ঢাকা, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

জমির নামজারি বাধ্যতামূলক! সরকারের জরুরি নির্দেশ, দলিল থাকলেই হবে না

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৪ ২২:৫৬:২০
জমির নামজারি বাধ্যতামূলক! সরকারের জরুরি নির্দেশ, দলিল থাকলেই হবে না

ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে এবং জমির মালিকানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশ সরকার একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সূচনা করতে যাচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, জমির নামজারি বা মিউটেশন সম্পন্ন করার বিষয়ে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশনার মূলকথা হলো— এখন থেকে কেবল দলিল থাকলেই জমির মালিকানা আর সুরক্ষিত থাকবে না।

আইনি বৈধতা নিশ্চিত করতে নতুন বিধি

‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’-এর অধীনে একটি বাধ্যতামূলক শর্ত যুক্ত হয়েছে। এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে মালিকানা প্রমাণের জন্য দলিলের পাশাপাশি নামজারি থাকা আবশ্যক।

সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে, শুধু দলিলের ভিত্তিতে ভূমি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্তির সুযোগটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, জমি ক্রয় বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্তির পর অতি দ্রুত নামজারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই বর্তমানে আইনি বৈধতা পাওয়ার একমাত্র পথ। সরকার জনসাধারণের প্রতি সতর্কতা জারি করে অনুরোধ জানিয়েছে, নামজারি ছাড়া দলিলের মাধ্যমে কোনো ভূমি রেকর্ড করা হবে না।

নামজারি না করার মারাত্মক প্রভাব ও ঝুঁকি

নামজারি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করলে জমির মালিকদের একাধিক বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে:

আইনের চোখে, ওই ব্যক্তি তাঁর নিজ জমির বৈধ মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

ডিজিটাল রেকর্ডেও তাঁর মালিকানা অন্তর্ভুক্ত হবে না।

নামজারির অভাবে জমি বিক্রি, উত্তরাধিকারসূত্রে হস্তান্তর বা জমির খাজনা পরিশোধের মতো মৌলিক কাজগুলো করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

নিজের জমি অন্য কেউ প্রতারণামূলকভাবে বিক্রি করে দেওয়ার সুযোগ নিতে পারে।

ভবিষ্যতে মালিকানা নিয়ে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার তীব্র আশঙ্কা থাকবে।

সারা দেশে ডিজিটাল রূপান্তর ও প্রক্রিয়া

ভূমি ব্যবস্থাপনায় গতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নামজারি পদ্ধতিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুলাই মাস থেকে দেশের ২১টি উপজেলায় এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা দ্রুতই জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবে।

বর্তমানে নামজারির জন্য আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়া যাচ্ছে এবং সরকার নির্ধারিত ফি মাত্র ১,১০০ টাকা (১,১৭০ টাকা)। আবেদন জমা পড়ার পর আবেদনকারীরা এসএমএসের মাধ্যমে শুনানির সঠিক তারিখ জানতে পারবেন।

যদি কোনো ব্যক্তি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও নামজারি পেতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের হেল্পলাইন ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেছে।

দেশের সকল নাগরিককে নিজ মালিকানা নিশ্চিত করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ