রমজানে খেজুর দিয়ে ইফতার: ঐতিহ্য, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাস এলেই ইফতার পর্ব হয়ে ওঠে এক বিশেষ মুহূর্ত, যেখানে খাবারের তালিকায় খেজুরের অবস্থান থাকে শীর্ষে। যুগের পর যুগ ধরে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙার এই রীতি অনুসরণ করছেন। কিন্তু কেন খেজুরকে ইফতারের জন্য এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়? চলুন, খেজুরের ধর্মীয়, ঐতিহ্যগত এবং স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব সম্পর্কে জানা যাক।
খেজুর: একটি সুন্নত এবং ঐতিহ্য
ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করতেন। তাঁর এই অভ্যাস অনুসরণ করাই মুসলমানদের জন্য সুন্নত হিসেবে পরিগণিত হয়। হাদিসে এসেছে, “তোমাদের কেউ রোজা রাখলে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না থাকলে পানি দিয়ে; নিশ্চয়ই পানি পবিত্র।” (তিরমিজি, আবু দাউদ)
এই ঐতিহ্য শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি স্বাস্থ্যগত কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসজুড়ে মুসলমানরা খেজুর দিয়ে ইফতার করার মাধ্যমে এই সুন্নত রক্ষা করে আসছেন।
খেজুরের পুষ্টিগুণ ও তাৎপর্য
খেজুর শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং পুষ্টিগত দিক থেকেও এটি অত্যন্ত উপকারী। দিনের দীর্ঘ উপবাসের পর শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার ও পানিশূন্যতা পূরণে খেজুর অনন্য।
তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদানকারী
খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক চিনি—গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ—তাত্ক্ষণিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ক্লান্ত শরীরকে দ্রুত চাঙা করে।
পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক
দিনভর না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। খেজুরে থাকা জলীয় উপাদান শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
সহজে হজমযোগ্য
সারাদিন রোজা রাখার পর খালি পেটে ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। খেজুর সহজে পরিপাকযোগ্য হওয়ায় এটি হজমতন্ত্রের জন্য আদর্শ।
পরিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে
খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক গুণ
খেজুরে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী উপাদান, যা শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বিশ্বজুড়ে খেজুরের জনপ্রিয়তা
খেজুর মূলত মরু অঞ্চলের ফল, বিশেষত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মধ্যপ্রাচ্যে এটি ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়। আরব সংস্কৃতিতে এটি আতিথেয়তার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন স্বাদ ও রঙের খেজুর পাওয়া যায়, যা ইফতারকে আরও বিশেষ করে তোলে।
খেজুর না থাকলে?
যদি খেজুর পাওয়া না যায়, তবে অন্য কোনো হালাল খাবার বা শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। তবে নবী (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করতে চাইলে খেজুরই শ্রেষ্ঠ বিকল্প।
খেজুর দিয়ে ইফতার করা শুধুই ধর্মীয় অনুশাসন নয়, এটি পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিক চিনি, পানিশূন্যতা পূরণ, সহজ হজম, ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এটি এক অনন্য খাবার। তাই রমজান মাসে খেজুর ছাড়া ইফতার যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়।
আব্দুর রহিম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬৪% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- নকল অ্যাপ, ভুয়া ব্রোকারেজ: শেয়ারবাজারের বড় প্রতারণা উন্মোচন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা: ৩,০০০ সদস্যের প্রতারক চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- শেয়ার কারসাজি: বিএসইসি’র কড়া তদন্তের নির্দেশ, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক
- শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?
- বিনিয়োগকারীদের চিন্তা দুর করলো ৯ কোম্পানির শেয়ার
- ২,৩০০ কোটি টাকার বন্ডে শেয়ারবাজারে আলোড়ন: বিএসইসি'র অনুমোদন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলো ৮ কোম্পানি
- পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর: নতুন পে-স্কেল, কার কত বেতন বাড়বে
- রেকর্ড চাহিদা: বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ২৪ কোম্পানির শেয়ার
- পুঁজি সংগ্রহে ব্যর্থ শেয়ারবাজার: দায়ী কারা? ফাঁস করলেন বিশেষজ্ঞরা
- ইন্টার মায়ামি বনাম শিকাগো ফায়ার: শেষ ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ
- আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ৪ পরিবর্তন
- সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা নিয়মে যুগান্তকারী পরিবর্তন