শেয়ারবাজারে আস্থা নেই, বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা, জরুরি ৪ পদক্ষেপ

ছয় দিনে সূচক কমেছে ১৮৬ পয়েন্ট, লেনদেন এবং বাজারমূলধনে বড় ধস
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজার একটানা নেতিবাচক ধারায় চলছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে যখন বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজার পুনরুদ্ধারের পথে, তখন বাংলাদেশে বাজারের সূচক, লেনদেন এবং বাজারমূলধন—সব ক্ষেত্রেই পতন চোখে পড়ছে। বাজারে ক্রমবর্ধমান আস্থার সংকট এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত ছয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে প্রায় ১৮৬ পয়েন্ট। সর্বশেষ বুধবার (২৭ মে) একদিনেই সূচক নেমেছে ৬৩ পয়েন্ট বা ১.৩৪ শতাংশ। এতে সূচক দাঁড়িয়েছে ৪৬১৫ পয়েন্টে, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থান।
সূচকের পাশাপাশি দরপতন ১৮ খাতেবুধবার ডিএসইতে ১৯টি খাতের মধ্যে ১৮টিতেই দরপতন হয়েছে। দিনশেষে লেনদেন নেমে এসেছে ২৬৫ কোটি টাকায়, যা গত এক দশকের গড় লেনদেনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। একই দিনে বাজারমূলধন কমেছে প্রায় ৪ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।
এই তিনটি সূচক—মূল সূচক, লেনদেন এবং বাজারমূলধন—একসঙ্গে নিচের দিকে নামা বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে বড় ধরনের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।
ক্ষতির মুখে খুচরা বিনিয়োগকারীরাধারাবাহিক মন্দায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খুচরা বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘদিন ধরে যারা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পুঁজি বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা এখন ব্যাপক লোকসানে রয়েছেন। একাধিক বিনিয়োগকারী জানিয়েছেন, তাদের বিনিয়োগের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশেরও বেশি মূলধন হারিয়ে গেছে।
একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “প্রতিদিন দাম পড়ে যাচ্ছে, ভালো-মন্দ কোনো শেয়ারের পার্থক্য এখন আর কাজ করছে না।” আরেকজনের ভাষ্য, “এই বাজারে স্থিতিশীলতা নেই, এটা এখন আর বিনিয়োগের জায়গা নয়।”
বাজারে আস্থা সংকট, প্রয়োজন কাঠামোগত পদক্ষেপআমায়া সিকিউরিটিজের বাজার বিশ্লেষক তানজিল আহমেদ বলেন, “বাজারে আগে কিছুটা আস্থা থাকলেও এখন সেটা রূপ নিয়েছে হতাশা ও অনিশ্চয়তায়। বিনিয়োগকারীরা দিক হারিয়ে ফেলছেন।”
তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে এখনও কাঠামোগতভাবে উন্নতির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক খুচরা বিনিয়োগকারী এবং কিছু শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী আছেন, যারা বাজার স্থিতিশীল হলে আবার সক্রিয় হতে পারেন।
তাদের মতে, বাজার স্থিতিশীল করতে নিচের বিষয়গুলো জরুরি হয়ে উঠেছে—
শেয়ার কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
দুর্বল কোম্পানির তালিকাচ্যুতি
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে উৎসাহ
নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়নিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার সম্ভাবনাহীন নয়। তবে এ সম্ভাবনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট নীতিগত সংস্কার এবং সাহসী পদক্ষেপ।
স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকর ভূমিকা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
এখন প্রয়োজন দ্রুত ও বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তা না হলে বাজারের মন্দা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে উঠতে পারে, যার প্রভাব অর্থনীতির অন্যান্য খাতেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আল-আমিন ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আজ এক ভরি ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ১,১১,৮১৬ টাকা!
- শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব ফেরাতে বড় উদ্যোগ অর্থ মন্ত্রণালয়ের
- আইপিএল শেষে দুঃসংবাদ দিলেন মুস্তাফিজ
- ছক্কার বদলে এক রান, আম্পায়ারকে একহাত নিলেন প্রীতি
- পুঁজিবাজারে বড় সাত সিদ্ধান্ত: ডেরিভেটিভ লেনদেনের যুগে প্রবেশ, কমল বিও হিসাব ফি
- রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ড. ইউনূস
- ঈদের আগে শিক্ষকদের মুখে হাসি, সুখবর দিল অর্থ মন্ত্রণালয়
- ডিএসই-ডিবিএ বৈঠকে পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে যুগান্তকারী প্রস্তাবনা
- আইপিএলে সাকিবকে ছাড়িয়ে শীর্ষে মুস্তাফিজ, স্টার্কও পিছনে
- মহার্ঘ ভাতার পাশাপাশি চাকরিজীবীদের দু:সংবাদ দিল অর্থ উপদেষ্টা
- সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সোনার দোকান
- শাহীনের আগুনে ভস্ম ইসলামাবাদ, ফাইনালে লাহোর
- বাংলাদেশ-পাকিস্তান: শেষদিকে হঠাৎ বিপর্যয়, বদলে গেল ম্যাচ
- বাংলাদেশে আজকের সোনা বাজার মূল্য: ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪টি কোম্পানি লাইসেন্স বাতিলেরউদ্যোগ