গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে রবির অভিযোগ তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের টেলিকম খাতে দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে এবার সরাসরি কাঠগড়ায় দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। ‘প্রিডেটরি প্রাইসিং’ তথা ক্ষতির মুখে গিয়ে প্রতিযোগীদের বাজারচ্যুত করার কৌশল ও অতিরিক্ত ভর্তুকির মাধ্যমে বাজার দখলের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)।
এই অভিযোগ আনিয়েছে গ্রামীণফোনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী—শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রবি আজিয়াটা পিএলসি। অভিযোগ বলছে, গ্রামীণফোন বাজারের ‘সিগনিফিক্যান্ট মার্কেট পাওয়ার’ (SMP) অপব্যবহার করে এমন দামে সিম বিক্রি করছে, যা উৎপাদন খরচের চেয়েও কম। এই আচরণ ছোট ও মাঝারি অপারেটরদের জন্য বাজারে টিকে থাকা কঠিন করে তোলে।
কী বলছে রবি?
রবি তাদের অভিযোগপত্রে দাবি করেছে—এই অস্বাভাবিক কম দামের পেছনে রয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কৌশল। তারা বলছে, "এটি কেবল প্রতিযোগিতাবিরোধী আচরণই নয়, বরং পুরো টেলিকম খাতের উদ্ভাবন ও গ্রাহক স্বাধীনতার জন্য হুমকি।"
চাঞ্চল্যকরভাবে, রবি আরও জানিয়েছে—২০২৩ সালে গ্রামীণফোনের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩,৩১০ কোটি টাকা, যা রবির মুনাফার প্রায় দশ গুণ। আর এই বিপুল মুনাফার জোরেই গ্রামীণফোন এমন ভর্তুকিনির্ভর কৌশল অবলম্বন করতে পারছে।
গ্রামীণফোনের জবাব: ‘আমরা নিয়মেই খেলি’
অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় গ্রামীণফোন একেবারে ভিন্ন সুরে কথা বলেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে—তারা কখনোই উৎপাদন খরচের নিচে সিম বিক্রি করে না। বরং তাদের সিম কার্ডের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (MRP) ৩৫০ টাকা, যা ওয়েবসাইটে স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা আছে।
তবে তারা স্বীকার করেছে, অনেক সময় খুচরা বিক্রেতারা নিজেদের উদ্যোগে কিছু ছাড় দিয়ে থাকেন—এটি তাদের নীতিনির্ধারণের অংশ নয়।
গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমাদের ব্যবসায়িক নীতিমালা উদ্ভাবন, গ্রাহক স্বাধীনতা এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতেই গঠিত। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।”
শুনানি চলছে, তদন্ত চলছে, চাপ বাড়ছে
এই মামলার সর্বশেষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৫ সালের ৫ মে, যেখানে গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান তুলে ধরে। প্রতিযোগিতা কমিশন জানিয়েছে, তারা উভয় পক্ষের বক্তব্য ও প্রমাণ যাচাই-বাছাই করছে, এবং প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে জানা গেছে, একই ধরনের অভিযোগ বাংলালিংকও গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আনতে যাচ্ছে কিংবা ইতিমধ্যেই দাখিল করেছে।
প্রতিযোগিতার নামে প্রতিহিংসা, নাকি সত্যিই বাজারচ্যুতি?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই তদন্ত শুধু একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে নয়—এটি দেশের টেলিকম খাতের ন্যায্যতা, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বড় এক মাইলফলক হতে চলেছে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের এই উদ্যোগ বাজারে ইতিবাচক বার্তা পাঠাতে পারে—যেখানে বড় হওয়া দোষের কিছু নয়, তবে সেটির অপব্যবহার হলে প্রশ্ন উঠবে। এখন দেখার বিষয়, কমিশন কোন পথে হাঁটে—বাজারের শৃঙ্খলার পথে, না কি রাজা যে বলে তাই ঠিক পথে?
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: কোন কোন প্রতিষ্ঠান থাকবে বন্ধ, দেখুন এক নজরে
- ৫ আগস্ট ছুটি, জানুন কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকবে বন্ধ
- অনলাইনে নামজারি আবেদন: যা যা লাগবে ও কতদিনে হবে
- আগামীকাল ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: এক নজরে জানুন বন্ধ থাকবে যে সব প্রতিষ্ঠান
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: এক নজরে জেনে নিন বন্ধ থাকবে যে সব প্রতিষ্ঠান
- ভূমি আইন ২০২৪: খাজনা না দিলে জমি থাকবে না আপনার
- আগামীকাল ৫ আগস্ট থেকে টানা ৫ দিন ছুটি আপনি পাবেন যেভাবে
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর, বন্ধ থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান
- বাংলাদেশ বনাম লাওস: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- SSC বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: ভর্তি নিয়ম ও ফল প্রকাশের তারিখ এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম লাওস ম্যাচ: জানুন ম্যাচ শুরুর সময় ও পরিসংখ্যান
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটিসহ টানা ৫ দিনের ছুটি কিভাবে পাবেন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর: শেয়ারবাজারে আসছে ১৫ বড় প্রতিষ্ঠান
- শুরু বাংলাদেশ বনাম লাওস ম্যাচ: সহজে লাইভ দেখবেন যেভাবে
- বাংলাদেশ ব্যাংকে বড় পরিবর্তন: ভেঙে ফেলা হলো ১৪ ব্যাংকের বোর্ড