ঢাকা, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

রেকর্ডের পর রেকর্ড! ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ০৯:২৩:৪১
রেকর্ডের পর রেকর্ড! ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে এক নতুন ইতিহাস রচনা করলো ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে রানের এক বিশাল রেকর্ড গড়েছে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত এই খেলায় স্বাগতিকরা প্রোটিয়াদের ৩০৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে ১৪৬ রানের এক বিশাল ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। এই বিজয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুটি পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের এক নতুন নজির স্থাপন করেছে।

ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী:

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ ওপেনাররা শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন। ফিল সল্ট এবং জস বাটলারের বিস্ফোরক পার্টনারশিপে মাত্র ৫.৫ ওভারেই দল একশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করে, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম। অধিনায়ক বাটলার মাত্র ৩০ বলে ৮৩ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে বর্ন ফরচুইনের শিকার হন, যেখানে তিনি ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা হাঁকান। ১৮ বলে তার করা অর্ধশতক ইংলিশদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম।

বাটলারের প্রস্থানের পরেও ইংল্যান্ডের রানের চাকায় কোনো শ্লথতা আসেনি। সল্ট ও জ্যাকব বেথেলের ব্যাট থেকে আসে আরও ৯৫ রান। বেথেল ১৪ বলে ২৬ রান করে বিদায় নিলেও, সল্ট তার মারকাটারি ব্যাটিং চালিয়ে যান। এরপর হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে তার জুটি থেকে আসে আরও ৮৩ রান, যেখানে ব্রুক ২১ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন।

ফিল সল্টের অনবদ্য ১৪১ রানের মহাকাব্য:

এই ম্যাচের মূল আকর্ষণ ছিল ওপেনার ফিল সল্টের ১৪১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। ৬০ বলে ১৫টি চার এবং ৮টি ছক্কার সাহায্যে গড়া তার এই ইনিংসটি কেবল এই ম্যাচেরই সর্বোচ্চ স্কোর ছিল না, বরং টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডও নতুন করে লিখেছে। মাত্র ৩৯ বলে দ্রুততম ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি শতরান পূর্ণ করেন। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি, যা তাকে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক করে তুলেছে।

শেষ পর্যন্ত, ইংল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৪ রানের এক বিশাল সংগ্রহ গড়ে তোলে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান, এবং ভারত-বাংলাদেশের ২৯৭ রানের রেকর্ড ভেঙে দুটি পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থ প্রতিরোধ:

৩০৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুটা দ্রুত করলেও, দলীয় ৫০ রানের পর তাদের উইকেটের পতন শুরু হয়। ওপেনার এইডেন মার্করাম ২০ বলে ৪১ রান করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর গড়েন। এছাড়াও ফরচুইন ১৬ বলে ৩২, ডোনোভান পেরেইরা ১১ বলে ২৩, ত্রিস্টান স্টাবস ২৫ বলে ২৩ এবং রায়ান রিকেলটন ১০ বলে ২০ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত আক্রমণে তারা মাত্র ১৬.১ ওভারে ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায়।

ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আর্চার সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট লাভ করেন, এবং স্যাম কারান, লিয়াম ডসন ও উইল জ্যাকস প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

এক ঐতিহাসিক জয়:

এই ম্যাচটি ইংল্যান্ডের জন্য কেবল একটি জয় ছিল না, এটি ছিল রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ার এক দিন। টি-টোয়েন্টিতে তাদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর, দলের সর্বোচ্চ স্কোর এবং সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড এই ম্যাচেই এসেছে। এটি নিশ্চিতভাবেই ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ম্যাচ হয়ে থাকবে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ