শেয়ারবাজারে ধাক্কা: ২৪ ব্যাংকের প্রতিবেদন আটকে গেল শেষ মুহূর্তে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হলেও, দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক তা চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ৩০ এপ্রিল ছিল প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন, কিন্তু শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টির হিসাব এখনও রেডি হয়নি। আর, যারা তালিকাভুক্ত নয়, তাদেরও বেশিরভাগের একই অবস্থা। শেয়ারবাজারে এমন অনিশ্চয়তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এর পেছনে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নীতির চাপ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারি
এবার বাংলাদেশ ব্যাংক একেবারে শিথিলতা ছাড়াই ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন চাইছে। অতীতে নানা সুবিধা দেওয়া হলেও, এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, খেলাপি ঋণ এবং প্রভিশন সংরক্ষণে কোনো ছাড় নেই। বিশেষ করে, খেলাপি ঋণ বাড়ার ফলে ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি প্রভিশন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে, যা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লভ্যাংশের শর্ত
বাংলাদেশ ব্যাংক এবারে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যারা ডেফারেল সুবিধা নিয়েছে, তারা ২০২৪ সালে কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। অনেক ব্যাংক এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে, মৌখিকভাবে বলা হয়েছে যে, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় কোনো জরিমানা হবে না, তবে সময়মতো প্রতিবেদন জমা দেওয়াটা অপরিহার্য।
বাড়তি চাপের মুখে ব্যাংকগুলো
এছাড়া, যেসব ঋণ উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে ছিল, সেগুলোর বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে। অন্যদিকে, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বা অন্য ব্যাংকে আটকে থাকা আমানতের বিপরীতেও প্রভিশন গঠন করতে হচ্ছে। ফলে, ব্যাংকগুলোকে গুনতে হচ্ছে বাড়তি প্রভিশন সংরক্ষণের খরচ।
অর্থনৈতিক চিত্রের বিশ্লেষণ
২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এটি বেড়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এই অবস্থা ব্যাংকগুলোর জন্য আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে, কারণ খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলোকে বাড়তি প্রভিশন গঠন করতে হচ্ছে।
কীভাবে প্রভাব ফেলছে শেয়ারবাজারে?
বর্তমানে দেশে ৬১টি ব্যাংক রয়েছে, এর মধ্যে ৯টি বিদেশি ও ৯টি সরকারি। তবে, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৩৬টি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত, যার মধ্যে ২৪টি ব্যাংক এখনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। এই অবস্থায় শেয়ারবাজারে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু ব্যাংক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য এক মাস সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন পর্যন্ত এর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।
ডিভিডেন্ডের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাজার
এদিকে, ১২টি ব্যাংক তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লোকসান থাকার কারণে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। অন্যদিকে, ব্র্যাক, সিটি, ইস্টার্ন, পূবালী, ডাচ্-বাংলা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ট্রাস্ট, যমুনা, প্রাইম, উত্তরা ও মিডল্যান্ড ব্যাংক তাদের লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যা শেয়ারবাজারের জন্য কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এখন পর্যন্ত ২৪টি ব্যাংক চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, দেশের শেয়ারবাজারে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যাংকগুলো যদি শীঘ্রই তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে না পারে, তাহলে শেয়ারবাজারে আরও বড় ধাক্কা আসতে পারে। তবে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে আলোচনা চলছে, আশা করা যায় শীঘ্রই এই পরিস্থিতির সমাধান আসবে।
জামিরুল ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- কলেজ ভর্তি ২০২৫: ক্লাস শুরু ৩০ সেপ্টেম্বর, একাদশে ভর্তি হবে তিন ধাপে
- SSC বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: ফলাফল ও কলেজ ভর্তি নিয়ে জানুন সব কিছু
- কলেজ ভর্তি ২০২৫: আবেদন, ফল প্রকাশ ও ভর্তি ফি—জেনে নিন তারিখ ও খরচ
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ, জানুন ফলাফল
- কলেজ ভর্তি ২০২৫ কবে শুরু? আবেদন ও ভর্তি ফি জানুন বিস্তারিত
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান লড়াই আজ: ম্যাচটি সহজে লাইভ দেখার উপায়
- একাদশ শ্রেণি ভর্তি ২০২৫: সময়সূচি, ফি, নিয়ম জানুন এখনই
- এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: ফল প্রকাশের সময় জানালেন বোর্ড
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: টস শেষ, টাইগারদের একাদশে ৫ পরিবর্তন
- ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে আবেদন শুরু কবে, জানা যাবে আজ
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: টস শেষ, বাংলাদেশ একাদশে চমক
- আজ বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান লড়াই: ম্যাচটি লাইভ দেখার সহজ উপায়
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল: আবারও গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ২য় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ফলাফল ও বিশ্লেষণ
- এক কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর