ঢাকা, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

নাঈমের অলরাউন্ড নৌপূন্যে জয় পেলো রূপগঞ্জ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২১ জুন ২২ ১৯:১৫:৪২
নাঈমের অলরাউন্ড নৌপূন্যে জয় পেলো রূপগঞ্জ

নাহ, চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়নি রূপগঞ্জ। বরং মুখোমুখি হয়েছিল তারা বিব্রতকর অবস্থার। গত আসরের রানার্সআপ দল তারা, সেবার শিরোপা পায়নি কেবল রান রেটে পিছিয়ে থাকায়। সেই দলই কিনা এবার পড়ে গিয়েছিল রেলিগেশনের শঙ্কায়! টিকে থাকার শেষ লড়াইয়ে নাঈমের দারুণ ক্যামিও বাঁচিয়ে দিল তাদের। ওই উচ্ছ্বাসে তাই বেশি মিশে স্বস্তি।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে তলানির লড়াইয়ে ওল্ড ডিওএইচএসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রিমিয়ারে টিকে রইল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আগেই রেলিগেশন নিশ্চিত হয়ে যাওয়া পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে প্রথম বিভাগে নেমে গেল ওল্ড ডিওএইচএস।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ওল্ড ডিওএইচএসের ইনিংসে কয়েক দফায় বৃষ্টি বাধা পড়ার পর ম্যাচ নেমে আসে ১৮ ওভারে। আনিসুল ইসলাম ইমনের দারুণ ফিফটির পরও তারা করতে পারে কেবল ১১৭ রান।

রূপগঞ্জের রান তাড়ায় কয়েক দফার অনিশ্চয়তা শেষে ব্যবধান গড়ে দেন নাঈম। জিতে যায় তারা ৫ বল বাকি রেখে।

শেষ দিকে যখন ১৬ বলে প্রয়োজন ২২ রান, ওল্ড ডিওএইচএসের সেরা বোলার আব্দুর রশিদের পরপর দুই বলে ছক্কা ও চারে সমীকরণ সহজ করে দেন নাঈম। পরের ওভারে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন আলিস আল ইসলামকে। শেষ ওভারের প্রথম বলে আসাদুজ্জামান পায়েলের বলে বাউন্ডারি মেরে দলকে জেতান তিনি।

বল হাতে ২ উইকেট আর ১৪ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা নাঈমই।

বিফলে গেল আনিসুল ইসলাম ইমনের ফিফটি।বিফলে গেল আনিসুল ইসলাম ইমনের ফিফটি।নাঈমকে এতটা দায়িত্ব নিতে হতো না, যদি সাব্বির রহমান ও মেহেদি মারুফের কেউ শেষ করে আসতে পারতেন কাজ। তৃতীয় উইকেটে এই দুজনের জুটিতেই জয়ের দিকে এগোচ্ছিল রূপগঞ্জ। ৩০ বলে যখন প্রয়োজন ৩৩ রান, উইকেট বাকি তখন ৮টি। আব্দুর রশিদের পরপর দুই বলে উইকেট ছুঁড়ে দেন দুজনই।

২২ বলে ৩০ করে মেহেদি মারুফ আউট হন পুল শটে। পরের বলে সাব্বির ৩১ বলে ৩০ করে ক্যাচ দেন কাভারে। ওই ওভারে রশিদ দেন মাত্র ৩ রান। এই পেসারের বোলিং বিশ্লেষণ তখন ৩-০-৯-৩! আরও কয়েকটি ডট বলে জমে ওঠে নাটকীয়তা। কিন্তু নাঈম হয়ে ওঠেন নায়ক।

ম্যাচের প্রথম ভাগে কেবল আনিসুল ইসলাম ইমন ছাড়া ভালো করতে পারেননি ওল্ড ডিওএইচএসের কেউ। আনিসুল খেলেন ৩৯ বলে ৫১ রানের ইনিংস।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওল্ড ডিওএইচএস বড় ধাক্কা খায় দ্বিতীয় ওভারেই। বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদের সোজা বল স্লগ করার চেষ্টায় বোল্ড হন রাকিন আহমেদ। আগের ম্যাচে ৯২ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান এবার শেষ ২ রানেই।

দ্বিতীয় উইকেটে আনিসুল ও মাহমুদুল হাসান জয় গড়েন ৫৮ রানের জুটি। তবে তাতে বল লেগে যায় ৫৩টি! আনিসুলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পরও জুটির মন্থরতার মূল কারণ মাহমুদুলের ছন্দ না পাওয়া। তরুণ এই ব্যাটসম্যানের রান এক পর্যায়ে ছিল ২৮ বলে ১৩।

পরে আলি হোসেনের বলে একটি ছক্কা মারলেও মাহমুদুল পুষিয়ে দিতে পারেননি ঘাটতি। ওই ওভারেই সোজা এক বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি ৩১ বলে ২০ রান করে।

আলি হোসেনের পরের ওভারে স্কুপ করে বাউন্ডারি মেরে আনিসুল ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৭ বলে। ওই ওভারেই তিনি বিদায় নেন পুল খেলে, স্কয়ার লেগে দারুণ ডাইভিং ক্যাচ নেন নাবিল সামাদ।

এরপর মিডল অর্ডারে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় সফল হননি কেউ। ঝলমলে রোদে ইনিংস শুরুর পর আকাশ মেঘলা হয়ে আসা, বার বার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ায় ব্যহত হয় তাদের ছন্দ। শেষ দিকে আলিস আল ইসলামের ১৬ বলে ২০ রানের ইনিংসে একটু বাড়ে রান।

তাতে লড়াই হলো, লাভ হলো না ওল্ড ডিওএইচএসের। দিনটি ছিল নাঈম ও রূপগঞ্জের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওল্ড ডিওএইচএস: ১৮ ওভারে ১১৭/৬ (আনিসুল ৫১, রাকিন ২, মাহমুদুল ২০, রায়ান ১২, মোহাইমিনুল ১, প্রিতম ০, আলিস ২০*, রাকিবুল ০*; শহিদ ২-০-২২-০, নাবিল ৪-০-১৫-১, সানজামুল ৪-০-১৫-০, মুক্তার ৩-০-২৪-০, আলি হোসেন ৩-০-২৩-৩, নাঈম ২-০-১২-২)।।

রূপগঞ্জ: (লক্ষ্য ১৮ ওভারে ১২২) ১৭.১ ওভারে ১২৪/৪ (আজমির ২০, জাকের ৮, সাব্বির ৩০, মারুফ ৩০, আল আমিন ৭*, নাঈম ২৭*; রকিবুল ৩-০-২৫-০, শান্ত ২-০-২১-০, রশিদ ৪-০-২২-৩, পায়েল ৩.১-০-১৯-১, আলিস ৪-০-২৩-০, আনিসুল ১-০-১৪-০)।

ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাঈম ইসলাম।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ