জান্নাতে যে বিশেষ মর্যাদা পাবেন শুধু নামাজিরা

রাসূলুল্লাহ (সা.) তার উম্মতের মধ্যে যারা নামাজে একনিষ্ঠ তাদের জন্য অনেকগুলো বিশেষ মর্যাদা ও সুসংবাদ ঘোষণা করেছেন। তাহলো-
১. ফজর পড়লেই নিরাপত্তার সুসংবাদহজরত জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফাজরের নামাজ পড়ল সে মহান আল্লাহর জিম্মাদারি তথা রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো। আর আল্লাহ তোমাদের কারো কাছে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা দেওয়ার বিনিময়ে কোনো অধিকার দাবি করেন না। যদি করেন- তাহলে তাকে এমনভাবে পাকড়াও করবেন যে, উল্টিয়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ (মুসলিম)
২. ফজর ও আসরে জাহান্নাম থেকে মুক্তিহজরত আবু বকর ইবনু ওমারাহ ইবনু রুআইবাহ তার পিতা রুআইবাহ থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের আগের নামাজ (ফজর ও আসর) নামাজ আদায় করেন। এ কথা শুনে বসরার অধিবাসী এক লোক তাকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি কি নিজে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে থেকে এ কথা শুনেছ? সে বলল, হ্যাঁ। তখন লোকটি বলে উঠল- আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিজেও এ হাদিসটি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছ থেকে শুনেছি। আমার দুই কান তা শুনেছে আর মন তা স্মরণ রেখেছে।’ (মুসলিম)
৩. রাতের নামাজে আলোর সুসংবাদহজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রাতের অন্ধকারে মসজিদসমুহে (নামাজের জন্য) যাতায়াতকারীদের কেয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দাও।’ (ইবনে মাজাহ) অর্থাৎ রাতের অন্ধকারে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির জন্য কেয়ামতের ময়দানের কঠিন অন্ধকারে আলোর সুসংবাদ দিয়েছেন বিশ্বনবী।
৪. ইশার নামাজে অর্ধেক রাত ইবাদতের সাওয়াবহজরত আবদুর রহ্মান ইবনু আবু আমরাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, একদিন মাগরিবের নামাজের পর হজরত উসমান ইবনু আফ্ফান (রা.) মাসজিদে এসে একাকি এক জায়গায় বসলেন। তখন আমি তার কাছে গিয়ে বসলাম। তিনি আমাকে বললেন-‘ভাতিজা! আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জামাআতের সঙ্গে ইশার নামাজ আদায় করল সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত সলাত আদায় করল। আর যে ব্যক্তি জামাআতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল সে যেন সারারাত জেগে নামাজ আদায় করল।’ (মুসলিম)
৫. ‘ফজর ও ইশা’ মুনাফেকি থেকে মুক্তির সুসংবাদহজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ইশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী (কষ্টের) নামাজ আর নেই। এ দুই নামাজের কী ফজিলত, তা যদি তারা জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি ইচ্ছে করেছিলাম যে, মুয়াজ্জিনকে ইক্বামাত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামতি করতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে এরপর যারা নামাজে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই।’ (বুখারি)
৬. ফজরের সুন্নাত দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম!হজরত আয়েশাহ (রা.) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফাজরের দুই রাকাআত (সুন্নাত) নামাজ দুনিয়া ও তার সব কিছুর থেকে উত্তম।’ (মুসলিম)
৭. যাদেরকে নামাজি হিসেবে সাক্ষ্য দেবে ফেরেশতারাহজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ফেরেশতারা পালাক্রমে তোমাদের মাঝে আগমন করেন। একদল দিনে, একদল রাতে। আসর ও ফজরের নামাজে উভয় দল একত্রিত হয়। তারপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যান। তখন তাদের প্রভু তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এসেছ? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। উত্তরে তারা বলেন, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি। আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনও তারা নামাজরত অবস্থায় ছিলেন।’ (বুখারি)
৮. পূর্ণিমার চাঁদের মতো আল্লাহকে দেখাহজরত জারির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, এক রাতে আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, শোন! এটি (ঐ চাঁদকে) তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি খুব তাড়াতাড়ি তোমাদের প্রভুকেও তোমরা দেখতে পাবে। তাকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না।
কাজেই সূর্যোদয়ের আগে আর সূর্যাস্তের আগে অর্থাৎ ফজর ও আসর নামাজ আদায়ে সমর্থ হও, তবে তাই কর। এরপর তিনি তেলাওয়াত করলেন- ‘আর আপনার পালনকর্তার প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয়ের আগে, সূর্যাস্তের আগে এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন রাতের কিছু অংশ ও দিনের ভাগে, সম্ভবত তাতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন’ (সুরা ত্বহা : আয়াত ১৩০)। (বুখারি)
৯. শয়তানের প্ররোচনামুক্ত দিনযাপনহজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.)ম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পিছনের অংশে তিনটি গিঠ দেয়। প্রতি গিঠে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাক। এরপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঠ খুলে যায়। তারপর অজু করলে আরেকটি গিঠ খুলে যায়। এরপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিঠ খুলে যায়। তখন তার সকাল হয় উৎফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে কলুষ-কালিমা ও আলস্য সহকারে সকালে উঠে।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসমানের উচিত, নামাজের প্রতি একনিষ্ঠ হওয়া। নামাজে মনোযোগী হওয়া। নামাজ পড়ার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ ও নিরাপত্তা পাওয়ার চেষ্টা করা। কেননা নামাজই দিতে পারে মানুষের প্রতিদিন দিন ও মুহূর্তের নিরাপত্তা।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। ফরজসহ নফল নামাজগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম তুর্কমেনিস্তান: আজ নতুন সময়ে শুরু হবে ম্যাচ, জেনে নিন সূচি
- বাংলাদেশ বনাম তুর্কমেনিস্তান: গোল বন্যা, ৯০ মিনিটের খেলা শেষ
- চুপ্পুকে সরিয়ে জাতীয় নির্বাচনে আগে নতুন রাষ্ট্রপতি চান পিনাকি
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: প্রথম ওয়ানডেতে লড়াকু টার্গেট দিল শ্রীলঙ্কা
- নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব পয়েন্ট টেবিল: গ্রুপ সি-তে উড়ছে বাংলাদেশ
- ৮ গোল: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম বাহারাইনের মধ্যকার ম্যাচের ৯০ মিনিটের খেলা
- বাংলাদেশ বনাম তুর্কমেনিস্তান: ৭ গোলে শেষ হলো প্রথমার্ধ
- মাহিয়া মাহির মৃত্যু গুজব: সত্য ও মিথ্যার বিশ্লেষণ
- আল-হিলাল বনাম ফ্লুমিনেন্স: নাটকীয়ভাবে শেষ হলো কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা
- বাংলাদেশ বনাম তুর্কমেনিস্তান: ম্যাচ প্রিভিউ, পরিসংখ্যান ও ম্যাচ শুরুর সময়
- চেলসি বনাম পালমেইরাস কোয়ার্টার-ফাইনাল: ১-০ গোলে প্রথমার্ধ শেষ
- চেলসি বনাম পালমেইরাস কোয়ার্টার ফাইনাল: শেষ হলো ৯০ মিনিটের খেলা
- জেতা ম্যাচ হেরে যা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ
- ফাফ ডু প্লেসির ডাবল সেঞ্চুরি রেকর্ডে কাঁপছে ক্রিকেট বিশ্ব