ঢাকা, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাজারে ক্রেতা বেশি, বিক্রি কম—এটা কি স্থিতিশীলতার সংকেত?

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১৫:৫৫:৫৫
বাজারে ক্রেতা বেশি, বিক্রি কম—এটা কি স্থিতিশীলতার সংকেত?

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা দরপতনের পর বাংলাদেশে শেয়ারবাজারে আজ (শনিবার, ১৭ মে) সূচক উত্থানের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার কিছুটা পুনরাগমন পরিলক্ষিত হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইএক্স সূচক ৩৯.৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৮২০ পয়েন্টে, যা সাম্প্রতিক সময়ে তুলনামূলক ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর আগামীকাল ডিএসই পরিদর্শনের ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নীতিনির্ধারণী পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রত্যাশা তৈরি করেছে। বাজারে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে, এই পরিদর্শনের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের মূল্যায়নের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

লেনদেন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আজ ক্রেতা অংশগ্রহণ তুলনামূলক বেশি ছিল এবং বিক্রির চাপ সীমিত ছিল। এর ফলে বাজারে চাহিদা কিছুটা সক্রিয় থাকলেও সরবরাহের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা আগের দিনের ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার তুলনায় কম। এই পার্থক্য বাজারে বিক্রয় প্রস্তাবের ঘাটতির দিকেই ইঙ্গিত দেয়।

ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস সূচক ১৩.৯০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,০৫২ পয়েন্টে, তবে ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১৮.০৮ পয়েন্ট এবং অবস্থান করছে ১,৭৮৮ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে অংশ নেয়, যার মধ্যে ২৭৭টির দর বেড়েছে, ৭৯টির কমেছে এবং ৪০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) থেকেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪.৩৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩,৪৮১ পয়েন্টে। মোট লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার, যেখানে আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০ কোটি ১১ লাখ টাকার। এদিন সিএসইতে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বেড়েছে, ৫৭টির কমেছে এবং ২৭টি অপরিবর্তিত ছিল।

বিগত কয়েক মাসে বাজারে ধারাবাহিক নেতিবাচক প্রবণতা এবং সূচকের পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর বাজার সূচক পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছায়। এই প্রেক্ষাপটে, বাজার কাঠামো ও পরিচালনায় গভীর পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালোভাবে সামনে আসে।

ডিএসই পরিদর্শন কেন্দ্রিক বর্তমান প্রত্যাশা যদি বাস্তব নীতিগত ও কাঠামোগত পরিবর্তনের পথে অগ্রসর হয়, তবে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে কার্যকর স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার সুযোগ তৈরি হতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এখন নীতিনির্ধারকদের স্পষ্ট বার্তা এবং বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগের দিকে দৃষ্টিপাত করছেন।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ