ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের জন্য সরকারের বড় সুখবর

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৮:৪৪:৫৪
সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের জন্য সরকারের বড় সুখবর

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য এসেছে বহু প্রতীক্ষিত সুখবর। দীর্ঘদিনের দাবি ও আইনি লড়াইয়ের পর এবার তাদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় নিয়েছে। হাইকোর্টের রায় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

শনিবার (৫ জুলাই) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে অগ্রগতি

পত্রে বলা হয়েছে, রিট পিটিশন নম্বর ৩২১৪/২০১৮-এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ৪৫ জন রিটকারী প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। অর্থ বিভাগ সেই রায় বাস্তবায়নে সম্মতি দিয়েছে। অবশিষ্ট প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের বিষয়টিও সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

শিক্ষক সমাজে স্বস্তি

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, “এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। রিটকারী ৪৫ জনের বেতন স্কেল উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি আমরা চাই দেশের সব প্রধান শিক্ষকই এই সুবিধা ভোগ করুক। সরকার ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে, এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

তিনি আরও জানান, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের দিকেও নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

চাঁদাবাজি নিয়ে সতর্কতা

অফিস আদেশে সতর্ক করে বলা হয়েছে, দশম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে কাউকে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যারা চাঁদাবাজিতে লিপ্ত, তাদের নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সরকারের ইতিবাচক অবস্থান

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের আর্থিক কোনো জটিলতা নেই। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই আমরা দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করব।”

তিনি আরও বলেন, “কিছু অসাধু গোষ্ঠী প্রধান শিক্ষকদের বিভ্রান্ত করছে। আমরা চাই কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হন, তাই সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছি।”

দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান কি আসন্ন?

২০১৪ সালে সরকারি প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। পরে তাদের জন্য ১১তম এবং ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করায় বৈষম্যের অভিযোগ ওঠে। এরপর ৪৫ জন শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করেন, যা দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের পক্ষে রায় দিয়ে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই রায়েরই বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় এবার আশা করা হচ্ছে, দেশের সব প্রধান শিক্ষকই এই সুযোগ পাবেন।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ