ঢাকা, শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

তামিমের সিদ্ধান্তে যে কারণে পাশে আছে সাবেক অধিনায়ক

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৩ জুলাই ০৬ ২০:৪৮:০০
তামিমের সিদ্ধান্তে যে কারণে পাশে আছে সাবেক অধিনায়ক

আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভারতের মাটিতে পর্দা উঠবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর তিন মাস আগে হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুরে নিজ শহর চট্টগ্রামের হোটেল টাওয়ার ইনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে অশ্রুসিক্ত হয়ে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। এ সময় নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারেনি ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

তামিমের বিদায়ের ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদায়ী শুভেচ্ছা ও আবেগঘন বার্তা জানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশের আপামর ক্রিকেট ভক্তরা। এমনকি সাবেক থেকে বর্তমান অনেক ক্রিকেটার ড্যাশিং এই ওপেনারের ক্রিকেটীয় অবদান নিয়ে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।

তবে সিনিয়র সতীর্থদের কারও মন্তব্যের দেখা মিলছিল না। অবশেষে পুরনো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে তামিমকে নিয়ে লম্বা একটি বার্তা দিয়েছেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। তামিমের অবসরকে ‌‘কিংবদন্তির বিদায়’ উল্লেখ করেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।

ফেসবুকে পোস্টে আবেগাপ্লুত মাশরাফী লেখেন, ‘তামিম, তোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই একান্তই তোর। এটা কারও ভালো লাগলেও তোর, ভালো না লাগলেও তোর। পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথাই হবে। তবে সবচেয়ে ভালো কোনটা, সেটা তুই ছাড়া কেউই ভালো বুঝবে না। তাই তোর এই সিদ্ধান্তকে আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ সম্মান জানাই।

তবে কিছু কথা জানতে মন চায়, মাত্র ৩৪ বছর ১০৮ দিনেই বিদায় কেন! আসলেই কি চালিয়ে যেতে পারছিস না? না কি কোনও চাপ তোকে বাধ্য করেছে! তোর অনেক ভক্ত হয়তো খুঁজে ফিরবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। আজ খুঁজবে, এমনকি ভবিষ্যতেও আরও অনেকদিন খুঁজবে।’

এরপর তামিমের ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করেছেন মাশরাফী, ‘তোকে প্রথম দেখেছি চট্টগ্রামে তোদের বাসায়, হাফ প্যান্ট পরে খেলছিলি। তোর ভাই, আমার বন্ধু নাফিস ইকবাল তোকে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। পরের বার দেখলাম জাতীয় লীগে ওপেন করতে, খুলনার মাঠে। তারপর ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে একসঙ্গে পথ চলতে চলতে তুই হয়ে গেলি বন্ধুর মতো। কত দিন কত রাত এক সঙ্গে সময় কাটিয়েছি, একসঙ্গে খেতে যাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, দুষ্টুমি, মজা, তর্ক, খেলা নিয়ে কত কত আলোচনা করেছি, সেসবের কোনও হদিস নেই।

যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলাম, তখন তুই ছিলি আমার অন্যতম ‘স্নাইপার।’ সেটা তুই নিজেও খুব ভালো করেই জানিস।’

‘যেদিন দল থেকে বের হয়ে এলাম, সেদিন তুই আমাকে কাঁধে তুলে নিয়েছিলি। পরে সারারাত একসঙ্গে আড্ডা দিয়েছিলাম। যেকোনো সিরিজ বা সফরে তুই ছিলি আমার রুমে আড্ডার অবধারিত সঙ্গী। আরও কত শত স্মৃতি এখন মনে পড়ছে! তোকে যতটুকু চিনি, তাতে তোর এই সিদ্ধান্তকে আমি অনায়াসে পোস্টমর্টেম করতে পারতাম। কিন্তু তা করব না, কারণ ওই যে, তোর নিজস্ব সিদ্ধান্তকে অবশ্যই সম্মান জানানো উচিত। তোর মানসিক অবস্থা আমি বুঝতে পারছি, সেই সঙ্গে এটাও বলছি যে, তুই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে যা কিছু দিয়েছিস, তা আমরা আজীবন মনে রাখব। একজন তামিম হয়ে উঠতে কতটা পরিশ্রম, কতটা সময়, কতটা মেধা আর কত ত্যাগ থাকতে হয়, তা সময় সব কিছুবুঝিয়ে দেবে।’

‘তোর প্রতি রইল অফুরন্ত ভালোবাসা। পরবর্তী জীবন পরিবার নিয়ে দারুণ কাটাবি, সেই আশাই করছি। আর একটা কথা, দলের ভেতর নানা পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষণ নির্ভর আলোচনা এখন কে করবে, ঠিক জানি না। হয়তো কেউ করবে। তবে তুই এই জায়গায় সবসময়ই থাকবি সেরাদের সেরা।’

শেষ পর্যায়ে তামিমকে শুভকামনা জানিয়েছেন ম্যাশ। একইসঙ্গে বাংলাদেশ যে তাকে ছাড়াও এগিয়ে যেতে পারে যেন সেটাই মনে করিয়ে দিলেন আরেকবার, ‘গুড বাই মি. তামিম ইকবাল খান। একজন কিংবদন্তির বিদায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভ কামনা, এগিয়ে চলুক দুর্বার গতিতে। আমাদের এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।’

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ