আইপিও প্রক্রিয়ায় গতি আনতে উদ্যোগে ডিএসই ও বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক:প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিনের একটি বড় সমস্যা। এক একটি কোম্পানির তালিকাভুক্ত হতে সময় লেগে যাচ্ছে ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত, যা বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। তবে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে ৬ মাসের কম সময়েই আইপিও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে করে বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত “ক্যাপিটাল মার্কেটের সম্প্রসারণ: টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি কাঠামো” শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি মাজেদা খাতুন।
আইপিও কার্যক্রমে দায়িত্ব ভাগ হচ্ছে
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “আইপিও কার্যক্রমে শুধু নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়, মার্চেন্ট ব্যাংকারদেরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। গত এক বছরে কোনো আইপিও অনুমোদন হয়নি, এটি স্বাভাবিক নয়।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ইতোমধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে কোম্পানি তালিকাভুক্তির দায়িত্ব হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে আইপিও প্রক্রিয়া আগের তুলনায় দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
তালিকাভুক্তির হার কম, মানেও ঘাটতি
আলোচনায় উঠে আসে গত ১৫ বছরে ৬৬টি মার্চেন্ট ব্যাংক মিলে মাত্র ১৩৮টি কোম্পানিকে বাজারে তালিকাভুক্ত করেছে। ডিএসই চেয়ারম্যান এই সংখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, “সংখ্যার চেয়ে গুণগত মান বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাস্তবতা হলো—এই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর একটি বড় অংশ বাজারে প্রত্যাশিত ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি।”
তিনি স্বীকার করেন, সব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়বে, এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়। তবে বাজারের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে নীতিমালার সংস্কার ও বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভারতের উদাহরণ, বাংলাদেশের বাস্তবতা
সভায় অংশ নিয়ে এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, “ভারতে একটি আইপিও অনুমোদন পেতে মাত্র ৬ মাস লাগে। অথচ বাংলাদেশে একই প্রক্রিয়ায় সময় লাগে প্রায় ২-৩ বছর। ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের জন্য প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুত করতে হবে।”
নীতিনির্ধারকদের উপস্থিতি
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থ-বিষয়ক বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্যরা।
তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ কমিশনের একটি সভায় অংশ নেওয়ায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
আইপিও প্রক্রিয়া গতিশীল ও স্বচ্ছ হলে বাজারে নতুন কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়বে, যা বাজারে পণ্য ও খাত বৈচিত্র্য আনবে। একইসাথে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে। ডিএসই চেয়ারম্যানের দেওয়া এই আশ্বাস বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে পুঁজিবাজার উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করবে বলে আশা করা যায়।
জাকারিয়া ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ 2025 : বাংলাদেশের চুড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি