শেয়ারবাজারের পতন থেকে উত্তরণ: বিশেষজ্ঞদের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারের গতিপথ যেন আটকে গেছে এক গভীর কুয়োতে — ১৬ বছর ধরে ধারাবাহিক অবহেলা, অপশাসন এবং রাজনৈতিক প্রভাবের ছায়ায়। বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন আর প্রত্যাশা আজ প্রায় ম্লান, আস্থা হারিয়েছে তারা। দীর্ঘকালীন এই সংকটের পেছনে যে কারণগুলো প্রভাব ফেলেছে, তা স্পষ্ট — অব্যবস্থাপনা, দূরদর্শিতার অভাব এবং বাজারে সুশাসনের ঘাটতি।
১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজারের দুটি বড় ধ্বস যেন দুইবার আঘাত করেছে দেশের আর্থিক জীবনের কাঁধে। দুই বিপর্যয়ের মাঝে বিনিয়োগকারীরা গুনেছে ক্ষতির প্যাঁচানো হিসেব। এসব দুর্যোগের পেছনে ছিল সরকারের আশ্রয়ে প্রভাবশালী কিছু মহলের কোটি কোটি টাকার আত্মসাৎ এবং ভঙ্গুর কোম্পানির তালিকাভুক্তি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে করুণভাবে কেঁপে তুলেছে।
তবে চলতি বছরের ৫ আগস্ট নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর অন্ধকারের ফাঁকে দেখা দেয় এক নতুন রোশনাই। মাত্র তিন দিনে সূচক বেড়ে যায় এক হাজার পয়েন্টের বেশি। কিন্তু সেই উত্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, বরং ১৫১ দিনের ব্যবধানে সূচক আবারও হাজারের বেশি কমে বিনিয়োগকারীদের হতাশার মাত্রা ছুঁয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধ্বস থেকে উত্তরণে দরকার সঠিক এবং দ্রুতগতির পদক্ষেপ। শুধু মনস্তাত্ত্বিক বা অর্থনৈতিক প্রণোদনা নয়, প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক নীতিগত সমর্থন, যা বাজারে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, “বাজারের প্রতি গত ১৫ বছরের অবিচার, দুঃশাসন ও অপশাসন থেকে মুক্ত করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন প্রধান লক্ষ্য।”
যদিও বাজার সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু টাস্কফোর্স গঠনের ৯ মাস পরেও মাত্র কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এই ধীরগতি বিনিয়োগকারীদের আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। সরকারের আশ্বাস অনুযায়ী, আগামী বাজেট ও দুই-তিন মাসের মধ্যে কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে, যা বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে।
প্রধান উপদেষ্টা’র বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানান, “বিভিন্ন সেক্টরাল রিপোর্ট একত্র করে একটি সামগ্রিক রূপরেখায় দ্রুত কার্যকর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। একসঙ্গে সব করা না গেলেও ধাপে ধাপে অগ্রগতি নিশ্চিত করা হবে।”
বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষ ও পেশাদারদের নিয়ে শক্তিশালী বিএসইসি গঠন, স্বল্পমেয়াদী প্রণোদনা ও দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সমর্থনের সমন্বয়, নতুন বিনিয়োগকারী আকর্ষণের জন্য বাজার বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থা অপরিহার্য।
যদিও শেয়ারবাজারের ভবিষ্যত এখনও ঝুঁকিপূর্ণ, তবে সঠিক সময়মতো গ্রহণ করা কার্যকর উদ্যোগই পারে এই আর্থিক মেরুদণ্ডকে শক্ত করে দাঁড় করাতে। অন্যথায় বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকবে, আর সম্ভাবনাময় শেয়ারবাজারের স্বপ্ন হারিয়ে যাবে অন্ধকারের আচ্ছাদনে। দেশের অর্থনীতির প্রাণ স্পন্দন রক্ষায় এখন সময় এসেছে করণীয় কাজ শুরু করার।
জামিরুল ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আইপিএলনিলাম: যাদের দলে জায়গা হলো তাসকিনের
- আজকের সোনার দাম: (বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫)
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: শেষ হলো ম্যাচ জানুন ফলাফল
- earthquake today : গভীর রাতে ৪.০ মাত্রার ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়?
- আইপিএলনিলাম শেষ,ডেভন কনওয়ে, জনি বেয়ারস্টোদের দলে রিশাদ
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: বোলিংয়ে বাংলাদেশ খেলাটি সরাসরি Live দেখুন এখানে
- আইপিএল নিলাম: যত টাকায় দল পেলেন সাকিব
- আজকের সোনার দাম: (বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫)
- লিভার নষ্টের প্রথম সংকেত ত্বকে! এই ৪টি লক্ষণ অবহেলা করবেন না
- সিঙ্গাপুরেচিকিৎসাধীন ওসমান হাদির সর্বশেষ অবস্থা
- রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে পে-স্কেল নিয়ে আসলো যেসব সিদ্ধান্ত
- ডিএসইর দুই নতুন পরিচালকের নাম ঘোষণা
- চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি Live দেখুন এখানে
- আজ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম কত
- বদহজম কেন হয়? লক্ষণ, লুকানো কারণ ও নিরাময়ের সহজ কৌশল