ঢাকা, সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের জন্য আশার আলো

প্রবাসী ডেস্ক . ৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মে ০৫ ১৪:৩৪:৩০
মালয়েশিয়া প্রবাসীদের জন্য আশার আলো

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিনের হতাশা, অনিশ্চয়তা আর অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারে আসছে ১৫ মে। মালয়েশিয়ায় অবস্থিত লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির চোখ এখন একটিমাত্র দিনের দিকে। কারণ, ওই দিন পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, যার মাধ্যমে নতুন করে খুলে যেতে পারে শ্রমবাজারের দ্বার—ফিরে আসতে পারে হাজারো প্রবাসীর হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ইতোমধ্যে তার সফরের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। দিনভর চলবে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক—সকাল সাড়ে ১০টায় মানবসম্পদ মন্ত্রী ও দুপুর আড়াইটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন ড. নজরুল।

এই সফরের মূল লক্ষ্য—বন্ধ শ্রমবাজার আবার সচল করা। ২০২৩ সালের ৩১ মে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। তখন থেকেই শুরু হয় প্রবাসীদের অনিশ্চয়তার দিন। তবে এবার আশার প্রদীপ জ্বলছে নতুন করে।

সরকারি সূত্র বলছে, বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ায় আবারও শ্রমিক পাঠাতে আগ্রহী এবং এই সফর তারই একটি বড় পদক্ষেপ। মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মধ্যে তাই বইছে আশার বন্যা। তবে সেই আনন্দের মাঝেও চাপা দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে এক শ্রেণির মানুষকে—যারা ‘কলিং ভিসা’ নিয়ে গিয়ে এখন অবৈধভাবে বসবাস করছেন।

মাহবুবুর রহমান নামের এক অবৈধ প্রবাসী বলেন, “২০২৩ সালে ভিসা নিয়ে এলেও অনেকেই কোনো নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এখন আমরা চিকিৎসা, কাজ কিংবা ন্যায্য অধিকার—কোনোটিই পাচ্ছি না।”

তিনি আরও বলেন, “যদি বৈধতার বিষয়ে আলোচনা হয়, তাহলে আমাদের মতো হাজারো মানুষ নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবে। আমাদের একটাই চাওয়া—আইনের ছায়ায় ফিরে যাওয়া।”

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় বহু বাংলাদেশি নির্মাণ খাতে অল্প বেতনে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে তারা টিকে থাকলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা, নতুন করে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হলে সরকার অবৈধদের জন্যও কোনো বৈধতা পাওয়ার পথ উন্মুক্ত করবে। নইলে জেল অথবা নিজ দেশে খালি হাতে ফেরার আশঙ্কা থেকেই যাবে।

উল্লেখ্য, শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে দেশি রিক্রুটিং এজেন্সি ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের দুর্নীতিপরায়ণ সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের।

তবু, নতুন আলো দেখা যাচ্ছে দিগন্তে। এই আলো শুধু শ্রমবাজারের দ্বার নয়, বরং হাজারো পরিবারের ভবিষ্যৎ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা। ১৫ মে-এর বৈঠকটি তাই শুধু কূটনৈতিক আয়োজন নয়, এটি হয়ে উঠতে পারে মালয়েশিয়ায় থাকা লাখো প্রবাসীর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

আপনার ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের জন্য চাইলে এই নিউজের সঙ্গে মিলিয়ে একটি ইনফোগ্রাফিক বা থাম্বনেইলও বানিয়ে দিতে পারি। আপনি কি চান?

রাজিব/

আপার জন্য বাছই করা কিছু নিউজ