ঢাকা, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

দুই মাসে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেনে রেকর্ড ২,৫৫৬ কোটি টাকা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ২০:০৮:৪৩
দুই মাসে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেনে রেকর্ড ২,৫৫৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দুই মাসে ব্যাংক খাতের শেয়ারে ২,৫৫৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। একই সময় ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ৪৫৩ পয়েন্ট। দীর্ঘ সময়ের পতনের ধারার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থা ফিরতে শুরু করেছে, যেখানে ব্যাংক খাতের অংশগ্রহণ দৃশ্যমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

সূচকের পরিবর্তন

২০২৩ সালের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া টানা নিম্নমুখী প্রবণতা ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সময়ে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ১,৪০০ পয়েন্ট কমে যায়। তবে ২৯ মে থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দেড় মাসে সূচকে ৪৫৩ পয়েন্টের ইতিবাচক সংশোধন বাজারে কিছুটা স্থিতি এনেছে।

ব্যাংক খাতের লেনদেনের বিশ্লেষণ

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে ব্যাংক খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ২,৫৫৬ কোটি টাকা। গড় হিসেবে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২৮৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যেখানে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে—৪৪৯ কোটি টাকা।

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংক খাতেই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫,৯৪২ কোটি টাকা। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ৪৮০ কোটি টাকার।

আস্থার পেছনের উপাদান

বিনিয়োগ বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কিস্তি ছাড় এবং রাজনৈতিক পূর্বাভাস স্পষ্ট হওয়ায় বাজারে আস্থা ফিরছে। ব্যাংক খাতের শেয়ার দীর্ঘদিন ধরে অবমূল্যায়িত থাকায় বিনিয়োগকারীরা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ মূল্যস্তরে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন।

একই সঙ্গে, কিছু শীর্ষ ব্যাংক ট্রেজারি বন্ডে ভালো আয় দেখানোয় বাজারে আগ্রহ বেড়েছে। ব্যাংক খাতে আর্থিক সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণমূলক অগ্রগতির বিষয়গুলোও বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে।

বাজার ঝুঁকি ও সতর্কতা

যদিও সাম্প্রতিক কিছু সূচক ইতিবাচক, তবু বাজারে কিছু লভ্যাংশ না দেওয়া বা দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ আছে। এসব কোম্পানির মৌলিক ভিত্তি দুর্বল, যা ভবিষ্যতে বাজারে নতুন ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

সার্বিক বাজার পরিস্থিতি

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ডিএসইএক্স সূচক ৭.২ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩৯ শতাংশ। একমাত্র সিরামিক খাত ছাড়া বাকি খাতগুলোতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।

বহুজাতিক এবং বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্সও ছিল দুর্বল। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

মাসওয়ারি বিদেশি বিনিয়োগ (ডলার ভিত্তিক):

জানুয়ারি: ১ কোটি ৫০ লাখ

ফেব্রুয়ারি: ২ কোটি ২০ লাখ

মার্চ: ১ কোটি ৪০ লাখ

এপ্রিল: ৩ কোটি ৫০ লাখ

মে: ৪ কোটি ১০ লাখ

জুন: ২ কোটি ৩৪ লাখ

সাম্প্রতিক সময়ে সূচকের উন্নয়ন ও ব্যাংক খাতে সক্রিয় লেনদেন বাজারে কিছুটা স্থিতি আনলেও, পুরো বাজার এখনো প্রত্যাশিত গতিতে ফিরে আসেনি। বিনিয়োগকারীদের জন্য সময়মতো তথ্য বিশ্লেষণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দেওয়াই হবে কার্যকর কৌশল।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ