ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সংকটে টেক্সটাইল খাত, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৩ ১৭:২৭:০৯
সংকটে টেক্সটাইল খাত, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর রেয়াত সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তে গভীর সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী শিল্প খাত—টেক্সটাইল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঘোষিত নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, এই খাতের জন্য চলমান ১৫ শতাংশ কর রেয়াত সুবিধা আর নবায়ন করা হচ্ছে না।

ফলে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিগুলোর জন্য করহার বেড়ে দাঁড়াবে ২৭.৫ শতাংশ, যা পূর্বের তুলনায় প্রায় ৮৩ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) তথ্যমতে, দেশের ১,৮৫৪টি টেক্সটাইল কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৫৮টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। বাকিগুলোর ওপর সরাসরি এই বাড়তি করের বোঝা গিয়ে পড়বে।

খাতটির উদ্যোক্তারা বলছেন, এটি শুধু এক ধরনের চাপ নয়, বরং শিল্পটির অস্তিত্ব রক্ষাই এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিটিএমএ সহসভাপতি সালেউদ্দিন জামান খান বলেন, “আমাদের প্রকৃত মুনাফা যদি মাত্র ৩ শতাংশ হয়, আর ১ শতাংশ উৎসে কর দিতে হয়, তাহলে কার্যকর করহার দাঁড়ায় ৩৩ শতাংশ। এখন ২ শতাংশ অগ্রিম কর এলে, উৎসে কর সমন্বয় না থাকলে তা গিয়ে দাঁড়াবে ৬৬ শতাংশে।এই অবস্থায় টিকে থাকা অসম্ভব।”

সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে আরও রয়েছে স্থানীয় বাজারে বিক্রিতে ৪ শতাংশ এবং রপ্তানিতে ১ শতাংশ উৎসে কর অব্যাহত রাখা, পাশাপাশি তুলা ও কৃত্রিম তন্তু আমদানিতে নতুন করে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর বসানোর চিন্তাও।

অর্থনীতিবিদ ও এনবিআরের সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ মো. আমিনুল করিম বলেছেন, “রেয়াত তুলে নেওয়া যেতে পারে, তবে কর নির্ধারণ হওয়া উচিত প্রকৃত মুনাফার ভিত্তিতে। মুনাফা না হলে করও থাকা উচিত নয়—এটাই ন্যায্য।” শিল্প সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, এই চাপের ফলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে এবং রপ্তানি আয়ও কমে যাবে—যা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাঁরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, রাজস্ব আহরণের পরিকল্পনা যেন শিল্পের সক্ষমতা ও বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা হয়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ