ঢাকা, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

কলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা জানুন আজই

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১১:৩৪:০১
কলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা জানুন আজই

নিজস্ব প্রতিবেদক: কলা একটি জনপ্রিয় ও সহজলভ্য ফল, যা আমাদের খাদ্যতালিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাদের পাশাপাশি এই ফলটি শরীরের জন্য বহুমুখী পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তবে প্রতিদিন কতটা কলা খাওয়া উচিত এবং তা আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা অনেকেই জানেন না। এই প্রতিবেদনটি কলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ এবং স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিতভাবে সাজানো হয়েছে।

কলায় কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে

কলায় রয়েছে—

পটাসিয়াম

ভিটামিন বি৬

ভিটামিন সি

ডায়েটারি ফাইবার

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট

এই উপাদানগুলো হৃদযন্ত্র, পাচনতন্ত্র, স্নায়ু এবং ত্বকসহ শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

দৈনিক কতটা কলা খাওয়া উচিত

একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রতিদিন ১ থেকে ২টি মাঝারি আকারের কলা খাওয়া নিরাপদ ও উপকারী। এর চেয়ে বেশি খাওয়া হলে শরীরের পটাসিয়াম মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

কারণ ব্যাখ্যা:

একটি মাঝারি কলায় থাকে প্রায় ৪০০-৪৫০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম

দৈনিক পটাসিয়ামের গড় চাহিদার প্রায় ১০-১২ শতাংশ পূরণ করে

অতিরিক্ত পটাসিয়াম হৃদস্পন্দন ব্যাহত করতে পারে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে "হাইপারকালেমিয়া" নামে পরিচিত

কলা খাওয়ার সেরা সময়

সকালের নাশতায়

ব্যায়ামের পর

বিকেলের হালকা খাবার হিসেবে

এই সময়গুলোতে কলা খেলে শরীর দ্রুত শক্তি পায় এবং হজমে সহায়তা করে।

স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

পটাসিয়াম রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

২. হজমে সহায়তা করে

ফাইবার হজমক্রিয়াকে সহজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

কলা খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।

৪. মানসিক চাপ ও ক্লান্তি কমায়

ভিটামিন বি৬ স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখে এবং মেজাজ ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।

৫. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

ভিটামিন সি শরীরকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

যাদের সতর্ক থাকতে হবে

ডায়াবেটিস রোগী

কলায় শর্করার পরিমাণ বেশি, তাই গ্লাইসেমিক কন্ট্রোল নিশ্চিত করতে দিনে অর্ধেক বা একটি কলায় সীমাবদ্ধ থাকা ভালো।

কিডনি রোগী

কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করলে অতিরিক্ত পটাসিয়াম শরীরে জমে যেতে পারে, যা মারাত্মক হতে পারে।

হজমে সমস্যা থাকলে

কিছু মানুষ বেশি কলা খেলে পেট ফাঁপা বা গ্যাসের সমস্যা অনুভব করতে পারেন।

কলা একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর ফল, যা সঠিক পরিমাণে খাওয়া হলে শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। প্রতিদিন ১ থেকে ২টি কলা অধিকাংশ মানুষের জন্য যথেষ্ট। যারা ডায়াবেটিস বা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে কলাকে প্রতিদিনের খাবারে যুক্ত করুন, তবে সচেতনভাবে এবং নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়।

FAQ:

Q: দিনে কতটা কলা খাওয়া উচিত?

A: সাধারণত ১ থেকে ২টি মাঝারি আকারের কলা প্রতিদিন খাওয়া নিরাপদ।

Q: অতিরিক্ত কলা খেলে কী সমস্যা হতে পারে?

A: অতিরিক্ত পটাসিয়াম হৃদযন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Q: ডায়াবেটিস রোগীরা কি কলা খেতে পারেন?

A: হ্যাঁ, তবে সীমিত পরিমাণে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

Q: কলা কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?

A: হ্যাঁ, ফাইবার থাকার কারণে কলা ক্ষুধা কমায় ও দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ