ঢাকা, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

শেয়ারবাজারে নতুন বিনিয়োগের ধারা, বড় পতন সত্ত্বেও লেনদেন শক্তিশালী

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ১৮:২১:০৩
শেয়ারবাজারে নতুন বিনিয়োগের ধারা, বড় পতন সত্ত্বেও লেনদেন শক্তিশালী

সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে সূচকের বড় পতন ঘটলেও, লেনদেনের শক্তিশালী গতিপথ বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ভিন্ন বার্তা নিয়ে এসেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সূচকের এই ওঠানামা বাজারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, লেনদেনের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট প্রমাণ করে যে বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন না। বরং অনেকেই এই পতনকে নতুন করে বিনিয়োগের এক সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

গত রবিবার (০৭ সেপ্টেম্বর), সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন রেকর্ড করা হয়। এর পরপরই টানা তিন দিনে সূচক ১৭৩ পয়েন্ট কমে যায়। তবে, সূচকের এই নিম্নমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও দৈনিক লেনদেন ৯৫০ কোটি টাকার উপরেই স্থিতিশীল ছিল।

লেনদেনের স্থিতিশীলতা এবং বাজারের অন্তর্নিহিত শক্তি:

বিশ্লেষকদের মতে, এই স্থিতিশীল লেনদেন বাজারের পর্যাপ্ত তারল্য এবং এর মৌলিক শক্তিকে নির্দেশ করে। একটি শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান কর্মকর্তা এই বিষয়ে বলেন, "সূচক ওঠানামা বাজারের স্বাভাবিক গতি। কিন্তু লেনদেনের পরিমাণ বুঝিয়ে দেয় যে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখনো অটুট। এমন পতন আসলে আতঙ্কের কোনো কারণ নয়, বরং ভালো এবং সম্ভাবনাময় শেয়ার কেনার এটিই উপযুক্ত সময়।" বাজার সংশ্লিষ্টদের ধারণা, যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের সঙ্গে মৌলভিত্তিক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি ভবিষ্যতে লাভবান হওয়ার সেরা সুযোগ এনে দিতে পারে।

আজকের (বুধবারের) বাজার পরিস্থিতি:

আজ (বুধবার) ডিএসইতে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই তা পতনে রূপ নেয়। এরপর আবার সূচকের উত্থান দেখা যায় এবং স্বাভাবিক ওঠানামার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলতে থাকে। তবে, দুপুর পৌনে ১টার পর সূচকের একটানা পতন শুরু হয়, যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। দিনশেষে সূচকের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে মোট লেনদেনও কমেছে। একইসাথে, লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর হ্রাস পেয়েছে।

ডিএসই'র পরিসংখ্যান:

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক, ডিএসইএক্স, ৬৫.১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৭৩.১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য দুটি সূচকের মধ্যে, ডিএসইএস ১৫.৭৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮৮.২২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৯২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৯.৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে আজ মোট ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৪৩টির শেয়ার দর বেড়েছে, ৩১৩টির কমেছে এবং ৪১টির দর অপরিবর্তিত ছিল। ডিএসইতে মোট ৯৪৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা, অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় ২২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেন কমেছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই):

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক কমলেও টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে। তবে, লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমেছে। এদিন সিএসইতে ২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার লেনদেনের চেয়ে বেশি।

আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে, ১৮৩টির কমেছে এবং ২৫টির অপরিবর্তিত ছিল। এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক, সিএএসপিআই, ১৫৫.৩২ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৪১৫.২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন এই সূচক ২১৪.১৩ পয়েন্ট বেড়েছিল।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ