ঢাকা, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার: আবারও গোল, ৯০ মিনিটের খেলা শেষ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ১৭:১৯:৩২
বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার: আবারও গোল, ৯০ মিনিটের খেলা শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ম্যাচটি কেবল একটি খেলার নাম নয়—এ ছিল স্বপ্ন দেখার সাহসের গল্প। নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে স্বাগতিক মিয়ানমারের বিপক্ষে এক অবিস্মরণীয় লড়াইয়ে ৯০ মিনিট শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ২-১ ব্যবধানে। যদিও ম্যাচের শেষ সময়ে এসে চাপ তৈরি করেছে মিয়ানমার, তবুও লাল-সবুজ জার্সিধারীরা ধরে রেখেছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব।

ঋতুপর্ণার জোড়া গোল—সাহস ও সম্ভাবনার প্রতীক

ম্যাচের ১৮তম মিনিটে আসে প্রথম গোল। ফ্রি কিক থেকে ঋতুপর্ণা চাকমার নেওয়া শট মিয়ানমারের রক্ষণের কাছে আটকে গেলেও ফিরতি বলে নেওয়া তার কোনাকুনি শট জালে জড়ায়। এই গোল শুধু স্কোরলাইন বদলায়নি, বদলে দিয়েছে ম্যাচের গতি এবং বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস।

৭১তম মিনিটে আবারও সেই চেনা নাম—ঋতুপর্ণা। দারুণ একটি পাস পেয়ে দ্বিতীয় গোলটি করে দেন তিনি, যা লাল-সবুজদের ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেয়। এই গোলটি বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেয় নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বের দিকে।

৮৮ মিনিটে মিয়ানমারের গোল, চাপে পড়ে বাংলাদেশ

যেখানে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশই মাঠের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিয়ে নিয়েছে, ঠিক তখনই ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে একটি গোল করে ম্যাচে ফিরে আসে মিয়ানমার। রক্ষণভাগের সামান্য অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে বল জালে পাঠান মিয়ানমারের এক ফরোয়ার্ড। স্কোরলাইন হয়ে যায় ২-১, এবং এক লহমায় জমে ওঠে ম্যাচের উত্তেজনা।

এই গোল বাংলাদেশের জন্য এক সতর্কবার্তা—ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত নয়। শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত লড়াইটা এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধে মিশে যায় ঘাম, সাহস আর প্রত্যয়

পুরো ম্যাচজুড়ে বাংলাদেশ দল যে ধরনের ফুটবল খেলেছে, তা ছিল নজরকাড়া। আত্মবিশ্বাস, পরিকল্পনা, পাসিং, প্রেসিং—সব জায়গাতেই তারা মিয়ানমারকে ছাপিয়ে গেছে বেশিরভাগ সময়। বিশেষ করে শামসুন্নাহারের দৌড় এবং বল কন্ট্রোল, অধিনায়ক আঁখির নেতৃত্বে রক্ষণভাগ, আর ঋতুপর্ণার শেষাংশে দ্যুতি—সব মিলে একত্রে গড়ে উঠেছে এক সাহসী বাংলাদেশ।

এ জয় শুধু পয়েন্ট টেবিলের নয়—এটি একটি প্রজন্মের স্বপ্ন

যদি এই ম্যাচ জয় নিয়ে শেষ করা যায়, তবে সেটি হবে বাংলাদেশের নারী ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য। কারণ এটি হবে বাংলাদেশ নারী দলের প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার টিকিট নিশ্চিত করা, যেটি বসবে ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায়।

এই ম্যাচ একটি বিজয়ের গল্প নয়, বরং একটি সামাজিক পরিবর্তনের চিত্রপট। যেখানে মেয়েরা ফুটবল মাঠে শুধুমাত্র বলের পেছনে দৌড়ায় না—তারা দৌড়ায় নিজেদের স্বপ্ন, নিজের পরিচয় এবং দেশের মর্যাদা কাঁধে নিয়ে।

শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা, জাতি তাকিয়ে আছে ফলাফলের দিকে

৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন বলছে—বাংলাদেশ ২, মিয়ানমার ১। অতিরিক্ত সময় চলছে। পুরো জাতি এখন টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখে বসে আছে—এই কিশোরী মেয়েগুলোর হাত ধরেই কি ইতিহাসের নতুন পাতায় লিখতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ’ নামটি?

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ