ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

কিডনির পাথর থেকে মুক্তি? এই খাবারগুলো আজই শুরু করুন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৬:২৯:২৬
কিডনির পাথর থেকে মুক্তি? এই খাবারগুলো আজই শুরু করুন

কিডনিতে পাথরের সমস্যা এখন আর বিরল নয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরে পানির অভাবই মূলত এই সমস্যার জন্ম দেয়। তবে একবার পাথর ধরা পড়লে বা অপারেশন হলেও ভবিষ্যতে তা ফিরে আসার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই কারণে, পাথর মুক্ত থাকার জন্য একটি সুপরিকল্পিত ডায়েট বা খাদ্য তালিকা মেনে চলা অপরিহার্য।

আসুন, জেনে নিই কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায় কোন কোন খাদ্য উপাদানকে আপনার দৈনিক রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক।

১. শরীরকে আর্দ্র রাখা: মূল অস্ত্র তরল

কিডনিকে সচল রাখতে এবং জমে থাকা খনিজ পদার্থ ও বর্জ্যগুলো শরীর থেকে বের করে দিতে, পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করা প্রথম এবং প্রধান শর্ত। প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য দিনে অন্তত ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করতেই হবে। তবে ফলের জুস বা অন্যান্য পানীয়ের মাধ্যমে দৈনিক মোট ৫-৬ লিটার তরল গ্রহণ করলে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায়।

২. পাথর গলাতে সাইট্রেট সমৃদ্ধ ফল

পাতিলেবু এবং কমলালেবুর মতো সাইট্রিক অ্যাসিডে ভরপুর ফলগুলি এক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী।

এই সাইট্রিক অ্যাসিড বিশেষত ক্যালসিয়াম অক্সালেট জাতীয় পাথরকে ভেঙে দিতে বা দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে।

লেবুর রস মূত্রের অম্লতা কমিয়ে দেয়, ফলে নতুন করে পাথর জমার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

৩. মূত্রপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার

কলা, পেঁপে বা রসালো তরমুজের মতো পটাশিয়ামে পরিপূর্ণ ফলগুলি খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।

এই ফলগুলিতে থাকা জলের পরিমাণ প্রস্রাবের স্বাভাবিক গতি বজায় রাখে।

বিশেষ করে তরমুজের প্রাকৃতিক ডাইইউরেটিক ক্ষমতা কিডনিকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশেষভাবে সহায়ক।

৪. টক্সিন দূরীকরণে ফাইবার ও শাকসবজি

লাউ, ঝিঙে, পালং, করলা বা পাটশাকের মতো ফাইবার-যুক্ত ও জলীয় সবজি দৈনিক মেনুতে রাখুন। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে:

শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়।

ক্যালসিয়াম জমাট বেঁধে পাথর তৈরি হওয়া রোধ হয়।

৫. সঠিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম: দুধ ও দই

যদিও অনেকে ভুলবশত মনে করেন ক্যালসিয়াম পাথর বাড়ায়, কিন্তু বাস্তবে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম শরীরে অক্সালেট শোষণের হার কমিয়ে দেয়। এর ফলে পাথরের ঝুঁকি বরং কমে। তাই, কিডনি সুস্থ রাখতে অবশ্যই পরিমিত মাত্রায় দুধ ও দই গ্রহণ করা যেতে পারে।

৬. খনিজের ভারসাম্য রক্ষায় ডাবের পানি

ডাবের পানি শরীর শীতল রাখে, খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং প্রস্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এটি ছোট আকারের পাথরগুলিকে গলিয়ে দিতেও সহায়তা করতে পারে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অপরিহার্য

মনে রাখা দরকার, এই খাদ্যবিধি কেবল কিডনি-পাথরের জন্যই প্রযোজ্য। যদি আপনার কিডনির সমস্যা ছাড়াও আগে থেকেই অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতা থাকে, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই খাদ্যতালিকা অনুসরণ করা উচিত নয়।

FAQ (Frequently Asked Questions) ও উত্তর

প্রশ্ন ১: কিডনিতে পাথর হলে দৈনিক কতটুকু পানি পান করা উচিত?

উত্তর: দিনে কমপক্ষে ৩–৪ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন। জুস বা অন্যান্য তরল খাবারের সাথে মোট ৫-৬ লিটার তরল গ্রহণ করলে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে এবং কিডনির বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যায়।

প্রশ্ন ২: ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ বা দই কি কিডনি পাথরের জন্য ক্ষতিকর?

উত্তর: না, পরিমিত পরিমাণে দুধ ও দই খাওয়া উপকারী। কারণ পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম শরীরে অক্সালেট শোষণ কমিয়ে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।

প্রশ্ন ৩: কোন ধরনের ফল কিডনির পাথর ভাঙতে ও গলাতে সাহায্য করে?

উত্তর: পাতিলেবু ও কমলালেবুর মতো সাইট্রেট সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উপকারী। সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর ভাঙতে ও গলাতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ৪: কিডনি পরিষ্কার রাখতে ডাবের পানি কীভাবে সহায়ক?

উত্তর: ডাবের পানি শরীর ঠাণ্ডা রাখে, প্রস্রাবের প্রবাহ বাড়ায় এবং মিনারেলের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এটি কিডনিতে ছোট পাথর গলাতে সহায়তা করতে পারে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আজ ৮ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড সভা: আসছে ইপিএস

আজ ৮ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড সভা: আসছে ইপিএস

বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে আজ আটটি ভিন্ন কোম্পানি। ঘোষণা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদ সভা (বোর্ড সভা) আজকের দিনটিতে (১০... বিস্তারিত