সরকারকে কড়া বার্তা দিল বিএনপি, তবে থেমে নেই অন্তর্বর্তী সরকারও

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশ যখন রাজনৈতিক অস্থিরতার হালকা ঝাঁকুনিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন মোড় নিচ্ছে, ঠিক তখনই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ২৯তম বৈঠক হয়ে উঠল এক দৃঢ় বার্তার ক্ষেত্র। বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভা শেষে ঘোষিত সিদ্ধান্তগুলো যেমন প্রশাসনিক স্তরে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, তেমনি এর প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনেও।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শহীদদের স্বীকৃতি পেল রাষ্ট্রীয় কাঠামোয়
বৈঠকের অন্যতম আলোচিত সিদ্ধান্ত ছিল ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান শহীদ পরিবার পুনর্বাসন ও কল্যাণ অধ্যাদেশ, ২০২৫’। গত বছরের উত্তাল জুলাই মাসে যেসব মানুষ রাজপথে জীবন দিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, এবার তাঁদের জন্যই এগিয়ে এল রাষ্ট্র। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শহীদ ও আহতদের পরিবারকে দেওয়া হবে আর্থিক সহায়তা, পুনর্বাসন সুবিধা এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক সহায়তা।
এ সিদ্ধান্তে অনেকে দেখছেন সরকারের দায়িত্বশীল মনোভাব; আবার সমালোচকদের মতে, এটি ‘রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দায় স্বীকার’– যা রাজনৈতিকভাবে এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি।
চাকরির নিরাপত্তায় বড় ধাক্কা?
‘গণঅভ্যুত্থান অধ্যাদেশ’ যতটা সহানুভূতির প্রতীক, ততটাই কঠোর বার্তা বহন করছে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’। এতে বলা হয়েছে— “দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন ঘটানো কোনো কর্মচারীকে তদন্ত ছাড়াই মাত্র আট দিনের নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে।” সরকার বলছে, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এটি জরুরি পদক্ষেপ। তবে আমলাতন্ত্রের অভ্যন্তরে গুঞ্জন উঠেছে— এ ধরনের ক্ষমতা কর্মীদের ন্যায্য অধিকার খর্ব করতে পারে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব এই প্রসঙ্গে বলেন, “শৃঙ্খলা দরকার, সন্দেহ নেই। কিন্তু তা যেন হয় সুবিচারের আলোয়, হঠাৎ ছায়াঘেরা কোনো প্রজ্ঞাপন দিয়ে নয়।”
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সক্রিয় ঢাকা
বৈঠকে আরও যে দুটি সিদ্ধান্ত এসেছে, তা আন্তর্জাতিক কূটনীতির আঙিনায় বাংলাদেশের সক্রিয় অবস্থানকে তুলে ধরছে। এর একটি হলো বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস সরকারের মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি, যা বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
অন্যটি হলো সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত—যা অর্থনীতি, প্রশাসন ও সেবাদান কাঠামোয় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
বিএনপির পাল্টা বার্তা: ‘অধ্যাদেশ নয়, অপচেষ্টা চলছে’
সরকারি সিদ্ধান্তগুলোর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব বলেন, “সরকার প্রশাসনকে ভয় দেখিয়ে দমন করতে চায়। গণঅভ্যুত্থান শহীদদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন করে তারা নিজের দোষ ঢাকতে চাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার একটি নিঃস্ব ও দুর্বল প্রশাসন তৈরি করতে চায়, যারা জনগণের নয়, কেবল ক্ষমতাসীনদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্তগুলো নিছক অধ্যাদেশ নয়—এগুলো একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি। যেখানে একদিকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উত্তপ্ত, অন্যদিকে প্রশাসনিক ভারসাম্য রক্ষায় সরকারের কঠোর কৌশল। মাঠে নামছে নতুন নিয়ম, তার জবাবে জেগে উঠছে বিরোধীরা। এই দ্বন্দ্বের ভেতর দিয়েই ধীরে ধীরে সামনে এগোচ্ছে বাংলাদেশ—নির্বাচনের অপেক্ষায়, জনগণের রায়ের অপেক্ষায়।
আল-আমিন ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- এসএসসি-এইচএসসির বোর্ডসেরা শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার
- ইরান-যুক্তরাষ্ট্র শান্তির আলোয় তেলের দর ৪% কমেছে
- সোনার বাজারে ঝড়! দাম পড়ে যেতে পারে ৮৫ হাজারে
- বিএনপির ৪ নেতার পদত্যাগ: সামনে এলো আসল কারণ
- ফুটবলে বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস: ২৮-০ গোলের বড় জয় দেখল বিশ্ব
- মুস্তাফিজকে পরের ম্যাচে রাখার কারণ জানালেন দিল্লি অধিনায়ক
- ডিএসই সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- শেয়ারবাজার নিয়ে খেলা বন্ধে কঠোর শাস্তির দাবি
- গুজরাটের বড় জয়, দিল্লির অধিনায়কের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া
- দেশের সোনার বাজার অস্থির: ১৮, ২১, ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- দিল্লি ক্যাপিটালস ও গুজরাট টাইটানস: টস শেষ, জানুন একাদশে মুস্তাফিজের অবস্থান
- শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরাতে পাঁচ সদস্যের দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চাই
- মুস্তাফিজকে এক সঙ্গে সুসংবাদ ও দু:সংবাদ দুটোই দিল বিসিবি
- ম্যাচ হেরে আইপিএল থেকে বিদায়, ফাফ ডু প্লেসিসের কড়া মন্তব্য
- একলাফে কমলো সোনার দাম, আজ ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম