ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-২০ সিরিজ: সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠলো যার হাতে

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২৪ ২২:৩৬:৩৪
বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-২০ সিরিজ: সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠলো যার হাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, ২৪ জুলাই ২০২৫ — পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের দাপুটে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে শেষ হলো আরেকটি চমকপ্রদ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেলেও সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে আগেই। তবে ম্যাচশেষে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল একজন নাম—জাকের আলি। তিন ম্যাচে মাত্র ৭১ রান করেই উঠিয়ে নিলেন সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

এই অর্জনের পেছনে ছিল চাপের মুহূর্তে তার শান্ত, কার্যকরী এবং প্রয়োজনীয় ইনিংস, যা দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। যেখানেই টপ অর্ডার ব্যর্থ, সেখানেই দাঁড়িয়ে গেছেন জাকের।

সিরিজ সেরার পুরস্কার জয়ের নেপথ্যে

সিরিজজুড়ে কোনো ম্যাচেই বড় রান করতে পারেননি তিনি। তবুও, প্রতিটি ইনিংস ছিল পরিস্থিতি বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ করে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে যখন বাংলাদেশ ব্যাটিং চাপে, তখন তিনি দাঁড়িয়ে যান। রান তাড়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ধৈর্য রেখে খেলেছেন, স্ট্রাইক রোটেট করেছেন, সঠিক সময়ে বাউন্ডারি বের করেছেন এবং দলকে এনে দিয়েছেন জয়ের নায়কোচিত অবদান।

যেখানে অনেকেই বড় রান করে সিরিজ সেরা হন, সেখানে জাকের আলি হয়েছেন কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত।

শেষ ম্যাচে হারের বেদনা, তবুও সিরিজ বাংলাদেশের

তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তোলে ১৭৮ রান ৭ উইকেট হারিয়ে। সাহিবজাদা ফারহান ৬৩ রান করেন ৪১ বলে, সঙ্গে ছিলেন হাসান নবাজ ও মোহাম্মদ নওয়াজ।

বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ ৩টি, নাসুম আহমেদ ২টি উইকেট নেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ একেবারেই ভেঙে পড়ে। ২৫ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। কিছুটা লড়াই করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, করেন ৩৫ রান, কিন্তু তাতে বড় ব্যবধানে হার এড়ানো যায়নি। বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১০৪ রানে।

সিরিজ ফলাফল

প্রথম টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ জয়ী

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ জয়ী

তৃতীয় টি-টোয়েন্টি: পাকিস্তান জয়ী

তিন ম্যাচের সিরিজ শেষে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয়। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের বোলিং, ফিল্ডিং এবং চাপ সামলানো ব্যাটিং ছিল প্রশংসনীয়। তরুণদের এই জয়ে দেখা গেছে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত একটি প্রতিশ্রুতিশীল দল।

বাংলাদেশের তরুণ শক্তি ও নেতৃত্ব

এই সিরিজের বড় প্রাপ্তি ছিল তরুণদের আত্মবিশ্বাস। তাসকিন আহমেদ ছিলেন ধারাবাহিক, সাইফউদ্দিন লোয়ার অর্ডারে লড়াই করেছেন, আর জাকের আলি মধ্যভাগে টিকে থেকে রান তুলে দলে স্থিতি এনেছেন। অধিনায়ক লিটন দাস যদিও ধারাবাহিক নন, তবে নেতৃত্বে তার কিছু সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন বিশ্লেষকেরা।

পাকিস্তানের পক্ষে উজ্জ্বল ফারহান

তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান দারুণ ব্যাট করেছেন। পুরো ইনিংসে নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনে খেলেছেন এবং একাই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে আগের দুই ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিং ব্যর্থতা ও বোলিংয়ের অগোছালো পারফরম্যান্সের কারণে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যায়।

জাকের আলিকে নিয়ে সামনে পথচলা

জাকের আলির মতো খেলোয়াড়দের এইরকম চাপমুক্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটিং সামর্থ্য দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় দলের জন্য বড় সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। ভবিষ্যতে বড় সিরিজ বা বিশ্বকাপে এমন খেলোয়াড়রা ম্যাচের ভাগ্য গড়ার মতো ভ‚মিকা রাখতে পারেন। সিরিজ সেরা হয়ে তিনি শুধু নিজেকে নয়, বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ভবিষ্যতকেও সমৃদ্ধ করলেন।

সিরিজ সেরার পারফরম্যান্স: জাকের আলি

ম্যাচ: ৩

মোট রান: ৭১

গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস: দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচ জেতানো অবদান

ভূমিকা: মিডল অর্ডারে স্থিতি এবং চাপ সামলানো ব্যাটিং

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ