ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

“আল্লাহ ছাড় দেয়, ছেড়ে দেয় না”—মৃত্যুর আগমুহূর্তে কাঁদিয়ে গেলেন তানিন

বিনোদন ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১১ ১৬:৫৭:১৭
“আল্লাহ ছাড় দেয়, ছেড়ে দেয় না”—মৃত্যুর আগমুহূর্তে কাঁদিয়ে গেলেন তানিন

শেষ সময়ে এসে যেন অভিমানেই বলে গেলেন, “আল্লাহ ছাড় দেয়, ছেড়ে দেয় না।”

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিমগ্ন এক হতাশা আর অজানা যন্ত্রণা নিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ছোট ও বড় পর্দার অভিনেত্রী তানিন সুবহা। গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেত্রী।

তবে মৃত্যু নয়, তানিনকে নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন তারই করা একটি ফেসবুক পোস্ট। যেখানে তিনি লিখেছিলেন এমন কিছু কথা, যা জানলে গা শিউরে ওঠে।

“ঘরের আনাচে কানাচে কত কী যে পেলাম…”

মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগেই নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে তানিন একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি ‘কালো জাদু’ বা ‘তাবিজ-কুফরি’ নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেন। পোস্টে লেখেন:

“কোনোদিন আমি তাবিজ বা কুফরিতে বিশ্বাস করতাম না। এখন করি। সুস্থ একটা মানুষকে এভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করে কী লাভ? ঘরে আনাচে কানাচে কত কী যে পেলাম। কেন এমন করছেন? আমি তো কারোর ক্ষতি করিনি। লাস্ট ৪ মাস ধরে শুধু অসুস্থ আর অসুস্থ আমি। এসবের ফল পাবেন, চিন্তা কইরেন না। আল্লাহ ছাড় দেয়, কিন্তু ছেড়ে দেয় না।”

এই পোস্ট এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। মৃত্যুর পর পোস্টটি ঘিরেই তৈরি হয়েছে এক ধরনের রহস্য। ভক্তদের কেউ কেউ বলছেন, ‘মারা গিয়ে যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেলেন—কালো জাদু কতটা ভয়ানক!’ কেউ লিখেছেন, ‘এক মাস হয়নি পোস্ট দেওয়ার, অথচ আজ সে নেই!’

৮ দিন ছিলেন লাইফ সাপোর্টে

তানিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয় গত ২ জুন। সেদিনই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসকেরা তখন জানিয়ে দেন—তাঁর মস্তিষ্ক আর কাজ করছে না। ক্লিনিক্যালি ডেড হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছিল।

তবে স্বামী হাসপাতালে না থাকায় তখন লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়নি। অবশেষে মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে স্বামীর সম্মতিতে যন্ত্র বন্ধ করা হলে চিরতরে নিস্তব্ধ হয়ে যান তানিন।

এক যুগের ক্যারিয়ার, নীরব এক প্রস্থান

তানিন সুবহা দীর্ঘ এক যুগ ধরে যুক্ত ছিলেন শোবিজ অঙ্গনে। ক্যারিয়ার শুরু করেন বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে, পরে নাটক, সিনেমা ও ওয়েব সিরিজে কাজ করেন। ‘মাটির পরী’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। পাশাপাশি পরিচালনা করতেন ‘তানিন’স বিউটি পার্লার’ নামের একটি সৌন্দর্যচর্চা কেন্দ্র।

আজ তিনি নেই। কিন্তু তার কিছু শব্দ থেকে গেছে, প্রশ্ন রেখে গেছে, চোখে পানি এনে দিয়েছে অসংখ্য অনুরাগীর।

তার শেষ স্ট্যাটাসে যেন লুকিয়ে ছিল এক ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী, এক ধরনের আর্তনাদ—যেটা এখন সবাইকে ভাবাচ্ছে।

মো: রাজিব আলী.

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ