শেয়ারবাজারে অনিয়ম ঠেকাতে ৬১৭টি বিও হিসাব স্থগিত

দুর্নীতি, কারসাজি ও সন্দেহজনক লেনদেনের বিরুদ্ধে বিএসইসির শৃঙ্খলা কার্যক্রম
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ও বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ৬১৭টি বেনিফিশারি ওনার্স (বিও) হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এসব হিসাব বিগত আট মাসেরও বেশি সময় ধরে স্থগিত রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভাষ্য, শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বাজারগত ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত বিও হিসাবের মোট সংখ্যা ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৩৭৬টি। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে বাজারে অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রবণতা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব বিবেচনায় রেখে কিছু হিসাবকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে পর্যবেক্ষণে আনা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে এসব হিসাবের মধ্যে অনিয়ম, দুর্নীতি, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং বাজার কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট হিসাবগুলোর লেনদেন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
৩০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, ৬১৭টি স্থগিত হিসাবের মধ্যে ৩৫৭টি বন্ধ করা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আদালতের অনুরোধে। অবশিষ্ট হিসাবগুলো বিএসইসির অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার আবেদনের ভিত্তিতে স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১০৯টি বিও হিসাব সরাসরি শেয়ার কারসাজি ও লেনদেনসংক্রান্ত অনিয়মে জড়িত ছিল। এসব হিসাবে লেনদেনের মাধ্যমে বাজারকে প্রভাবিত করার প্রমাণ পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানাও আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া ছয়টি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির নিজস্ব বিও হিসাবও অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত রয়েছে।
একই সঙ্গে কমিশন ৩৩ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিও হিসাব স্থগিত করেছে, যাদের বিরুদ্ধে বাজার থেকে অস্বাভাবিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের হিসাবসহ মোট ১২৭টি বিও অ্যাকাউন্ট এই পর্যায়ে স্থগিত রাখা হয়েছে।
বর্তমানে স্থগিত হিসাবগুলো কবে পুনরায় সচল হবে—তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নির্ধারিত হয়নি। তবে কমিশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি হিসাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। যেসব হিসাব নির্দোষ প্রমাণিত হবে, সেগুলোর লেনদেন কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই উদ্যোগকে অর্থনীতিবিদরা বাজারে নৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার একটি কাঠামোগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং বাজারকে বাজার অর্থনীতির নীতিমালার অধীনে পরিচালিত রাখতে এ ধরনের কার্যক্রম অপরিহার্য।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি
- এশিয়া কাপ 2025 : বাংলাদেশের চুড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি