ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে সম্পর্কের ৬টি বিষয় যাচাই করুন

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ২০:০৬:১১
বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে সম্পর্কের ৬টি বিষয় যাচাই করুন

চোখ বন্ধ করে নয়, বুঝে-শুনে এগোন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিয়ে কোনো হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়। এটা এমন একটি বন্ধন, যা দুজন মানুষকে কেবল সামাজিকভাবেই নয়, মানসিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে একত্রিত করে। অনেকেই আবেগে বা ভালোবাসায় ভেসে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন। পরে এসে বুঝতে পারেন—অনেক কিছু না ভেবেই এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।

তাই বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে আপনাদের সম্পর্ক কতটা পরিপক্ব, স্থিতিশীল এবং ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত—তা যাচাই করা জরুরি।

নিচে সম্পর্কের এমন ৬টি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো, যেগুলো না বুঝে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া একপ্রকার ঝুঁকি।

১. সম্পর্কে শান্তি আছে কি না

একটি সফল সম্পর্কের ভিত্তি শান্তি। যদি প্রায় সময় ঝগড়া, মনোমালিন্য কিংবা একে অপরকে নিয়ে সন্দেহ চলে আসে, তাহলে সেটা অবশ্যই ভাববার বিষয়। অনেকেই মনে করেন বিয়ে করলেই এসব সমস্যা শেষ হয়ে যাবে। বাস্তবে হয় তার উল্টোটা।তাই বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে যাচাই করুন—আপনার সম্পর্কটি কি পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে?

২. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মিল রয়েছে কি না

আপনারা দু’জনই কি ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন? সংসার, সন্তান, ক্যারিয়ার, অভিভাবকদের দায়িত্ব, কোথায় বাস করবেন—এসব বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলে তা বিয়ের পর বড় সমস্যার কারণ হতে পারে।

বিয়ের আগে অবশ্যই খোলামেলা আলোচনা করে দেখুন—আপনারা ভবিষ্যৎ জীবনটাকে একইভাবে কল্পনা করেন কি না।

৩. সম্পর্ক কতটা স্থিতিশীল

আপনারা কি দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কের মধ্যে রয়েছেন? নাকি সম্পর্ক একাধিকবার ভেঙেছে ও জোড়া লেগেছে? বারবার ব্রেকআপ আর মিলনে তৈরি হওয়া সম্পর্ক বিয়ের পরও অস্থির থেকে যেতে পারে।বিয়ের মতো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সম্পর্কের স্থিতিশীলতা যাচাই করা জরুরি।

৪. আগের সম্পর্কের প্রভাব আছে কি না

আপনি বা আপনার সঙ্গী কি আগের কোনো সম্পর্কের স্মৃতি বা আবেগ এখনো মনে বয়ে বেড়ান? যদি হ্যাঁ, তবে সেটা বর্তমান সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।একটি মজবুত দাম্পত্য জীবনের জন্য অতীতকে পুরোপুরি পেছনে ফেলে সামনে এগোনো খুব জরুরি। আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন—আপনি কি সত্যিই প্রস্তুত?

৫. দু’জনই দায়িত্ব নিতে কতটা প্রস্তুত

বিয়ে মানে শুধু একে অপরকে ভালোবাসা নয়, বরং একে অপরের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হওয়া। সংসার চালানো, সিদ্ধান্ত নেওয়া, বিপদে পাশে থাকা—এসব দাম্পত্য জীবনের প্রতিদিনকার বাস্তবতা।আপনি এবং আপনার সঙ্গী কি এমন দায়িত্ব পালনে সচেতন ও আগ্রহী? যদি না হন, তবে বিয়ের আগে আরও সময় নিন।

৬. আর্থিক বিষয় নিয়ে স্বচ্ছতা

অনেকেই আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে অস্বস্তি বোধ করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বোঝাপড়াই বিয়ের পর একসঙ্গে টিকে থাকার অন্যতম ভিত্তি।

বিয়ের আগে জানুন—আপনার সঙ্গীর উপার্জন কেমন, খরচের ধরন কেমন, সঞ্চয় বা ঋণের অবস্থা কী। নিজের দিক থেকেও পরিষ্কার থাকুন।

বিয়ে জীবনের এক নতুন অধ্যায়, যার শুরুটা হতে হবে পরিণত সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে। শুধু আবেগ নয়, সম্পর্কের বাস্তব দিকগুলো বুঝেই তবেই বিয়ের প্রস্তাব দিন।

আপনার সম্পর্ক যদি এই ৬টি বিষয়ে ইতিবাচক হয়—তবে নিশ্চিন্তে বলতে পারেন, হ্যাঁ, এখনই সময় জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সিদ্ধান্ত নেওয়ার।

FAQ (প্রশ্নোত্তর):

প্রশ্ন ১: বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে কী বিষয়গুলো দেখা উচিত?

উত্তর: সম্পর্কের শান্তি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মিল, সম্পর্কের স্থিতিশীলতা, আগের সম্পর্ক থেকে মুক্তি, দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা ও আর্থিক স্বচ্ছতা যাচাই করা উচিত।

প্রশ্ন ২: ভালোবাসা থাকলেই কি বিয়ে করা উচিত?

উত্তর: শুধু ভালোবাসা যথেষ্ট নয়, বিয়ের জন্য দরকার বোঝাপড়া, দায়িত্ববোধ ও বাস্তব পরিকল্পনা।

প্রশ্ন ৩: আর্থিক প্রস্তুতি ছাড়া বিয়ে কি ঝুঁকিপূর্ণ?

উত্তর: হ্যাঁ, আর্থিক অস্থিরতা বিয়ের পর টানাপোড়েন তৈরি করতে পারে। তাই বিয়ের আগে দু’জনেরই আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা জরুরি।

প্রশ্ন ৪: বিয়ের আগে আগের সম্পর্কের প্রভাব থাকলে কী করবেন?

উত্তর: আগে নিজেকে সময় দিন এবং সম্পর্ক থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়ে তবেই নতুন সম্পর্কে অগ্রসর হোন।

প্রশ্ন ৫: বিয়ের আগে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না মিললে দাম্পত্য জীবনে মতবিরোধ ও হতাশা তৈরি হতে পারে।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ