ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অপারেশন সিঁদুর: বলিউড তারকাদের প্রতিক্রিয়ায় মুখর ভারত

বিনোদন ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ০৭ ১২:১২:২৪
অপারেশন সিঁদুর: বলিউড তারকাদের প্রতিক্রিয়ায় মুখর ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাশ্মীরের মনোমুগ্ধকর পেহেলগাম যেন আচমকা রূপ নিল রক্তাক্ত প্রান্তরে। শান্তিপূর্ণ এই পর্যটনকেন্দ্র হঠাৎই কেঁপে উঠলো বন্দুকধারীদের বেপরোয়া হামলায়। ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বহুদিনের চাপা উত্তেজনা আবারও তীব্র রূপ ধারণ করলো। কূটনৈতিক বিবৃতি, সীমান্তে সেনা মোতায়েন, একে অপরকে হুঁশিয়ারি—এসব ছাড়িয়ে এবার পরিস্থিতি গড়ালো সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে।

ভারত মধ্যরাতে চালায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান—যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালানো হয় একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী, অন্তত ২৪টি পৃথক স্থানে আঘাত হানে এই অভিযানের ক্ষেপণাস্ত্র। এতে অন্তত ৮ জন নিহত ও ৩৫ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির, অস্ত্র মজুদের স্থান এবং যোগাযোগ কেন্দ্র।

এই অভিযানের পর পাকিস্তানও চুপ করে থাকেনি। পাল্টা হামলা চালানো হয় ভারত-শাসিত কাশ্মীরের ভিম্বর গলি এলাকায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, তারা গোলা নিক্ষেপ করেছে ভারতের বিভিন্ন সামরিক চৌকিতে। স্থানীয়রা জানান, মেন্ধার এলাকার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এই ঘটনায় তিন ভারতীয় নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

যখন দুই দেশের সীমান্তে বারুদের গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস, তখন ভারতীয় শোবিজ অঙ্গনে চলছে উল্টো সুর—সেনাবাহিনীর প্রশংসায় মুখর হয়ে উঠেছেন একের পর এক তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেন উঠেছে বিজয়ের ঢোল।

বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার লেখেন, “জয় হিন্দু, জয় মহাকাল। আমাদের সেনারা যেভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন, তা গর্বের বিষয়।”অভিনেতা রীতেশ দেশমুখ বলেন, “জয় হিন্দি কী সেনা। ভারত মাতা কী জয়।”

পরিচালক মধুর ভান্ডারকর লেখেন, “ভারতীয় সেনাদের জন্য একমনে প্রার্থনা করছি। গোটা দেশ একসাথে এক সারিতে দাঁড়িয়ে আছে। বন্দে মাতরম।”‘এয়ারলিফট’ খ্যাত অভিনেত্রী নিমরত কৌর একটি প্রতীকী ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “এক দেশ, এক মিশন।”

অভিনেতা অনুপম খের সংক্ষেপে লেখেন, “ভারত মাতার জয়।”

এছাড়া বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা পরেশ রাওয়াল, দক্ষিণী সুপারস্টার চিরঞ্জীবীসহ আরও অনেকে সেনাবাহিনীর পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। যুদ্ধাবস্থার এই পরিস্থিতিতে তারকাদের এমন প্রকাশ্য সমর্থন অনেককে উৎসাহিত করলেও কেউ কেউ বলছেন, এ ধরনের মন্তব্য আরও উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন সংঘাত শুধু উপমহাদেশ নয়, গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের কারণ। যদিও ভারতের তরফে বলা হচ্ছে এটি সুনির্দিষ্ট জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো প্রতিরক্ষামূলক আঘাত, তবে পাকিস্তান বলছে এটি তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

যুদ্ধের ময়দানে যখন কামানের গর্জন, তখন টেলিভিশনের পর্দা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে জাতীয়তাবাদের জোয়ার। তারকাদের কণ্ঠে উঠছে সেনার গুণগান, আর সাধারণ মানুষের হৃদয়ে চলছে গর্ব আর আশঙ্কার দোলাচল।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই—এ কি কেবল প্রতিশোধের অগ্নিশিখা, নাকি আরও ভয়ংকর যুদ্ধের আগুনের সূচনা?

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ