ঢাকায় ৭০% পানি ভূগর্ভ থেকে, সিংক হোলের আশঙ্কা কতটুকু?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবসৃষ্ট কারণেই বাড়ছে ঝুঁকি
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সাত মসজিদ রোডে সম্প্রতি হঠাৎ করেই একটি গর্ত তৈরি হয় রাস্তায়। প্রথমে ছোট আকারের হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বড় আকার ধারণ করে। ঘটনাস্থলে আতঙ্ক ছড়ায় এবং সাময়িকভাবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ঘটনাটির ছবি, অনেকেই একে "সিংক হোল" বা "দানব গর্ত" হিসেবে ব্যাখ্যা করতে থাকেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে—এটা কি সত্যিকারের সিংক হোল ছিল? এবং ঢাকায় এমন ভয়ংকর গর্তের আশঙ্কা কতটুকু?
সিংক হোল কীভাবে তৈরি হয়?
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সিংক হোল সাধারণত তখনই তৈরি হয় যখন মাটির নিচে চুনাপাথর, জিপসাম বা লবণের মতো উপাদান থাকে—যেগুলো পানি দ্বারা সহজেই গলে যায়। এর ফলে মাটির নিচে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয় এবং একসময় ওপরের মাটি ধসে পড়ে বিশাল গর্ত তৈরি করে। এটি একটি প্রাকৃতিক ভূতাত্ত্বিক ঘটনা।
তবে শুধুই প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট কারণেও সিংক হোল বা ধসের মতো ঘটনা ঘটতে পারে, যেমন:
অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন
ফুটো পাইপলাইনের মাধ্যমে মাটি সরে যাওয়া
নির্মাণ কাজের কম্পন
অপরিকল্পিত খনন কার্যক্রম
ঢাকায় যা ঘটেছে, তা কী সিংক হোল?
সাত মসজিদ রোডের ঘটনাটি তদন্ত করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি প্রকৃত সিংক হোল নয়।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (DPDC) ওই এলাকায় রাস্তার নিচে তার বসানোর কাজ করছিল। ওই সময় ওয়াসার একটি পাইপলাইন ফুটো হয়ে যায়। ফুটো থেকে নিরবিচারে পানি বেরিয়ে মাটির নিচের বালু সরিয়ে ফেলে, যার ফলে ফাঁকা স্থান তৈরি হয় এবং ওপরের মাটি ধসে যায়।
তাহলে ঢাকায় সিংক হোলের ঝুঁকি কতটুকু?
বিশেষজ্ঞরা একমত যে, ঢাকার ভূগর্ভে চুনাপাথরের স্তর নেই, ফলে প্রাকৃতিক সিংক হোলের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু মানবসৃষ্ট কারণে ভয়াবহ গর্ত তৈরি হওয়ার ঝুঁকি দিনে দিনে বাড়ছে।
একটি বড় কারণ হলো—ঢাকায় দৈনিক ২ কোটিরও বেশি মানুষের পানি চাহিদার প্রায় ৭০% আসে ভূগর্ভ থেকে।
এভাবে পানি তুলতে থাকলে মাটির নিচে ফাঁকা সৃষ্টি হয়, যা ল্যান্ড সাবসিডেন্স বা ধসের কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভবিষ্যতে বড় গর্ত বা ভবনের ধস পর্যন্ত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
"আমরা সবসময় মাটির উপরের গঠন নিয়ে চিন্তিত থাকি, কিন্তু নিচের গতিবিধি উপেক্ষিত। এটাই বড় ঝুঁকি তৈরি করছে," বলেন ভূতত্ত্ববিদদের একজন।
"পরিকল্পনাহীন পানি উত্তোলন ও পাইপলাইন ব্যবস্থাপনার ত্রুটি ঢাকাকে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে," মন্তব্য করেন একজন নগর পরিকল্পনাবিদ।
কী করণীয়?
ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার সীমিত করা
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ
পাইপলাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি
মাটির নিচের ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ও নিয়মিত মনিটরিং
ঢাকায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক গর্তটি প্রকৃত সিংক হোল না হলেও এটি একটি বড় সতর্ক সংকেত।যদি ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরতা এভাবে চলতে থাকে এবং নির্মাণ কার্যক্রমে দায়িত্বশীলতা না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে ঢাকায় মানবসৃষ্ট সিংক হোল হওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
FAQ (প্রশ্নোত্তর সহ):
প্রশ্ন: ঢাকায় সিংক হোল হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?
উত্তর: প্রাকৃতিকভাবে নয়, তবে ভূগর্ভস্থ পানি বেশি তোলার কারণে মানবসৃষ্ট সিংক হোলের ঝুঁকি রয়েছে।
প্রশ্ন: সাত মসজিদ রোডে যে গর্ত হয়েছে, সেটা কি সিংক হোল?
উত্তর: না, এটি ওয়াসার পাইপলাইন ফুটো হওয়ার কারণে মাটি সরে গিয়ে তৈরি হওয়া একটি মানবসৃষ্ট গর্ত।
প্রশ্ন: ঢাকায় কী কারণে সিংক হোলের ঝুঁকি বাড়ছে?
উত্তর: অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, অব্যবস্থাপনার নির্মাণ কাজ ও পাইপলাইন ত্রুটি প্রধান কারণ।
প্রশ্ন: কিভাবে এ ঝুঁকি কমানো যেতে পারে?
উত্তর: বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানো এবং মাটির নিচের নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
মো: রাজিব আলী/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ঈদের আগে সোনার বাজারে স্বস্তি, আসলো নতুন সিদ্ধান্ত
- ৬৯০ টাকায় সাড়ে ১২ কেজি গ্যাস, সিন্ডিকেটের ফাঁদে পিষ্ট সাধারণ মানুষ
- ১ লাখ ও ৯০ হাজারের গরু ৭০ হাজারে
- এবার বছরে একবারই স্বর্ণ আনতে পারবেন!
- ঢাকায় ল্যান্ডের সময় ৬ বারেও ব্যর্থ পাইলট, তারপর যা ঘটলো
- বাংলাদেশ বনাম ভূটান: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনেনিন ফলাফল
- আজ বাংলাদেশ বনাম ভুটানের মধ্যকার ম্যাচ সরাসরি লাইভ দেখবেন যেভাবে
- ঝিনঝিনি ভাব, ঠান্ডা পা? গোপনে বাড়ছে ভয়ংকর ৫ রোগ
- বাংলাদেশ বনাম ভূটান: দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও গোল
- প্রয়াত হলেন সাবেক এমপি আনোয়ারুল, কুমিল্লা বিএনপিতে শোক
- পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ: দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বড় জয়
- বিসিবিতে মাশরাফি? বুলবুলের নতুন চমকে ক্রিকেটে হইচই
- চিরবিদায় নিলেন সাংকো পাঞ্জা
- আইপিএলে শোকের খবর, মারা গেলেন ডেভিড ট্রিস্ট
- ঈদের আগে জেনে নিন ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার নতুন মূল্য তালিকা