ঢাকা, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানের ড্রোন ঠেকাতে সৌদির গোপন ভূমিকা! দ্বিচারিতার অভিযোগ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০৪ ১৪:০৬:৩৬
ইরানের ড্রোন ঠেকাতে সৌদির গোপন ভূমিকা! দ্বিচারিতার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালছে নতুন এক বিস্ফোরক তথ্য। ইরান-ইসরাইল সাম্প্রতিক সংঘাতে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ইসরাইল হাইওম–এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বলছে, ইরানের ছোড়া ড্রোন ঠেকাতে গোপনে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে সৌদি আরব। অথচ প্রকাশ্যে রিয়াদ বারবার তেলআবিবের হামলার বিরোধিতা করে এসেছে।

প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, সংঘাতের সময় ইরান থেকে উৎক্ষেপণ করা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইল অভিমুখে যাত্রা করছিল। সেগুলো গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই সৌদি আরব প্রতিবেশী জর্ডান ও ইরাকের আকাশসীমায় হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে এবং বেশ কিছু ড্রোন ধ্বংস করে। এ কাজটি তারা করেছে ইসরাইলের আকাশসীমা রক্ষার জন্য—এমনটাই বলছে ইসরাইলি পক্ষ।

যদিও সৌদি সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলকে এমন কোনো সামরিক সহায়তার কথা স্বীকার করেনি।

প্রকাশ্যে এক কথা, ভেতরে আরেক চাল?

বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদির এই পদক্ষেপ তাদের কথিত নিরপেক্ষতার মুখোশ খুলে দিচ্ছে। যুদ্ধ চলাকালে সৌদি আরব প্রকাশ্যে জানিয়েছিল, তারা ইরানের ভূখণ্ডে ইসরাইলের একতরফা হামলার নিন্দা জানায় এবং কোনোভাবেই সৌদি আকাশসীমা ব্যবহার করে হামলা চালাতে দেওয়া হবে না।

কিন্তু পর্দার আড়ালের সহযোগিতা নিয়ে উঠেছে দ্বিচারিতার অভিযোগ। অনেকেই বলছেন, সৌদি আরব হয়তো পশ্চিমা মিত্রদের চাপে পড়ে অথবা আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষার কৌশল হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইসরাইলের পাশে কারা ছিল?

১২ দিনব্যাপী সংঘাতে ইরান একাই লড়েছে। বিপরীতে, ইসরাইলের পাশে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা শক্তিধর মিত্ররা। এবার সেই তালিকায় যোগ হলো সৌদি আরবের নাম, যদিও পরোক্ষ ও অস্বীকৃতভাবে।

এই ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গাজায় দীর্ঘদিন ধরে চলা ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নির্লিপ্ত অবস্থান নিয়ে আগেই সমালোচনা হচ্ছিল। এবার ইরানের বিরুদ্ধে গোপন ভূমিকা সৌদি আরবকে আরও বেশি চাপের মুখে ফেলেছে।

গাজা নিয়ে সৌদির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন

গত ২১ মাসে গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭,১৩০ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। এর বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের নিরব বা কৌশলগত নরম অবস্থান মুসলিম দুনিয়ার বড় একটি অংশকে হতাশ করেছে।

ইরান-ইসরাইল সংঘাত হয়তো শেষ হয়েছে, কিন্তু সৌদি আরবের দ্বৈত ভূমিকা ঘিরে বিতর্কের যেন কোনো শেষ নেই। রিয়াদ কি আসলেই নিরপেক্ষ? নাকি আড়ালে আড়ালে গড়ে তুলছে নতুন এক জোটের ভিত্তি? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে।

মো: রাজিব আলী/

ট্যাগ: সৌদি ইরান

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ