ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

ডিম চড়া দামে, তবে সবজি ও তেলের দামে মিলছে কিছুটা স্বস্তি

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৩:৫৯:৪৮
ডিম চড়া দামে, তবে সবজি ও তেলের দামে মিলছে কিছুটা স্বস্তি

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর: রাজধানী ঢাকার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে মিশ্র চিত্র দেখা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমলেও, খামারের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য নতুন মাথাব্যথার কারণ। অন্যদিকে, সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা এলেও সরকারি অনুমোদনের অভাবে আপাতত পূর্বের দামেই পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, রামপুরা এবং মালিবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

সবজির দামে স্বস্তি, আসছে শীতের আগমনী বার্তা

সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কিছুটা নিম্নমুখী হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। বিক্রেতারা আশা করছেন, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে। বিশেষ করে শিম ও ফুলকপির মতো আগাম সবজি বাজারে এলে দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বর্তমানে বাজারে আলুর দাম বেশ সহনীয়। রামপুরার এক ভ্যানে ৬ কেজি আলু ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যদিও বাজারের দোকানে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকায় আলু পাওয়া যাচ্ছে। একইভাবে পেঁপেও ২০-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পটলের দাম এখনও ৭০-৮০ টাকা কেজি। তবে বেগুনের দাম ৮০-১০০ টাকায় নেমে এসেছে, যা গত সপ্তাহেও ১২০-১৬০ টাকা ছিল। মুলা, শসা, কচুর মুখি ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দামও কিছুটা কমে প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ১৬০ টাকার নিচে ছিল না।

তবে শীতকালীন আগাম সবজি শিম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, কেজিপ্রতি ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, কইডা, কাকরোলসহ অন্যান্য সবজি ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আসা বরবটি এখনও ১০০ টাকা কেজি।

সবজি বিক্রেতা জুবায়ের আলী জানিয়েছেন, "চলতি সপ্তাহে সবজির দাম নতুন করে বাড়েনি, বরং কিছুটা কমেছে। কোনো অপ্রত্যাশিত সমস্যা না হলে সবজির দাম আর বাড়বে না, বরং ধীরে ধীরে শীতের সবজি বাজারে এলে দাম আরও কমবে।"

স্থির রয়েছে ভোজ্যতেলের দাম, স্বস্তিতে ক্রেতারা

মিল মালিকরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে আপাতত দাম বাড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে রাজধানীর বাজারে ভোজ্যতেলের দাম আগের মতোই রয়েছে, যা ক্রেতাদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। মিল মালিকরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ৬ টাকা এবং পাম তেলে ১৩ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৩৭৫-৩৭৮ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৯২০-৯২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা পূর্বের দামের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ। খোলা সয়াবিন তেল ১৮৫-১৯০ টাকা লিটার এবং খোলা পাম তেল ১৭০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. সিফাত বলেন, "ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির খবর শোনা গেলেও এখনো কার্যকর হয়নি। ডিলাররাও দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কিন্তু ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাম ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গেছেন, তাই আপাতত দাম বাড়েনি।"

ডিমের দাম বৃদ্ধি, অন্যান্য নিত্যপণ্যে স্থিতিশীলতা

ভোজ্যতেল ছাড়াও চিনি, ডাল, আদা, রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম মোটামুটি স্থির রয়েছে। বাজারে চিনি ১০৫-১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট দানার মসুর ডাল ১৫০-১৬০ টাকা, মাঝারি ১৩০-১৪৫ টাকা এবং বড় দানার ডাল ১১৫-১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকা কেজিতে স্থির আছে।

তবে খামারের মুরগির ডিমের দাম গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিম ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও বড় বাজারগুলোতে ডিমের দাম এখনো আগের মতোই রয়েছে।

মুরগির বাজারে, সোনালি জাতের মুরগি ২৯০-৩১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৩২০ টাকার বেশি ছিল। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ