতিতে স্পিন আক্রমণ সামলাতে হবে তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানকে। ফাইল ছবি।মিরাজ-সাকিবের অনুপস্থিতিতে স্পিন আক্রমণ সামলাতে হবে তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানকে। ফাইল ছবি।“মিরাজ ছিটকে যাওয়ার পরই অনেক কিছু ভাবতে হয়েছে আমাদের। খুব ভালো ফর্মে ছিল, দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে ও। ওকে হারানোটা বড় ধাক্কা ছিল এমনিতেই। এখনও সাকিবও না থাকায় নিশ্চিতভাবেই অনেক সমীকরণ বদলে যাচ্ছে। শুধু একাদশ বাছাই নয়, পুরো পরিকল্পনাই এখন নতুন করে সাজাতে হবে।”
“সাকিব যখন খেলে, দলীয় পরিকল্পনার বড় অংশ জুড়ে থাকে সে। প্রতিপক্ষও এরকম ক্রিকেটারদের নিয়ে বাড়তি ভাবনায় ব্যস্ত থাকে। এখনও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা হয়নি আমাদের (নির্বাচকদের), আমরা ১৩ মে যাব চট্টগ্রাম। তখন কথা হবে। তবে যেটা বললাম, সাকিব ও মিরাজের মতো দুজন অলরাউন্ডার না থাকা মানে পরিকল্পনা অনেক বদলে যাবে নিশ্চিতভাবেই।” টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার অপেক্ষায় আছেন আরেক নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকও। তবে খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই তার চিন্তা-ভাবনা বরাবরই ইতিবাচক। সাকিব-মিরাজের শূন্যতায়ও তিনি গ্লাসের খালি অংশে নয়, তাকিয়ে আছেন ভরা অংশে।
“সাকিব থাকলে একসঙ্গে দুজন ক্রিকেটারকে পাই আমরা। মিরাজও গত কিছুদিনে ব্যাটে-বলে খুব ভালো করছে। ওদেরকে না পাওয়া যে আমাদের জন্য বড় আঘাত, এটা বলতে তো আর নির্বাচক হতে হয় না। সবাই বুঝতে পারেন। তবে কিছু একটা পথ তো বের করতেই হবে। ওরা নেই মানেই সব শেষ নয়।”
“আমি এটা কখনোই বলব না যে, ওদের জায়গায় যারা খেলবে, তারা কিছু করতে পারবে না। বরং তাদের জন্য এটা হবে বড় সুযোগ। ওদেরকে যদি আমরা এই বিশ্বাস জোগাতে পারি যে ওরাও দলের অংশ এবং ম্যাচ জেতাতে পারে, তাহলে কিন্তু ওরা অনুপ্রাণিত হবে। এখানে কোচ-অধিনায়ক, আমরা, এমনকি মিডিয়া, সবার দায়িত্ব আছে। সবাই ইতিবাচক থাকলে ওই ছেলেরা অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদেরও ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
মিরাজ না থাকায় দলে ডাক পেয়েছেন নাঈম হাসান। এই অফ স্পিনারের খেলার সম্ভাবনাও এখন প্রবল। পাশাপাশি এখন সমীকরণে চলে আসছেন মোসাদ্দেক হোসেনও। শুরুতে ঘোষিত দলে না থাকলেও পরে যোগ করা হয় তাকে। সাকিব না থাকায় মোসাদ্দেকের সামনে থাকছে একাদশের হাতছানি। স্কোয়াডে অলরাউন্ডার বলতে কেবল তিনিই যে আছেন।
হাবিবুল বাশারও সেটি উল্লেখ করলেন। পাশাপাশি তার বাড়তি চাওয়া থাকছে নাঈমের কাছেও।
“যদিও একাদশের আলোচনা হবে আরও পরে, তবে মোসাদ্দেক বিবেচনায় থাকবে নিশ্চিতভাবেই। অলরাউন্ডার বলেই সে খেলে ফেলবে ম্যাচ, তা বলছি না। তবে আলোচনা হবে তাকে নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো ব্যাটসম্যান একজনকে বাইরে রাখতে হবে। সেখানেও অনেক কিছু ভাবার আছে। কারণ ৫ ব্যাটসম্যান আর ৫ বোলার খেলানোর মতো অবস্থায় আমরা এখনও নেই। ব্যাটিংয়ে শক্তি কমানো যাবে না, খেয়াল রাখতে হবে যেন বোলিংও খুব হালকা না হয়। যতটা ধারণা করতে পারি, সাত নম্বর পজিশন নিয়েই মূল আলোচনা করতে হবে।”
“একাদশ শেষ পর্যন্ত যেমনই হোক, নিচের দিকে ব্যাটিংয়ে অবদান রাখতে হবে। মিরাজ নেই, তাসকিন থাকলেও কিছু রান আশা করি, ওরা নেই… নাঈম যদি খেলে, তাকে ভুমিকা রাখতে হবে ব্যাটিংয়ে। তাইজুল তো আছেই। অনেক কিছুই ভাবার আছে, সামনের কদিনে নিশ্চয়ই সব বিকল্প নিয়েই আলোচনা হবে।”
মোসাদ্দেক অলরাউন্ডার হলেও সাকিব ও মিরাজের সঙ্গে একটি পার্থক্য হলো, তারা দুজনই স্পেশালিস্ট বোলারও। মোসাদ্দেক সেখানে আগে ব্যাটসম্যান। তার বোলিং সীমিত ওভারে বেশ কার্যকর হলেও টেস্টে তাকে বোলার হিসেবে বিবেচনা করার জো নেই।
অতীতে অবশ্য নিরাপদ পথে হেঁটে ব্যাটসম্যানে ঠাসা একাদশ গড়ার নজির বাংলাদেশের অনেক আছে। এবারও জয়ের পথে ঝুঁকি নেওয়ার চেয়ে ড্রয়ের পথে নিরাপদ ভাবনা টিম ম্যানেজমেন্টের থাকতে পারে।
সব মিলিয়ে আগামী কয়েকদিন সাকিব-মিরাজের শূন্যতা পূরণের ভাবনায় গলদঘর্ম হতে হবে টিম ম্যানেজমেন্ট। অলরাউন্ডারদের মাহাত্মই এমন!
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ 2025 : বাংলাদেশের চুড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি