ঢাকা, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২

কর্মী নন, তবু ১২০ ফ্লাইটে ফ্রি ভ্রমণ! শেষমেশ ধরা খেলেন

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৪ ১৭:৩৫:৪১
কর্মী নন, তবু ১২০ ফ্লাইটে ফ্রি ভ্রমণ! শেষমেশ ধরা খেলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিনি কোনো বিমান সংস্থার ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট নন, এমনকি কেবিন ক্রু হিসেবেও কখনো নিয়োগ পাননি। তবু গত ছয় বছরে অন্তত ১২০টি ফ্লাইটে এক টাকাও না খরচ করে ঘুরে বেড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। অবিশ্বাস্য এই প্রতারণার নায়ক হলেন ফ্লোরিডার ৩৫ বছর বয়সী টিরন আলেকজান্ডার।

২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়টায় তিনি নিজেকে ফ্লাইট কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমেরিকান এয়ারলাইনস, ইউনাইটেড, ডেলটা, স্পিরিট ও সাউথওয়েস্টের মতো নামি কোম্পানির বিমানে চড়েছেন। কখনো পাইলট, কখনো কেবিন ক্রু—পরিচয় বদলেছেন বারবার। তবে প্রতিবারই তিনি ফ্লাইট বুক করেছেন ক্রুদের জন্য নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ ওয়েবসাইটে ঢুকে, ব্যবহার করেছেন ভুয়া ব্যাজ নম্বর ও নিয়োগ তারিখ।

ছদ্মবেশ আর ভুয়া তথ্যের জাল

আদালতের নথি অনুযায়ী, টিরন অন্তত ৩০টি ভিন্ন ব্যাজ নম্বর ব্যবহার করেছেন। প্রতিবার ভিন্ন পরিচয়ে নিজেকে "ক্রু" হিসেবে প্রমাণ করেছেন, যাতে আগের ভ্রমণের কোনো সূত্র ধরা না পড়ে। অথচ বাস্তবে তিনি কেবল একটি ছোট এয়ারলাইনে গ্রাউন্ড স্টাফ ছিলেন, তাও ২০১৫ সালে কিছুদিনের জন্য।

নিরাপত্তা পার, তবু প্রতারণা

টার্ন আলেকজান্ডার প্রতিবারই বিমানবন্দরে এসে টিএসএ (TSA)-র নিয়ম মেনে আইডি যাচাই ও দেহ তল্লাশি পার হয়েছেন। টিএসএ নিশ্চিত করেছে, তিনি কখনোই সরাসরি নিরাপত্তা হুমকি ছিলেন না। তবে এটিকে পরিষ্কারভাবে 'প্রতারণা' ও 'ভুয়া পরিচয়ে সুবিধা গ্রহণ' হিসেবে দেখছে কর্তৃপক্ষ।

ফাঁস হওয়ার পরিণতি

ফেডারেল জুরি টিরনকে ওয়্যার ফ্রড (ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবহার করে প্রতারণা) এবং মিথ্যা পরিচয়ে সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁর সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। সেই সঙ্গে তিন বছরের পর্যবেক্ষণমুক্তির সাজাও দেওয়া হতে পারে।

টার্ন আলেকজান্ডারের এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক, মানবিক তদারকির বিকল্প নেই। পরিচয় যাচাইয়ের ফাঁকফোকর পেলে এমন বিস্ময়কর প্রতারণা সম্ভব—যা শুধু নিরাপত্তা নয়, পুরো ব্যবস্থার ওপরই আস্থা নষ্ট করে দিতে পারে।

FAQ (প্রশ্ন-উত্তর):

প্রশ্ন ১: টিরন আলেকজান্ডার আসলে কী কাজ করতেন?

উত্তর: তিনি ২০১৫ সালে এক ছোট এয়ারলাইনে গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে কাজ করতেন।

প্রশ্ন ২: তিনি কতটি ফ্লাইটে ভুয়া পরিচয়ে ভ্রমণ করেছেন?

উত্তর: তিনি অন্তত ১২০টি ফ্লাইটে ফ্রি ভ্রমণ করেন বিভিন্ন এয়ারলাইনসে।

প্রশ্ন ৩: তাঁর বিরুদ্ধে কী ধরনের মামলা হয়েছে?

উত্তর: ওয়্যার ফ্রড ও মিথ্যা পরিচয়ে নিরাপত্তা এলাকায় প্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪: তাঁর সর্বোচ্চ কী শাস্তি হতে পারে?

উত্তর: সর্বোচ্চ ৩০ বছরের জেল ও আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ