ঢাকা, বুধবার, ৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

পাকিস্তানে ভারতের হামলা, ট্রাম্পের সরাসরি জবাব

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ০৭ ১১:৩৬:০৬
পাকিস্তানে ভারতের হামলা, ট্রাম্পের সরাসরি জবাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাহাড়ের নীরবতা ভেঙে এক ভোরবেলা গর্জে উঠলো ভারতীয় যুদ্ধবিমান। লক্ষ্যে সোজাসুজি পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের ‘সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি’। নাম দেওয়া হয়েছে— অপারেশন সিঁদুর। কিন্তু এই রক্তিম অভিযানের প্রতিধ্বনি শুধু নিয়ন্ত্রণরেখা নয়, পেরিয়ে গেল বিশ্ব কূটনীতির প্রাচীরে।

গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই ‘সুনির্দিষ্ট’ অভিযানের ঘোষণা দিলো নয়াদিল্লি। জানালো, নয়টি টার্গেট ধ্বংস করেছে তারা— যার মধ্যে রয়েছে জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সদর দপ্তর।

অন্যদিকে ইসলামাবাদ বলছে, নিহত হয়েছে ৮ জন, এবং প্রতিশোধ নিতে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। সীমান্তজুড়ে রাতভর গোলাগুলিতে প্রাণ গেছে ভারতের তিন বেসামরিক নাগরিকেরও।

কিন্তু যুদ্ধ শুধু মাটিতে নয়— ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।

বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া: ‘লজ্জা’, ‘উদ্বেগ’, ‘সংযম’

ওভাল অফিসে ঢুকতেই খবর পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিকদের সামনে রীতিমতো বিস্ফোরক মন্তব্য:

“এই উত্তেজনা লজ্জাজনক। এক শতকেরও বেশি সময় ধরে তারা লড়ছে। আশা করি, এটি শেষ হবে।”

মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রাতেই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের ফোন পান। সংলাপের পথ খোলা রাখার কথাও উঠে আসে আলোচনা শেষে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখে স্পষ্ট উদ্বেগ:

“এই ধরনের অভিযান বিশ্ব নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলতে পারে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের সংঘাতের ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।”

চীনের সতর্ক বার্তা:

“অবিলম্বে সংযম দেখান, পরিস্থিতি জটিল করা থেকে বিরত থাকুন।”

আরব আমিরাত জানায়:

“আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তির স্বার্থে উত্তেজনা প্রশমিত হোক।”

জাপান সতর্ক করে:

“এই লড়াই যেন পূর্ণমাত্রার সংঘাতে পরিণত না হয়।”

ইরান-মধ্যস্থতায় আগ্রহী, পাশে ইসরায়েল

উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব আবারও সামনে এনেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বুধবার ভারত সফরে যাচ্ছেন, তার আগে গিয়েছিলেন ইসলামাবাদেও। এবার বৈঠক করবেন ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে।

অন্যদিকে ইসরায়েল একেবারে ভারতের পাশে।

নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রুবেন আজার বলেন,

“নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরালে পালানোর জায়গা থাকবে না। ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে আমরা সমর্থন করি।”

ভারতের অবস্থান: ‘সন্ত্রাসী নয়, সেনা নয়’

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষায়,

“এই হামলা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, বরং কেবলমাত্র সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিকে লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে।”

তাদের দাবি, বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকে অবস্থিত জইশ ও লস্করের মূল ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য স্বীকার করেছে পাকিস্তানের এক সামরিক মুখপাত্রও।

ইসলামাবাদের হুঁশিয়ারি: 'জবাব আসবেই'

এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ উল্লেখ করে জবাব আসবেই— এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ডেকেছেন জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক। ভারতের এই পদক্ষেপের পরিণতি নিয়ে ইসলামাবাদ এখন প্রতিরোধের প্রস্তুতিতে।

উপসংহার: দুই দেশের উত্তেজনায় দগ্ধ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ

যুদ্ধ না হলে শান্তি নেই— এমন শীতল বাক্য শুনতে চায় না আর কেউ। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশের এমন সংঘাতে গোটা দক্ষিণ এশিয়া যেন দাঁড়িয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কিনারায়।

বিশ্ব এখন তাকিয়ে— পরবর্তী পদক্ষেপ কার?

FAQ উত্তরসহ:

১. অপারেশন সিঁদুর কী?

→ ভারতের কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালানো একটি সামরিক অভিযান।

২. কারা অপারেশনে লক্ষ্যবস্তু ছিল?

→ জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।

৩. আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

→ যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, চীন, আরব আমিরাতসহ অধিকাংশ দেশ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে, ট্রাম্প একে ‘লজ্জাজনক’ বলেছেন।

৪. উত্তেজনা কি বড় সংঘাতে গড়াতে পারে?

→ জাতিসংঘ ও বিশ্লেষকদের মতে, যদি সংযম না দেখায়, তা পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ