প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ গুঞ্জনে শেয়ারবাজারে চরম চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজার আবারও অস্থিরতার মুখে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)-তে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জনের প্রভাব পড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে বাজারে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে এবং আস্থা সংকট তীব্রতর হয়েছে।
২৪ মে শনিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৮ পয়েন্ট পতিত হয়ে ৪ হাজার ৭৪৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়। সূচক পতনের আগেরদিনও ১৬ পয়েন্টের বেশি পতন হয়েছিল। যদিও দিনের শুরুতে সূচক কিছুটা ইতিবাচকভাবে শুরু করেছিল, তবে লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টার মধ্যে তা দ্রুত নেতিবাচক প্রবণতায় রূপ নেয়। বিনিয়োগকারীরা নতুন করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় শেয়ারবাজারে উন্নতির আশায় সূচক মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১২০০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে যায়। সেই সময় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রত্যাশায় দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কট কাটবে বলে আশা তৈরি হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন নেতৃত্বের অধীনে বাজারে গতি অনেকটাই থেমে যায়।
নতুন কমিশন কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক নীতি ও ধারাবাহিক পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে বাজারে উদ্দীপনার অভাব দেখা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের একাধিক অভিযোগ রয়েছে যে, কমিশন বাজারের অংশীদারদের সঙ্গে যথাযথ সংলাপ বা মতবিনিময় না করে একতরফা নিয়ন্ত্রণমূলক ভূমিকা পালন করছে। এর ফলে বাজারে আস্থাহীনতা বৃদ্ধি পেয়ে লেনদেন ও সূচক উভয়ই পাঁচ বছর আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।
বর্তমানে দেশের শেয়ারবাজারে গড় দৈনিক লেনদেন ২৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে, যা ২০২০ সালের করোনা সংক্রমণ পরবর্তী সংকটকালের থেকেও কম। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও লেনদেন উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে।
বিশ্লেষকরা নগদ অর্থের সংকট, মার্জিন ঋণে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনীহা এবং আইপিও প্রক্রিয়ার জটিলতা বর্তমান বাজার সংকটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারা বলেন, বাজারে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ এবং বাজারবান্ধব নীতি গ্রহণ জরুরি।
বিনিয়োগকারীদের দাবি, বাজার পুনরুজ্জীবিত করতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয় বাড়ানো, উন্নতমানের কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহ প্রদান এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি সাধারণ বিনিয়োগকারী মন্তব্য করেন, “সরকার ও কমিশন বদলালেও আমাদের পুঁজি ঝুঁকির মুখে পড়ে থাকে। আমরা চাই টেকসই উন্নয়ন ও সুরক্ষিত বাজার।”
আজ ডিএসইতে ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৭৪টির শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ১৮.৬৪ শতাংশ। অপরদিকে ২৭১টির দর কমেছে এবং ৫২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন কমে মাত্র ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যেখানে আগের দিন সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়েছিল।
বর্তমান শেয়ারবাজার দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়না হলেও, বাজারকে গতিশীল করতে হলে বিনিয়োগকারীদের সমস্যা ও প্রস্তাবনা গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে হবে। সময় এসেছে বাজারে স্থায়ী আস্থা ফিরিয়ে আনার এবং কার্যকর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার। শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণ নয়, সহায়তা ও অংশগ্রহণমূলক নীতিমালার মধ্য দিয়ে শেয়ারবাজারকে পুনর্গঠন করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আজ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায় ও সময়সূচি
- এক কোম্পানির শেয়ার 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- শোক সংবাদ: মারা গেলেন মুফতি আহমদুল্লাহ
- শেয়ারবাজারে আসছে বড় পরিবর্তন: ডিএসইর রেকর্ড ডেট প্ল্যান!
- 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরি ও 'বি' থেকে 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর দুই কোম্পানির শেয়ার
- বিএনপিতে শোকের ছায়া: বিএনপি মহাসচিবের শোক প্রকাশ
- বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা: বি-ক্যাটাগরির ঝুঁকি, ৬ শেয়ারে অবিশ্বাস্য মুনাফা
- দুই কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন
- বেতন বাড়লো! সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন পে-স্কেল
- লভ্যাংশ পেল ৩ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- এক কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- রেকর্ডের পর রেকর্ড! ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান
- ৫২৫ শতাংশ লভ্যাংশ পেল বিনিয়োগকারীরা
- আর্সেনাল বনাম নটিংহাম ফরেস্ট: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে