৩১ বছর আগের ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনলো আবাহনী-মোহামেডান

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে গ্যালারিতে এমন দৃশ্য এর আগে দেখা গেছে একবারই, ১৯৮৭ সালের লিগের প্লে অফে। আজকের দর্শক শূন্য গ্যালারির ঘটনা মোহামেডানের সাবেক তারকা কায়সার হামিদকে নিয়ে গেল ৩১ বছর আগে।

দর্শক শূন্য গ্যালারিতে খেলা হওয়ার প্রেক্ষাপটটি বললেন কায়সার, ‘তখন ২ পয়েন্টের খেলা। আবাহনীর চেয়ে আমরা ২ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিলাম। লিগের শেষ ম্যাচে আবাহনীকে হারিয়ে আমরা তাদের সমান পয়েন্ট হই। লিগের নিয়ম

অনুযায়ী প্লে অফ ম্যাচ। সেই প্লে অফ ম্যাচে দুই দলের দর্শকরা খুবই উত্তেজিত ছিল। ৯০ মিনিট খেলা ড্র ছিল। তখন আমরাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে দুই দলের খেলোয়াড়রা যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করি।’ ফুটবল ফেডারেশন খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত মানেনি। এক মাস পর আর্মি স্টেডিয়ামে পুনরায় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় । সেই দর্শকশুন্য ম্যাচে মোহামেডান জিতে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আবাহনীর অধিনায়ক ছিলেন সেই ম্যাচে শেখ মোহাম্মদ আসলাম। তিনি সেই দর্শকশুন্য মাঠে খেলতে পারেননি। এই দুঃখ এখনো রয়েছে তার, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ওই দিন ম্যাচের ফলাফল মীমাংসা হলে দুই দলের অনেক সমর্থক প্রাণও হারাতে পারতো।

অবস্থা বেগতিক দেখে দুই দলের খেলোয়াড়রা ড্র ও যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছিল। এজন্য মোহামেডানের অধিনায়ক রণজিত ও আমাকে বহিষ্কার করা হয়।’

বহিষ্কারের জন্য আবাহনী হয়ে আর্মি স্টেডিয়ামে খেলতে পারেননি আসলাম। তার অনুপস্থিতি ম্যাচ হারার বড় কারণ হিসেবে মনে করেন, ‘আমি অধিনায়ক ও সেরা ফর্মে ছিলাম। আমি ও আবাহনীর কয়েকজন খেলোয়াড় না থাকায় আমরা হেরে যাই। আসলে আবাহনী দর্শকশুন্য ম্যাচ খেলতেই চায়নি।’

মোহামেডানের কায়সার দর্শকশুন্য ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়ে লিগ জিতলেও সেই ম্যাচকে নিষ্প্রাণই বলেন, ‘দর্শকরা খেলার প্রাণ। দর্শক ছাড়া খেলোয়াড়েরা উজ্জীবিত হতে পারে না। ওই ম্যাচে আবাহনীর মতো আমাদেরও অধিনায়ক বহিষ্কারাদেশে ছিল। ফলে মানসিকভাবে আমরাও ভালো ছিলাম না।’

আবাহনী ও মোহামেডানের দুই অধিনায়ককে বহিষ্কার করার জন্য সমর্থক ও ক্লাব রাজনীতির জন্য সেই বছর আর দলবদল হয়নি। এক বছর বিরতি দিয়ে শুরু হওয়া লিগে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হয়ে আবাহনীর মতো হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতে।

তিন দশক পর আবার দর্শকশুন্য গ্যালারিতে দুই দলের খেলা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আবাহনী-মোহামেডান গত সাত মাসে দুই বার মোকাবেলা হয়েছে। ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপে ও ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লায়, লিগের প্রথম লেগে। উভয় ম্যাচে সীমিত সংখ্যক দর্শক ছিল। ৩০ এপ্রিল শুরু হওয়া লিগের দ্বিতীয় লেগ চলছে দর্শকশুন্য ভাবে।