শেয়ারবাজারে বাড়ছে হতাশা, নিভছে বিনিয়োগের আশার আলো

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মুখে এখন একটাই কথা—"আর কতো নিচে যাবে বাজার?"
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চলতি সপ্তাহে মাত্র চার কার্যদিবসেই সূচক কমেছে ১০৮ পয়েন্ট। দৈনিক লেনদেন নেমেছে ১৮ শতাংশের বেশি। বাজারে নেই কোনো আস্থা, নেই ভবিষ্যতের দিশা। বিনিয়োগকারীদের চোখে-মুখে ভর করেছে হতাশা আর ক্ষোভ।
সূচক পতন, লেনদেনের ধস
গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ২ শতাংশের বেশি। বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা।দৈনিক গড় লেনদেন নেমে এসেছে ৪০০ কোটি টাকার নিচে, যা গত আট মাসে সর্বনিম্ন।
লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানির মধ্যে—
২৯৯টির দাম কমেছে
মাত্র ৭৭টির দাম বেড়েছে
২০টির কোনো পরিবর্তন হয়নি
এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
সরকার পরিবর্তন, কিন্তু বাজারের দৃশ্যপট অপরিবর্তিত
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর পুঁজিবাজারে স্বস্তির একটা ঢেউ এসেছিল। মাত্র চার দিনে সূচক ৮০০ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল, লেনদেনও ছাড়িয়েছিল ২ হাজার কোটি টাকা।
কিন্তু এখন?
সূচক আবার ৫ হাজারের নিচে
লেনদেন প্রায় ৪ গুণ কম
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফিরে এসেছে ২০১০ সালের ধসের আতঙ্ক
বিএসইসিতে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, নীতিনির্ধারণে স্থবিরতা
নতুন কমিশনের অধীনে শেয়ারবাজারে আশার আলো দেখা যাবে—এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে:
বিএসইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্তঃকলহ
সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা
শেয়ারবাজার সংস্কারে ধীরগতি
কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই বললেই চলে
ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান বলেন,
“দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—এমন দিকহীন বাজার আগে কখনো দেখিনি। আমরা আসলেই আশাহত।”
বিনিয়োগকারীদের অভিমত: “ব্যাংক খাতে পরিবর্তন হলেও বাজার পড়ে আছে”
প্রথম আলোর সঙ্গে গত তিন দিনে কথা হয়েছে ১০ জন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে। সবার কণ্ঠেই একই সুর:
ব্যাংক খাতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে
নতুন গভর্নরের উদ্যোগে আমানতকারীদের আস্থা ফিরেছে
কিন্তু পুঁজিবাজারে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই
বিএসইসির ভাবমূর্তি এখন অনেকটা “অকার্যকর প্রতিষ্ঠান” হিসেবেই পরিচিত
একজন শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস নির্বাহী বলেন,
“আগে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও কিছু কাজ হতো। এখন শুধু জটিলতা আর জড়তা।”
কোথায় সমাধান?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানান,
“শেয়ারবাজারে অভিজ্ঞ লোকের অভাব আছে। যারা আছেন, তারাও সুবিধাভোগী হয়ে পড়েছেন। টাস্কফোর্স গঠনসহ অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বাস্তবায়ন শুরু হলে হয়তো বাজারে গতি ফিরবে।”
কিন্তু প্রশ্ন হলো— এই "হয়তো" শব্দটার অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা আর কতটা সহ্য করতে পারবেন?
দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ছাড়া মুক্তি নেই
শেয়ারবাজার এখন এমন এক দোলাচলে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে মাঝেমধ্যে আশার ঝিলিক দেখা গেলেও তা দ্রুত ম্লান হয়ে যাচ্ছে।দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, আস্থার পরিবেশ ও কার্যকর নেতৃত্ব ছাড়া এই বাজারে ফিরবে না বিনিয়োগকারীর আত্মবিশ্বাস।
এক দশক আগের ধস এখনও বিনিয়োগকারীদের মনে তাজা। আরেকটি ধাক্কা তাদের অনেকের জন্য হয়তো শেষ ধাক্কাই হয়ে যাবে। তাই এখনই সময়—বাজারকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর মতো সাহসী ও বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেওয়ার।
রাজিব/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- আজ বাংলাদেশের বাজারে১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- ১১ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- ৬৯০ টাকায় সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস, কেন পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ?
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২৮ এপ্রিল ২০২৫)
- ১৬ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: কার আয় বাড়ল, কে পড়ল লোকসানে